মারুফ ইসলাম, ঢাকা
বিক্ষোভের শুরুটা ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে হলেও, তা আর কুর্দিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকেনি। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের ১৩টি প্রদেশে এবং তারপর পুরো ইরানে। রাজধানী থেকে ৪৯৪ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত প্রদেশে দেখা দিয়েছিল যে স্ফুলিঙ্গ, তা এখন দাবানল হয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের অন্তত ৮০টি শহর।
ঘটনার শুরু গত ১৬ সেপ্টেম্বর, তেহরানে। ওই দিন পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনির। এরও তিন দিন আগে ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরার অপরাধে মাহশাকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিক পুলিশ। তারপর অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে মাহশার। যদিও পুলিশের বক্তব্য, নির্যাতনে নয়, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
পুলিশের এই গৎবাঁধা ফিরিস্তি ধোপে টেকেনি। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ইরানের সাধারণ মানুষ। আর সেই বিক্ষোভের শুরু মাহশার জন্মশহর কুর্দিস্তান প্রদেশের সাক্কেজ থেকে। ১৭ সেপ্টেম্বর মাহশার জানাজা হচ্ছিল। একপর্যায়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ বিক্ষোভ দমাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কারও কারও অভিযোগ, পুলিশ গুলিও ছুড়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। সেই সব ভিডিও হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এরপরই মূলত বিক্ষোভের লাভামুখ খুলে যায় সবখানে; শহর, বন্দর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস—সর্বত্র। নারীরা নেমেছেন রাস্তায়। তাঁরা নিজেদের মাথার চুল কেটে ফেলছেন, হিজাব পুড়িয়ে ফেলছেন। এ যেন শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসা!
ইরানের নারীরা কয়েক দশক ধরে ‘হিজাব আইনের’ শৃঙ্খলে বন্দী। দেশটির শরিয়া আইনে রয়েছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। তাঁরা চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য।
এই আইনের সংস্কার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন ইরানের নারীবাদী মানবাধিকারকর্মীরা। সম্প্রতি মাহশার মৃত্যু সেই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। আগে যে আন্দোলন ছিল গুটিকয়েক অধিকারকর্মীর মধ্যে সীমাবদ্ধ, এখন সেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। আগে যে আন্দোলন ছিল তেহরানে, এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।
ইরান সরকার কঠোর হাতেই বিক্ষোভ দমাতে চেষ্টা করছে। কিন্তু খুব একটা ফলপ্রসূ হচ্ছে না সেই চেষ্টা। দুই সপ্তাহ পার হলেও, এখনো উত্তাপ কমেনি বিক্ষোভের। ইতিমধ্যে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি এই বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শত্রুদের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেছেন। উসকানির অভিযোগে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন। তাঁর এসব অভিযোগ কতটা সত্য তা প্রমাণিত না হলেও যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
তবে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকুক আর না-ই থাকুক, ইরানের নারীরা দীর্ঘ কয়েক দশকের বন্দিদশা থেকে যে বেরিয়ে আসতে চান, সে ব্যাপারে কারও কোনো সন্দেহ নেই। তাঁদের বিক্ষোভ থেকে ভেসে আসছে ‘নারী-জীবন-স্বাধীনতা’ শব্দগুলো। এ শব্দগুলোই বলে দিচ্ছে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের চার দশকের পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়ন আর নারীর প্রতি সহিংসতার শিকল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চান ইরানের নারীরা। তাঁদের সে চাওয়া পূরণ হতে আর কত মাহশাকে জীবন দিতে হবে, আর কত রক্ত ঝরবে ইরানে—কে জানে!
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স এবং ওয়াশিংটন পোস্ট
বিক্ষোভের শুরুটা ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে হলেও, তা আর কুর্দিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকেনি। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের ১৩টি প্রদেশে এবং তারপর পুরো ইরানে। রাজধানী থেকে ৪৯৪ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত প্রদেশে দেখা দিয়েছিল যে স্ফুলিঙ্গ, তা এখন দাবানল হয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের অন্তত ৮০টি শহর।
ঘটনার শুরু গত ১৬ সেপ্টেম্বর, তেহরানে। ওই দিন পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনির। এরও তিন দিন আগে ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরার অপরাধে মাহশাকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিক পুলিশ। তারপর অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে মাহশার। যদিও পুলিশের বক্তব্য, নির্যাতনে নয়, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
পুলিশের এই গৎবাঁধা ফিরিস্তি ধোপে টেকেনি। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ইরানের সাধারণ মানুষ। আর সেই বিক্ষোভের শুরু মাহশার জন্মশহর কুর্দিস্তান প্রদেশের সাক্কেজ থেকে। ১৭ সেপ্টেম্বর মাহশার জানাজা হচ্ছিল। একপর্যায়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ বিক্ষোভ দমাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কারও কারও অভিযোগ, পুলিশ গুলিও ছুড়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। সেই সব ভিডিও হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এরপরই মূলত বিক্ষোভের লাভামুখ খুলে যায় সবখানে; শহর, বন্দর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস—সর্বত্র। নারীরা নেমেছেন রাস্তায়। তাঁরা নিজেদের মাথার চুল কেটে ফেলছেন, হিজাব পুড়িয়ে ফেলছেন। এ যেন শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসা!
ইরানের নারীরা কয়েক দশক ধরে ‘হিজাব আইনের’ শৃঙ্খলে বন্দী। দেশটির শরিয়া আইনে রয়েছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। তাঁরা চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য।
এই আইনের সংস্কার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন ইরানের নারীবাদী মানবাধিকারকর্মীরা। সম্প্রতি মাহশার মৃত্যু সেই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। আগে যে আন্দোলন ছিল গুটিকয়েক অধিকারকর্মীর মধ্যে সীমাবদ্ধ, এখন সেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। আগে যে আন্দোলন ছিল তেহরানে, এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।
ইরান সরকার কঠোর হাতেই বিক্ষোভ দমাতে চেষ্টা করছে। কিন্তু খুব একটা ফলপ্রসূ হচ্ছে না সেই চেষ্টা। দুই সপ্তাহ পার হলেও, এখনো উত্তাপ কমেনি বিক্ষোভের। ইতিমধ্যে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি এই বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শত্রুদের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেছেন। উসকানির অভিযোগে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন। তাঁর এসব অভিযোগ কতটা সত্য তা প্রমাণিত না হলেও যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
তবে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকুক আর না-ই থাকুক, ইরানের নারীরা দীর্ঘ কয়েক দশকের বন্দিদশা থেকে যে বেরিয়ে আসতে চান, সে ব্যাপারে কারও কোনো সন্দেহ নেই। তাঁদের বিক্ষোভ থেকে ভেসে আসছে ‘নারী-জীবন-স্বাধীনতা’ শব্দগুলো। এ শব্দগুলোই বলে দিচ্ছে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের চার দশকের পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়ন আর নারীর প্রতি সহিংসতার শিকল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চান ইরানের নারীরা। তাঁদের সে চাওয়া পূরণ হতে আর কত মাহশাকে জীবন দিতে হবে, আর কত রক্ত ঝরবে ইরানে—কে জানে!
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স এবং ওয়াশিংটন পোস্ট
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মহসিন মিয়াকে (৪৬) দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
১৮ দিন আগেসবার সামনে পিটিয়ে হত্যা, পাথরে শরীর থেঁতলে দেওয়া, নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে পায়ের রগ কেটে হত্যা, অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই, চাঁদা না পেয়ে গুলি—এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচিত। কিন্তু পুলিশ অনেকটাই নির্বিকার। প্রতিটি ঘটনার সিটিটিভি ফুটেজ থাকলেও সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
১৪ জুলাই ২০২৫এবার রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা এক যুবকের পোশাক ও জুতা খুলে নিয়ে গেছে।
১২ জুলাই ২০২৫মোবাইল চুরির ঘটনায় বোরহান নামের এক তরুণকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে বোরহানের বাবা রুবির পরিবারের সাহায্য চান। বসে এক গ্রাম্য সালিস। তবে সেই সালিসে কোনো মীমাংসা হয় না। এরই মধ্য নিখোঁজ হয়ে যান বোরহান। এতে এলাকায় রব পড়ে বোরহানকে হত্যা ও লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তখন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দা
০৫ জুলাই ২০২৫