Ajker Patrika

নান্দাইলে আ.লীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুন ২০২২, ১৮: ৫১
নান্দাইলে আ.লীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক

ময়মনসিংহে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করেছে জেলা ছাত্রলীগ। কমিটিতে তৌফিকুল ইসলাম মামুনকে সভাপতি এবং শাহ মাহমুদুল হক সৌরভ ওরফে সৌরভ ফকিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

গত মঙ্গলবার রাতে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবীর যৌথ স্বাক্ষরে এই কমিটির অনুমোদন দেন।

অভিযোগ উঠেছে, নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল মনসুর ভূইয়া হত্যা মামলার আসামি। 

এর মধ্যে সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম মামুন এজাহারে ৩৪ নম্বর এবং সাধারণ সম্পাদক শাহ মাহমুদুল হক সৌরভ ওরফে সৌরভ ফকির ওই মামলার ২৬ নম্বর আসামি। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একটি পক্ষ উপজেলা শহরে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

মামলার বাদী মো. সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। 

আক্ষেপ করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর ভূইয়া আমার বড় ভাই। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিরা প্রত্যক্ষ জড়িত থাকায় মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে। এখন শুনছি তাদের সভাপতি-সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য অভিশাপ বলে মনে করি। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা নান্দাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’ 

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ মাহমুদুল হক খবরের সত্যতা স্বীকার করেন। তবে এই ছাত্রনেতা দাবি করে বলেন, ‘আমি এবং সভাপতি মামলার আসামি হলেও আমরা প্রকৃত আসামি না। চার্জশিট থেকে আমাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।’ 

সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম মামুন দাবি করে বলেন, ‘ওই মামলায় আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। চার্জশিটে তা প্রমাণ হয়েছে।’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কোনো ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না, তাঁরা আদালতে অপরাধী হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে যোগ্য বিবেচনা করেই তাঁদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে।’ 

এদিকে অভিন্ন বক্তব্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আল আমিনের। তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমারও জানা ছিল না।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘ওই হত্যা মামলার সময় আমি এখানে ছিলাম না। বিষয়টি জেনে এবং দেখে বলতে হবে। তবে কমিটির প্রতিবাদে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।’ 

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর নান্দাইল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলনে হত্যা করা হয় পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল মনসুর ভূইয়াকে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত