Ajker Patrika

রাশিয়ার তেল আমদানি কমাতে ভারত ও চীনের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার তেল বিক্রির ওপর পশ্চিমা বিশ্বের চাপ আরও কঠোর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে এবং ব্রিটেন রাশিয়ার শীর্ষ তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগামীকাল শুক্রবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এতে তিনি সামরিক ও জ্বালানি সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানাবেন। ইউক্রেন ও রাশিয়া পরস্পরের জ্বালানি অবকাঠামোয় ব্যাপক হামলাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার সময় এই দুই নেতা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।

একই সময়ে বাণিজ্য আলোচনার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তারাও ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে অনেক আগেই। আলোচকদের মতে, এই অবস্থায় রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর বিষয়টিই হবে দুই পক্ষের মধ্যে বড় বাণিজ্য চুক্তির চাবিকাঠি।

তিনটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় শোধনাগারগুলো ডিসেম্বর থেকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তেল কেনা বন্ধের কোনো নির্দেশ এখনো দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালে ইউরোপীয় বাজার হারানোর পর ভারত ও চীনের কাছে ছাড়ে তেল বিক্রি করছে রাশিয়া। দেশ দুটি বর্তমানে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল ক্রেতা।

গতকাল বুধবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে আমি নাখোশ ছিলাম। আজ মোদি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁরা রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। এটা বড় পদক্ষেপ। এবার আমরা চাই চীনও একই কাজ করুক।’

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছে, কিন্তু ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে আগের দিন কোনো ফোনালাপের বিষয়ে তারা কিছু জানে না বলে জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার তেলের দাম স্থিতিশীল ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে সময় নেবে। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির ৩৬ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে, দৈনিক প্রায় ১৭ দশমিক ৫ লাখ ব্যারেল। ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর অক্টোবর মাসে রাশিয়া তেল রপ্তানি আরও বাড়িয়েছে।

রাশিয়া–চীনের ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

বুধবার যুক্তরাজ্য রাশিয়ার শীর্ষ দুই তেল কোম্পানি লুকওইল ও রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া চীনের শানডং ইয়ুলং পেট্রোকেমিক্যালসহ চারটি বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে সাতটি এলএনজি ট্যাংকারসহ ৫১টি জাহাজ এবং চীনের বেইহাই এলএনজি টার্মিনাল। এ ছাড়া ভারতের মুম্বাইয়ে রাশিয়ান মালিকানাধীন নয়ারা শোধনাগারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। রসনেফটের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়ারা আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।

চীনের সর্বশেষ ও বৃহত্তম শোধনাগার ইয়ুলং পেট্রোকেমিক্যাল প্রতিদিন ৪ লাখ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষম এবং রাশিয়ার বড় ক্রেতা।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে এবং যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে।

রাশিয়ার আত্মবিশ্বাস অটুট

লন্ডনে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা বাজারকে অস্থিতিশীল করবে ও ব্রিটিশ ভোক্তাদের খরচ বাড়াবে কিন্তু রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

গত আগস্টে ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগারগুলোকে টার্গেট করে ড্রোন হামলা করছে। অন্যদিকে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ-বিভ্রাট ঘটছে।

এক জ্বালানি সম্মেলনে পুতিন বলেন, চলতি বছর রাশিয়ার তেল উৎপাদন সামান্যই কমবে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক বলেছেন, রাশিয়া ও ভারতের জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...