Ajker Patrika

খুন হওয়ার ৬ মাস পর সৌদি থেকে এল মরদেহ 

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪৫
খুন হওয়ার ৬ মাস পর সৌদি থেকে এল মরদেহ 

ছয় মাস আগে সৌদি আরবে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে শাকিল আহমেদ (২১) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর দীর্ঘ সময় পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল শুক্রবার ভোরে কফিনবন্দি মরদেহ তাঁর বাড়িতে আনা হয়। পরে মরদেহের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। মৃত শাকিল আহমেদ জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ছবিলাপুরের সুবাহান আলীর ছেলে।

জানা যায়, সৌদি আরবে ২০২১ সালের জুলাই মাসে খুন হন শাকিল আহমেদ। সংসারের অভাব ঘোচাতে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেকে জন্মসনদে বয়স বাড়িয়ে সুদের টাকায় প্রবাসে পাঠান বাবা সুবাহান। স্বপ্ন ছিল অভাবের সংসারে আনবে সচ্ছলতা। কিন্তু সেই স্বপ্ন কফিনবন্দী হয়ে দেশে ফিরে এসেছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতের দুই ভাই ও এক বোন নিয়ে তাঁদের অভাবের সংসার। তাঁর বাবা অসুস্থ, তেমন কোনো কাজ করতে পারেন না। সংসারের অভাব ঘোচাতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শেষ করে জন্মসনদে বয়স বাড়িয়ে সুদে টাকা নিয়ে ২০১৮ সালে সৌদি আরবে যান শাকিল আহমেদ। 

নিহতের বড় ভাই সাইদুর ইসলাম বলেন, সৌদি আরবের বুরইদের আল-কাশিমে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন শাকিল। একটি রুমে থাকতেন তিন বাংলাদেশি। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশি একজনের টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শাকিলকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেন ওই বাংলাদেশি। ঘটনাস্থলেই মারা যান শাকিল। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তাঁরা সৌদি আরবের জেলে আছেন। 

সাইদুর ইসলাম আরও বলেন, ‘আমিও বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দালালকে টাকা দেই। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে নিজেও বিদেশে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু দালাল আমার জমা দেওয়া টাকা এখনো ফেরত দেয়নি। এখন ঋণের বোঝা ও ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।’

নিহতের মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে অনেক ভালো ছিল। তাঁর সঙ্গে কারও কোনো ঝগড়া ছিল না। মরার আগেও আমার সঙ্গে কথা কইছে। আমার ছেলেকে কেন মারল কিছুই জানি না। আমার ছেলেকে যে মারছে, তার ফাঁসি চাই। আল্লাহ আমার ছেলেকে যে খুন করছে, তার ফাঁসি হোক।’ 

নিহতের মা আরও বলেন, ‘আমার এই অভাবের সংসার এখন কেমনে চলবে আল্লাহ জানে। আমার বড় ছেলে অটো চলায়। তার টেকা দিয়েই কোনোমতে বাইছে আছি। সরকার যদি আমাদের একটু সহযোগিতা করত, তাইলে হয়তো একটু চলতে পারতাম।’ 

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম লিটু বলেন, ‘মরদেহের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। অসহায় পরিবার বলে শুনেছি। ঋণ করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম বলেন, খোঁজ নিয়ে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৫০ সাল নাগাদ ইনফ্লুয়েন্সারদের চেহারা কেমন হবে, ধারণা দিলেন গবেষকেরা

প্রিজন ভ্যান থামিয়ে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা, ১১ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই, সুবিধা কী

মেডিকেল কলেজ: মানের ঘাটতিতে হবে বন্ধ

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যাচ্ছেন না মোদি, কী বার্তা দিচ্ছে দিল্লি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত