Ajker Patrika

মেয়েকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১৫: ৪৭
মেয়েকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বাবা

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার এক ব্যক্তি নিজের মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছিলেন। এরপর প্রতিপক্ষের ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। প্রায় দেড় যুগ পর আদালতে এ ঘটনা স্বীকার করেছেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির দুই স্ত্রী। চার বছর আগে মেয়ের হত্যাকারী ওই ব্যক্তি নিজেও মারা গেছেন। 

হত্যাকাণ্ডে জড়িত ওই ব্যক্তির নাম আকসেদ আলী সিকদার। তিনি বাঘা উপজেলার লক্ষ্মীনগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি মারা গেছেন। 

পিবিআইয়ের তদন্তের পর তাঁর দুই স্ত্রী ভায়েলা বেওয়া (৬৫) ও আফিয়া বেওয়া (৬০) গত রোববার আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন, এত দিন স্বামীর ভয়ে তাঁরা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলতে পারেননি। 

এর আগে ২০০৪ আকসেদ আলীর দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) প্রতিপক্ষের ২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করে। দীর্ঘ সময় আদালতে বিচার চলে। কিন্তু বিচার চলাকালে আদালতের মনে হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা প্রয়োজন। তাই আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি পুনঃতদন্ত করতে দেন। 

পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে—অন্য কেউ নয়, রেবেকা খাতুন (১৩) নামের এই মেয়েটিকে হত্যা করেছিলেন তার বাবা আকসেদ আলী নিজেই। 

দীর্ঘ ১৮ বছর পর এই মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন বিষয়ে আজ মঙ্গলবার পিবিআইয়ের রাজশাহী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের এই মামলার বিস্তারিত জানান পিবিআই রাজশাহীর প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ। 

পিবিআইয়ের কর্মকর্তা জানান, আকসেদ আলীর দুই স্ত্রীর মধ্যে আফিয়ার মেয়ে ছিল রেবেকা। ২০০৪ সালের জুন মাসে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের এই কিশোরীকে। এরপর আকসেদ আলী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে দুই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বসে ছিলেন আকসেদ। বাড়ির দিকে হঠাৎ ৫০-৬০ জনকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসতে দেখে দুই স্ত্রী তাঁকে পালিয়ে যেতে বলেন। আকসেদ আলী পালিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা তাঁর ১৩ বছরের কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। এই মামলায় প্রতিপক্ষ মোল্লা বংশের ২০ জনকে আসামি করা হয়। 

মামলাটি প্রথমে থানার পুলিশ এবং পরে ডিবি পুলিশ তদন্ত করে। ডিবি পুলিশ ২০০৪ সালেরই ৩০ নভেম্বর ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর রাজশাহীর জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। দীর্ঘদিন বিচার চলার পর আদালতের মনে হয় মামলার আসামিরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এই মামলার পুনঃতদন্ত হওয়া প্রয়োজন। 

এরপর গত বছরের মে মাসে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। রাজশাহী পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। প্রকাশ্যে ও গোপন তদন্তে পিবিআই জানতে পারে, প্রতিপক্ষ নয়, আকসেদ আলীই নিজের মেয়েকে হত্যা করেছিলেন। এরপর তাঁর দুই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাঁরা সবকিছুই স্বীকার করেন। তাঁরা আদালতে বলেছেন, স্বামীর ভয়ে তাঁরা এ নিয়ে মুখ খুলতে পারেননি। 

পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আযাদ বলেন, আদালতে এই মামলার পুরোনো ডকেট পাওয়া যায়নি। পিবিআই নিজেদের মতো করেই তদন্ত করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে আকসেদ ছাড়া অন্য কেউ জড়িত ছিলেন সে রকম কোনো তথ্য পায়নি পিবিআই। আকসেদ আলী ২০১৯ সালে মারা যাওয়ায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা যাবে না। একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। তারপর আদালত এই মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। 

ডিবি পুলিশ ও পিবিআইয়ের তদন্তের ফলাফল পুরোপুরি সাংঘর্ষিক হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খটকা লেগেছিল যে, বাড়িতে ৫০-৬০ জন হামলা করে শুধুমাত্র ১৩ বছরের একটা মেয়েকে কেন হত্যা করল? এটা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, সে রকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এখন সবার কাছে সবকিছু ধরা পড়বে এমনটি না। ডিবি পুলিশ যা পেয়েছে, পিবিআই তা পায়নি। এমনও হতে পারে যে পিবিআই যা পাচ্ছে, অন্য কোনো তদন্ত সংস্থা তা পাচ্ছে না। অন্য কোনো তদন্ত সংস্থা এর চেয়েও বেশি কিছু পেতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত