কামরুল হাসান

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো খুবই স্বাভাবিক, চন্দ্র-সূর্যের মতো।
কিন্তু ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে কেউ যদি ভালোবেসে চুমু খায় আলগোছে, তাহলে? সবাই বলবে, ছি ছি, একি নোংরামি! সবার সামনে ঘুষ খাওয়া যায়, কিন্তু ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না।
ভালোবাসা যে এ দেশে অন্ত্যজ, তা বেনজীর নামের মেয়েটিও জানতেন। তার পরও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ভালোবাসার মানুষকে চুমু খেলেন, তা-ও থানার ভেতরে পুলিশের নাকের ডগায়। মুহূর্তে হইচই পড়ে গেল। ওসি দৌড়ে এসে বললেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ বেনজীর তখন প্রাচীরের মতো সুদৃঢ়, বললেন, ‘ভালোবাসার প্রমাণ দিলাম।’
যে লোকটির জন্য কিশোরী মেয়েটি ‘উজাড় যমুনা’, মনে হলো তাঁকে একটু দেখে আসি। তিনি হাজতের দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছেন। গরাদের শিকের ওপারের দেয়ালে তাঁর ঝাঁকড়া চুলের আলোকছটা। থানার বাইরে তখন তুমুল চিৎকার—গুরু গুরু। জনতা তাদের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে। জেমস তখন হার্টথ্রব রকস্টার।
বেনজীরকে প্রথম দেখায় আমার কিশোরী বলে ভুল হয়েছিল। হালকা-পাতলা গড়নের মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, স্কুলের গণ্ডিই হয়তো পেরোয়নি। তবে আমি ভুল করলেও ভুল করেননি তাঁর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাবা ইকবাল সাজ্জাদ। তিনি ঠিকই অপহরণ মামলা ঠুকে দেন উত্তরা থানায়। এরপর জেমস আর বেনজীর আমেরিকা থেকে ঢাকায় এলে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে নিয়ে আসে।
খবর পেয়ে উত্তরা থানায় যেতে যেতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি, গেটের সামনে শত শত লোকের ভিড়। পুলিশ থানার ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশও আনা হয়েছে। নিজের পরিচয় দিয়ে কোনোভাবে ভেতরে ঢুকেই দেখি, সব পুলিশের মুখে সেই চুম্বনের গল্প। জেমসের খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, তাঁকে হাজতে রাখা হয়েছে। আর বেনজীর থানার বিভিন্ন রুমে ঘুরছেন, কিন্তু থানা থেকে বেরোতে পারছেন না। বেনজীরের বাবার লোকেরা থানার ভেতরে বেশ তৎপর। মনে হলো, পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করছে।
ডিউটি অফিসারের সামনের টেবিলে এফআইআরের মোটা খাতা। দুজন সাংবাদিক খুব মনোযোগসহকারে সেই খাতা থেকে এফআইআরের বিবরণ টুকে নিচ্ছেন। খাতাটা হাতে নিয়ে দেখি, মামলা হয়েছে ২৩ অক্টোবর (২০০২)। জেমস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গীতিকার বিশু শিকদার এবং জেমসের বাসার গৃহকর্মী কামরুল ইসলামকে। ইকবাল সাজ্জাদ নিজেই মামলাটি করেছেন। বলেছেন, তাঁর ও লেভেল পড়ুয়া মেয়ে বেনজীর সাজ্জাদ একাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ২৮ জুন সন্ধ্যায় মেয়েটি কোচিং থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে উত্তরা হাইস্কুলের পাশ থেকে জেমস, তাঁর বন্ধু বিশু ও গৃহকর্মী মিলে তাঁকে অপহরণ করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান। তিনি বিদেশে থাকায় তখন মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ইকবাল।
ডিউটি অফিসার আমাকে বললেন, জেমস ও বেনজীর ২৪ অক্টোবর (২০০২) ঢাকায় ফিরবেন, সে কথা জানতেন ইকবাল সাজ্জাদ। সেভাবেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে আসে।
থানার ভেতরে বেনজীর খুবই অস্থির, কোথাও দুদণ্ড থামছেন না। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাও বলা যাচ্ছে না। একবার বাগে পেয়ে জানতে চাইলাম, জেমসের সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? বললেন, ২০০০ সালে পরিচয়, এরপর আমেরিকায় গিয়ে বিয়ে করেন। জেমস বিবাহিত, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান আছে, সে কথা জানেন কি না, জিজ্ঞাসা করতেই বেনজীর বললেন, আমাকে বিয়ে করার আগে আমেরিকা থেকে আগের বউকে সে ডিভোর্স দেয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে। বেনজীর বারবার অনুরোধ করলেন তাঁর পক্ষে থাকতে, যেন তাঁর বাবা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে না পারেন।
বেলা বাড়তে শুরু করেছে। চারদিকে খবর রটে গেছে, গায়ক জেমসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তরা থানার সামনে ভিড়ও বাড়ছে। আদালত থেকে ইতিমধ্যে গাড়ি এসে গেছে আসামি নেওয়ার জন্য। পুলিশ জেমসকে বেশিক্ষণ আর রাখতে চাইছে না। এরপর দুজনকেই পাঠানো হয় আদালতে। জেমসকে নিয়ে আদালতের গাড়ি যখন থানা ছাড়ল, তখন বাইরে দাঁড়ানো অসংখ্য ভক্তের চোখ ছিল সিক্ত।
আদালতে গিয়েও বেনজীর তাঁর বাবার সঙ্গে বাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানালেন। বিচারক জেমসকে কারাগারে আর বেনজীরকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিলেন।
থানা থেকে জেমসকে যখন আদালতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন জনতার সারিতে ছিলেন জেমসের আগের স্ত্রী কানিজ রাবেয়া রথির ভাইও। অনেক অনুনয় করার পর তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। বললেন, তাঁর বোন রথির সঙ্গে জেমসের পরিচয় শাহীন কলেজের কনসার্টে, ১৯৯১ সালে। জেমসের তখন অত নামডাক হয়নি। রথি আনন্দ বিচিত্রার ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার রানারআপ। সবার অমতে তাঁদের বিয়ে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু মেয়েটিকে জেমস কখনো কোলে নিতেন না। বলতেন, মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। ২০০০ সালের দিকে জেমস মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই সময় বেনজীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বেনজীর ফোন করে রথিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এরপর একদিন ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পান রথি। তার আগেই দুই সন্তান নিয়ে তিনি উত্তরায় বাবার বাসায় চলে আসেন।
গ্রেপ্তারের পর সাত দিন কারাবাস করেন জেমস। বেনজীরও এই কদিন নিরাপত্তা হেফাজতে থাকেন। ৩০ এপ্রিল তাঁদের আদালতে আনা হয়। বেনজীরের বাবা মেয়েকে নেওয়ার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যে করেননি। কিন্তু বেনজীর অনড়। তিনি বাবার সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জবানবন্দি শোনেন, বিয়ের কাগজপত্র দেখেন। আদালতে নিজ জিম্মায় বেনজীরকে চলে যেতে আদেশ দেন। আর জেমসকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালত যখন এই আদেশ দিচ্ছিলেন, তখন দেশের সংগীতশিল্পীতে ঠাসা সেখানে। এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, হাসান, বাপ্পা মজুমদার, বেবী নাজনীনসহ অনেকে। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁরা ওঠেন উত্তরার বাসায়। পরে বেনজীরের একটি কন্যাসন্তান হয়।
অনেক দিন পর বেনজীরের খোঁজ নিতে কয়েকজন তারকা সাংবাদিককে ফোন দিলাম। বেনজীরের ব্যক্তিগত নম্বরেও ফোন দিলাম, ধরলেন না। সাংবাদিকেরা বললেন, বেনজীরের সঙ্গে জেমসের কোনো সম্পর্ক নেই। বেনজীর তাঁর মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় চলে গেছেন। সেখানেই থিতু হয়েছেন।
আমার চোখের সামনে ভাসছিল তখন আদালত প্রাঙ্গণে বেনজীরের সেই আকুলতা। ভর মজলিসে বারবার বলছিলেন, আমি জেমসকে ছাড়া বাঁচব না, আমি জেমসকে ভালোবাসি। অথচ বেনজীর আজ অনেক দূরে, তবু ঠিকই বেঁচে আছেন। মানুষ আসলে এভাবেই বাঁচে। কিন্তু বেনজীরকে ছেড়ে জেমস কি ভালো আছেন? সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেমস বলেছিলেন, ‘আমার জীবন কখনো মসৃণ ছিল না। জীবনের যে লড়াই, সংগ্রাম; হয়তো সেটাই আমার গানে ফুটে ওঠে।...এসো বুকের গহীনে, বাড়ীর শিথানে/ এসো পথভোলা সেই নদীর কিনারে…সিনায় সিনায় লাগে টান।’
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২০ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

কারওয়ান বাজারে প্রায়ই দেখতাম, সোনারগাঁওয়ের চার মাথায় দাঁড়িয়ে গাড়িচালকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর হাত প্রসারিত। সবাই দেখতেন, তিনি ‘পারানির কড়ি’ আদায় করেছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। বলে হবেই-বা কী! এ দৃশ্য তো
০৬ মে ২০২৩
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
৭ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৭ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
২০ দিন আগে