Ajker Patrika

টিপ পরায় নারীকে হেনস্তার ঘটনায় উপযুক্ত শাস্তি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টিপ পরায় নারীকে হেনস্তার ঘটনায় উপযুক্ত শাস্তি দাবি

তেজগাঁও কলেজের প্রভাষককে টিপ পরার কারণে হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, আমরাই পারি জোট এবং কর্মজীবী নারী সংগঠন। রোববার (৩ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতির মাধ্যমে এই দাবি জানায় সংগঠনগুলো। 

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সঙ্গে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি, শনিবার সকালে তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক তাঁর কর্মস্থলে হেঁটে যাওয়ার পথে মোটরবাইকে বসা পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি কপালে টিপ পরার কারণে তাঁকে লাঞ্ছিত হন। পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি তাঁকে টিপ পরার কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তিনি তার প্রতিবাদ জানালে তাঁর গায়ের ওপর দিয়ে বাইক চালিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। মহিলা পরিষদ এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে। 

সংগঠনটি মনে করে, ৫২ বছর পরে স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। সমাজে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী ধর্মীয় মৌলবাদ গোষ্ঠীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার। 

মানবাধিকার সংগঠন আমরাই পারি জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে লাখো নারীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার সংবিধানে নারী-পুরুষের সমমর্যাদায় এবং স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার প্রদান করেছে। কিন্তু এই ঘটনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, জননিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীর উক্ত সদস্য সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিপন্থী আচরণ করছে। 

আমরাই পারি জোট মনে করে, দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের বাহিনীতে নারীর প্রতি কট্টর এবং মৌলবাদী চিন্তা ধারণ করা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার ফলে এই ঘটনাটি ঘটেছে। বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করার অংশ হিসেবে এবং নারীর প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যথেষ্ট সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কারণে এ ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তাঁরা। 

এদিকে কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক হাসিনা আক্তার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাসা থেকে নারীরা বের হলেই রাস্তা-ঘাটে, কর্মস্থলে বিভিন্ন সময় বাজে কথা শুনতে হয়। শিকার হতে হয় যৌন নির্যাতনের। কিন্তু পুলিশের পোশাক গায়ে এক ব্যক্তি যখন এ ধরনের আচরণ করে, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ওই দোষী পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমন ঘটনাটার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। এ ধরনের মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক মানুষের হাত থেকে নারীরা নিরাপদে থাকুক সব সময়। না হলে আগামী দিনে বাংলাদেশকে চরম মূল্য দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত