Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

যে ভালোবাসার সঙ্গে শ্রদ্ধা নেই, তা আমি গ্রহণ করি না

সৈয়দ আব্দুল হাদী। ছবি: তালহা মোস্তাফা

বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। গান গেয়ে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে কতটা সন্তুষ্ট? গান ছাড়া পেশাগত জীবনে আর কী করেছেন তিনি? বাংলা গানের সোনালি যুগ পেরিয়ে আসা এই শিল্পী কী বলছেন বর্তমান সময়ের সংগীত নিয়ে? এমন নানা প্রশ্ন আর প্রসঙ্গ নিয়ে সৈয়দ আব্দুল হাদীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এস রানা

এম এস রানা

একবার বলেছিলেন, প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে কিছুটা সময় হলেও রেয়াজ করতেন। এখন কি নিয়মিত রেয়াজ করা সম্ভব হয়?

এখন আর নিয়মিত রেয়াজ করা হয় না। আগেও যে প্রতিদিন রেয়াজ করতে পারতাম, ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়। তবে যেদিন রেকর্ডিং থাকত, বা কোনো অনুষ্ঠান থাকত, সেদিন অবশ্যই রেয়াজ করতাম।

আপনার পেশাগত জীবন শুরু কী দিয়ে?

গান করতাম। পাশাপাশি জগন্নাথ কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু। ওখানে লেকচার দিতে দিতে গলার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত, গান গাইতে অসুবিধা হতো। তাই শিক্ষকতা ছেড়ে দিলাম।

বিটিভির শুরুর দিকে প্রযোজক হিসেবেও তো কাজ করেছেন?

হ্যাঁ। তখন ছিল পিটিসি। পাকিস্তান টেলিভিশন করপোরেশন। ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হলো। আমি জয়েন করলাম ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে। তখন প্রযোজক হওয়াটাও সহজ ছিল না। কালচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড স্ট্রং থাকতে হতো।

আপনার প্রযোজনায় প্রথম অনুষ্ঠান কী ছিল?

প্রযোজক হিসেবে আমার শুরু স্টুডেন্টস প্রোগ্রাম দিয়ে। যেহেতু ইউনিভার্সিটি থেকে তখন বের হয়েছি, তাই আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো। ছাত্রদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো। আমি ‘ড. জেকিল অ্যান্ড মিস্টার হাইড’ নাটকটি করেছিলাম। এর নাট্যরূপ দিয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। যাঁরা অভিনয় করেছিলেন, তাঁদের কেউ সম্ভবত আর বেঁচে নেই। এ ছাড়া গানের অনুষ্ঠানই বেশি করতাম। সেখানে রওশন আরা মুস্তাফিজ, হাসিনা মমতাজ—এদের নিয়ে এলাম। এ ছাড়া একটা নাটক করেছিলাম, সেই নাটকে সুচন্দা প্রথম অভিনয় করেছিলেন।

এই সময়ের গান শোনেন?

হ্যাঁ, খুব আগ্রহ নিয়ে শুনি।

কী মনে হয়, আপনারা যে জায়গাটা তৈরি করেছেন, সংগীতাঙ্গন কি সেই জায়গায় আটকে আছে, নাকি পিছিয়ে গেল কিংবা উন্নতি করল?

এটা অনেক বড় প্রসঙ্গ। সংক্ষেপে বলা মুশকিল। তবে এটা বলতে পারি, আমরা বড় হয়েছি একটা আদর্শিক যুগে, সেই যুগ কি এখন আছে? এই রকমভাবে শুধু যে সমাজের পরিবর্তন এসেছে, তা নয়; সর্বক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন এসেছে। স্বাভাবিকভাবে গানের ক্ষেত্রেও এসেছে। প্রধানত যে কথা বলতে চাই, গান তো অবশ্যই একটা বিনোদন, সেটা আগেও ছিল। তবে সেগুলো শিল্প হতো, শিল্প হয়েও মানুষকে বিনোদিত করত। আর এখন ব্যাপারটা উল্টে গেছে। আগে বিনোদন, তারপর শিল্পভাবনা। শিল্প হলে হলো, না হলে নাই, বিনোদন হলেই হলো। এখন যারা গান করছে, তাদের অনেকের গান শুনে মনে হয়, বেশ ভালো গলা, তারা শিখে এসেছে। কিন্তু সমস্যা একটাই—কারও নিজস্ব গায়কি তৈরি হচ্ছে না, নিজস্ব কণ্ঠ তৈরি হচ্ছে না। অটো টিউনার দিয়ে গান তৈরি হয়ে যাচ্ছে। শিল্পীর একটি নিজস্ব কণ্ঠ থাকতে হবে, নিজস্ব গায়কি থাকতে হবে।

একসময় অসংখ্য সিনেমা হতো, সেখানে অনেক গান তৈরি হতো, সেগুলো জনপ্রিয় হতো। একপর্যায়ে দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান এল, যারা শিল্পীদের গাওয়া গান অ্যালবাম আকারে বাজারজাত করত। এখন অত সিনেমাও হয় না, প্রতিষ্ঠানগুলো নেই। শিল্পীরা নিজ উদ্যোগে, নিজ খরচে, ইউটিউবে গান করছে। শিল্পী তৈরির ক্ষেত্রে এটা প্রতিবন্ধকতা কি না?

যুগের কারণেই এটা হয়েছে। আগেও এমন সময় ছিল, যখন যিনি লিখতেন, তিনিই সুর করতেন, আবার কখনো তিনিই গাইতেন। এরপর গ্রামোফোন কোম্পানি এল। পরিবর্তন এল। একজন গান লিখছেন, অন্যজন সুর করছেন, আরেকজন গাইছেন। আর এখন নিজের ঘরে বসেই নিজের লেখা, নিজের সুর করা গান গেয়ে ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। কোয়ালিটি কী হচ্ছে, তা দেখার কেউ নেই। আসলে আমরা ধীরে ধীরে এক-একটা দ্বীপ হয়ে যাচ্ছি। একসময় একান্নবর্তী পরিবার ছিল। খাওয়ার সময় হলে ঘণ্টা বাজানো হতো, সবাই একসঙ্গে খেতে বসত। সময়ের দাবিতে এখন আর একান্নবর্তী পরিবার দেখা যায় না। সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। গানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। আমরা প্রত্যেকে এক-একটা দ্বীপ হয়ে যাচ্ছি। কারও সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই।

গানের তো নিজস্ব একটা ভাষা আছে, নিজস্ব দাবি আছে। আপনার কি মনে হয়, এখনকার এই পরিবর্তনটাও একসময় বদলে যেতে পারে, সংগীত আবার তার আগের জগতে, পুরোনো ধারা বা নিয়মে ফিরে যেতে পারে?

একটা উদাহরণ দিই, আইনস্টাইনকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, তৃতীয় মহাযুদ্ধে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হতে পারে? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, তা বলতে পারব না, তবে চতুর্থ মহাযুদ্ধের কথা বলতে পারি, সেটা হবে ইটপাটকেল আর লাঠিসোঁটা দিয়ে। মানে, সভ্যতা আবার নতুন করে শুরু হবে। নিশ্চয় বোঝাতে পেরেছি। সংগীতও নিশ্চয় নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একসময় তার শিকড়ে ফিরে যাবে। তবে সেটা কবে, বলতে পারব না।

গান গেয়ে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ নিয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

প্রথম তিনটি পুরস্কার নিয়ে খুশি। জেনুইনলি পেয়েছি। তবে এমন এমন গান আমার ছিল, যে দশবার আমাকে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারত। অথচ, শেষের দুইটা পুরস্কার যে গান দুটির জন্য পেয়েছি, আমি নিজে হলে এই পুরস্কার দিতাম না। কারণ, আমার এর চেয়ে ভালো গান ছিল।

কেন এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন?

আসলে তত দিনে লবিং বা তদবির ঢুকে গেছে। লবিং তো নোবেল নিয়েও হয়। তাই বলে রাস্তা থেকে আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে তো লবিং করবে না কেউ। লবিং করতে হলে হয় আপনার লোক থাকতে হবে, নয়তো আপনার নিজেকেই ভিক্ষা করতে হবে। দুটোর কোনোটাই আমার পছন্দ নয়। যে জন্য অনেক কিছুই আমি জীবনে পাইনি। তাতে কিছুই যায় আসে না। মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, সেটাই আমার কাছে বড়। একটা কথা বলি, যে ভালোবাসার সঙ্গে শ্রদ্ধা নেই, তা আমি গ্রহণ করি না। আবার যে শ্রদ্ধার সঙ্গে ভালোবাসা নেই, সেটাও গ্রহণ করি না।

শিল্পীজীবনে সৈয়দ আব্দুল হাদী হিসেবে কি কোনো আক্ষেপ আছে?

আক্ষেপ নেই, তবে ভ্রুক্ষেপ আছে। আমার কাছে নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো আত্মমর্যাদা, এটাকে বিক্রি করে কিছুই করতে চাই না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আন্ধার’ সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা মুক্তি আগামী বছর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) তুষি, মিমি, রাফী, চঞ্চল ও সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) তুষি, মিমি, রাফী, চঞ্চল ও সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

ভৌতিক ঘরানার সিনেমা বানাচ্ছেন রায়হান রাফী। ‘আন্ধার’ নামের সিনেমাটি তৈরি হবে দুই ব্যান্ড তারকা অর্থহীনের সাইদুস সালেহীন সুমন এবং ক্রিপটিক ফেইটের শাকিব চৌধুরীর গল্পে। গত আগস্টে প্রকাশ পেয়েছিল এমন খবর। সে সময় জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন সিয়াম আহমেদ ও নাজিফা তুষি। তবে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি নির্মাতারা। অবশেষে গত সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে আন্ধারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এল। সিয়াম, তুষির সঙ্গে এই সিনেমায় আরও আছেন চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, গাজী রাকায়েত, মোস্তফা মনওয়ার প্রমুখ। এ ছাড়া আন্ধার দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হচ্ছে ফররুখ আহমেদ রেহান ও স্বর্ণালী চৈতির।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা উপলক্ষে ভার্চুয়ালি আড্ডায় একত্র হন সিনেমার কলাকুশলীরা। উপস্থিত ছিলেন গল্পকার ও প্রযোজক শাকিব চৌধুরী, নির্মাতা রায়হান রাফী, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, মোস্তফা মনওয়ার, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, নাজিফা তুষি ও চিত্রনাট্যকার আদনান আদিব খান। সেখানে সিনেমাটি নিয়ে কথা বলেন তাঁরা। নির্মাতা জানান, ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে আন্ধারের শুটিং।

রায়হান রাফী বলেন, ‘কখনো ভাবিনি, আমি অন্য কারও গল্প নিয়ে কাজ করব। এই প্রথম অন্য কারও গল্প নিয়ে কাজ করলাম। মুগ্ধ হয়ে কাজ করলাম, চিত্রনাট্য পড়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা আমি বানাতে চাই। দুই বছর ধরে সেই স্বপ্ন লালন করে সিনেমার শুটিং শেষ করেছি। টিমের ভাষ্যমতে, এটা আমার বানানো সবচেয়ে ভালো সিনেমা হতে যাচ্ছে। বাকিটা দর্শক সিনেমা দেখার পর বলবেন।’

সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘আমি যত সিনেমায় কাজ করেছি, সেগুলোর মধ্যে এটা আমার শোনা গল্পের সবচেয়ে ডিটেইল চিত্রনাট্য। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় এই সিনেমার ন্যারেশন শুনেছিলাম। আমি একটুও বিরক্ত হইনি। তার মানে, পুরো গল্প আমাকে ধরে রেখেছিল। আশা করি, হলেও দর্শকদের ধরে রাখবে।’

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অভিনয়শিল্পীরা সব সময় চাই নতুন কিছু করতে; একই ধারার কাজ বারবার না করে ভিন্ন জনরা সৃষ্টি করতে। অনেক নির্মাতা এই ঝুঁকি নিতে চান না। ট্রেন্ডি গল্পে কাজ করতে পছন্দ করেন। আন্ধার সেই ধরনের সিনেমা, যেখানে আমরা সবাই নিজেদের দেখতে চাই। এ ধরনের কাজ নিজের আয়ু বাড়িয়ে দেয়। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে এক্সাইটিং বিষয় ছিল। আশা করি, এ ধরনের কাজ আরও হবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে।’

আফসানা মিমি বলেন, ‘এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ, চরিত্রটি আমাকে টেনেছে। একটা গল্পের মধ্যে আমি কোথায় কতটুকু আছি, এটা আমাকে ভাবায় না। গল্পের আঙ্গিকে আমার চরিত্রটি কীভাবে আছে, সেটা আমাকে খুব টানে। সিনেমার শুটিংয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছি।’

এ সময় প্রযোজক বলেন, আন্ধার হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা। শোনা গিয়েছিল, এ বছরই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে আন্ধার। তবে নির্মাতা জানালেন, পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ শেষ করে আগামী বছর সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। রাফী বলেন, ‘শুটিং শেষ হলেও আমাদের সিনেমার পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ করতে ৮-৯ মাস লাগবে। এটা শুধু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজেটের সিনেমাই নয়, এটি দুই বাংলার অর্থাৎ বাংলা ভাষার সবচেয়ে বেশি ভিএফএক্স-নির্ভর সিনেমা। এটা এমন সিনেমা না যে শুটিং করলাম, এরপর রিলিজ করে দিলাম। সিনেমাটি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। তাই সব কাজ গুছিয়ে আগামী বছর মুক্তি দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থিয়েটার হান্টের প্রথম নাটক ‘ক্যাফে দ্য ভলতে’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ক্যাফে দ্য ভলতে’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘ক্যাফে দ্য ভলতে’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

মঞ্চে নিজেদের প্রথম প্রযোজনা নিয়ে আসছে নাটকের দল হান্ট থিয়েটার। নাম ‘ক্যাফে দ্য ভলতে’। নাটকটির মূল ভাবনা, গল্প ও নির্দেশনা দিয়েছেন ডায়না ম্যারিলিন। চিত্রনাট্য করেছেন আবিদ হাসান ও সংলাপ যোজনায় তানভীর চৌধুরী। আজ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী। পরদিন একই স্থান ও সময়ে মঞ্চস্থ হবে দ্বিতীয় প্রদর্শনী।

ক্যাফে দ্য ভলতে নাটকের গল্প একজন সফল শেফ ম্যাক্স ডি রোজারিওকে নিয়ে। সে বাঙালি ক্রিশ্চিয়ান। রেস্টুরেন্ট খুলেছে সে, নাম ক্যাফে দ্য ভলতে। সেটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জিঞ্জিরা শহরের চার সুশীল নাগরিকের ভাগ্য নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় ম্যাক্স। সে বদলা চায় না; চায় না ইনসাফ কায়েম করতে। তবে কেন এই সশস্ত্র ক্যু? গল্প এগিয়ে যায় আরও নাটকীয়তার দিকে।

থিয়েটার হান্টের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, প্রদর্শনীতে শিশুদের সঙ্গে না আনার। নাটকে অভিনয় করছেন মো. শাহজাদা সম্রাট চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল জাদিদ, প্রিয়ম মজুমদার, ইয়াদ খোরশিদ ঈশান, মালিহা ফাইরুজ ফারিন মেলিসা, নূর এ জান্নাত ওরিশা, শাহিন সাঈদুর, সুপ্রিয় ঘোষ, প্রজ্ঞা চন্দ, ডায়না ম্যারিলিন ও শুভাশিস হালদার। আলোক পরিকল্পনায় মো. মোখলেছুর রহমান, সংগীত চার্লস চৌধুরী, ব্যবস্থাপনায় জেরোম মধু ও রূপসজ্জায় যোহানা সূচনা দাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নেই শিল্পীদের নাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বেবী নাজনীন, মনির খান ও কনকচাঁপা। ছবি: সংগৃহীত
বেবী নাজনীন, মনির খান ও কনকচাঁপা। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবার জাতীয় নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থী হতে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায় সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেককে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী হিসেবে শোনা গিয়েছিল অনেকের নাম। তালিকায় ছিলেন সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন, মনির খান, রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল। শোনা গিয়েছিল আসিফ আকবর, নাজমুন মুনিরা ন্যান্‌সি, হেলাল খান, শিবা সানুর নামও। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় জায়গা পাননি কেউ।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য বেবী নাজনীন। ২০১৮ সালে নীলফামারী-৪ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এবার ওই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছেন মো. আব্দুল গফুর সরকার।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সংগীতশিল্পী মনির খান। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন একসময়। ঝিনাইদহ-৩ আসনের দলীয় প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ হাসি হাসতে পারলেন না এই গায়ক। তাঁর পরিবর্তে আসনটির প্রার্থী তালিকায় এসেছে মোহাম্মদ মেহেদী হাসানের নাম। ২০১৮ সালে প্রার্থী হতে না পেরে অভিমান করে দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন মনির খান। তবে এবার দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নিজের সমর্থকদের শান্ত থাকতে বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দলের প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফেসবুকে মেহেদী হাসানের সঙ্গে একটি ছবি প্রকাশ করে মনির খান লেখেন, ‘অভিনন্দন মেহেদী হাসান রনি। ঝিনাইদহ-৩-এ বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী। শুভকামনা রইল।’

সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার আশায় ছিলেন কনকচাঁপা। কিন্তু ঘোষিত তালিকায় তাঁর নাম আসেনি। অন্য কারও নামও ঘোষণা করা হয়নি। তাই এখনো কনকচাঁপার আশা বেঁচে আছে খানিকটা। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা। তালিকায় নিজের নাম না দেখলেও হতাশা প্রকাশ করেননি কনকচাঁপা। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘এই পৃথিবীর কোনো ফয়সালাতেই আমি কিছু ভাবি না। আল্লাহ ভালো বুঝবেন, আমার জন্য কী ভালো হবে। তাঁর চেয়ে ভালো বোঝে এমন কে আছেন এই জগতে! অতএব, আলহামদুলিল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুশবু ছড়ানো কিস্যাকারের চরিত্রে সোমেন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মেহেদী হাসান সোমেন। ছবি: সংগৃহীত
মেহেদী হাসান সোমেন। ছবি: সংগৃহীত

গত ১৫ সেপ্টেম্বর দীপ্ত টিভিতে প্রচার শুরু হয়েছে ধারাবাহিক নাটক ‘খুশবু’। এরই মধ্যে ধারাবাহিকটি দর্শকপ্রিয় হয়েছে। সম্প্রতি খুশবুতে যুক্ত হয়েছে নতুন একটি চরিত্র—জালাল উদ্দিন কিস্যাকার। সুফির বেশভূষায় শহরের পথে পথে ঘুরে বেড়ানো এই কিস্যাকারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোমেন। পুরো নাম মেহেদী হাসান সোমেন।

জীবনের নানা টানাপোড়েন আর বেঁচে থাকার সংগ্রামে মানুষ যখন ব্যতিব্যস্ত, তখন এই অস্থির সময়ে শহরে আগমন ঘটে এক কিস্যাকারের। সুফি বেশভূষার এক সাধক, যার শরীর থেকে আতরের খুশবু ছড়ায়। এই শহরের পথে পথে মানুষকে কিস্যা শুনিয়ে বেড়ায় সে। এরই মধ্যে তিনটি পর্বে দেখা গেছে সোমেন অভিনীত চরিত্রটি। সামনে রয়েছে আরও চমক।

এর আগে ‘দেনা পাওনা’, ‘ভালোবাসার আলো আঁধার’ সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন সোমেন। ২০০০ সাল থেকে পর্দায় কাজ শুরু করেন তিনি। অভিনয় করেছেন নাটকে, বিজ্ঞাপনে, সিনেমায়। সোমেন অভিনীত টিভি নাটকের তালিকায় আরও আছে নুরুল আলম আতিকের ‘মনে মনে’, মাতিয়া বানু শুকুর ‘আগুন আলাপন’ ইত্যাদি। অভিনয় করেছেন ফজলুল কবির তুহিনের মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘বিলডাকিনি’ সিনেমায়, আবু রায়হান জুয়েলের ‘এপিঠ ওপিঠ’ স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায়।

সোমেনের অভিনয়ের শুরু থিয়েটার চর্চার মাধ্যমে। ১৯৯৪ সালে আবাহন নাট্য সংসদের সদস্য হিসেবে থিয়েটার চর্চা শুরু করেন সোমেন। ১৯৯৬ সালে যুক্ত হন ঢাকা সুবচন নাট্যদলে। ১৯৯৯ সালে যুক্ত হন প্রাচ্যনাটে। মঞ্চে বহু নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।

অভিনয়ের পাশাপাশি সম্প্রতি দীপ্ত টিভির ব্যতিক্রমী একটি সেলিব্রিটি শো উপস্থাপনা করেছেন সোমেন। ‘কথোপকথন’ নামের শোটির প্রথম সিজন শেষ হয়েছে। এখন চলছে দ্বিতীয় সিজনের প্রস্তুতি। প্রথম সিজনে একটি বাসার ড্রয়িংরুমে, কিচেনে, বারান্দায় বসে তারকাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন সোমেন। দ্বিতীয় পর্বে যাবেন আউটডোরে। খোলা প্রান্তরে বা জঙ্গলের ধারে তাঁবু খাটিয়ে আড্ডা জমবে তারকাদের সঙ্গে। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা, নির্দেশনা এবং পরিকল্পনায় রয়েছেন সোমেন। পাশাপাশি একই চ্যানেলে ‘ক্যানভাস’ নামের একটি লাইফস্টাইলবিষয়ক অনুষ্ঠানেরও প্রথম সিজন শেষ করেছেন তিনি। পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন দ্বিতীয় সিজনের।

২০০৬ সালে বিজ্ঞাপন নির্মাণের মাধ্যমে নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সোমেন। এ পর্যন্ত তিনি নির্মাণ করেছেন প্রায় দেড় হাজার বিজ্ঞাপনচিত্র, অর্ধশতাধিক নাটক, ৩টি প্রমাণ্যচিত্র ও ৪টি ধারাবাহিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত