Ajker Patrika

এবার ভারতীয় পণ্যের নিয়মিত ট্রানজিট, বাড়ল শুধু পাহারার মাশুল 

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০: ১০
এবার ভারতীয় পণ্যের নিয়মিত ট্রানজিট, বাড়ল শুধু পাহারার মাশুল 

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি চালান আনা-নেওয়ার পর এবার নিয়মিতভাবে পণ্য পরিবহনের পথ খুলল। ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় নিয়মিত পণ্য পরিবহনের বিষয়ে গত সোমবার স্থায়ী আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আদেশে ট্রানজিট অপারেটর নিয়োগ, বন্দরে জাহাজ ভেড়া, ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্টের ঘোষণা, শুল্কায়ন, পণ্যের কায়িক পরীক্ষা, ট্রানজিটকাল বিষয়ে বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে। আদেশটিতে ট্রানজিট অপারেটর হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত করা এবং সড়কপথে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি যানবাহন ব্যবহারের কথা রয়েছে।

পরীক্ষামূলক চালানে মাশুলের (ফি) যেসব খাত ছিল, নতুন আদেশে তা বহাল রাখা হয়েছে। তবে নতুন আদেশে সড়কপথে ট্রানজিটের চালান আনা-নেওয়ার সময় ‘এসকর্ট ফি’ (পাহারার মাশুল) বাড়ানো হয়েছে। 

এনবিআরের স্থায়ী আদেশ অনুযায়ী, প্রতি চালানের প্রক্রিয়াকরণ মাশুল বা প্রসেসিং ফি ৩০ টাকা, প্রতি টনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট ফি ২০ টাকা, নিরাপত্তা ফি ১০০ টাকা, কনটেইনার স্ক্যানিং (যন্ত্রের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা) ফি ২৫৪ টাকা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আদেশে প্রতি কনটেইনার বা গাড়ির জন্য কিলোমিটারপ্রতি এসকর্ট (পাহারা) ফি ৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে প্রতি চালানে এসকর্ট ফি ছিল ৫০ টাকা। ইলেকট্রিক লক ও সিল ফি নামের আরেকটি খাত রয়েছে, যেটি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। 

এর বাইরে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত মাশুল দিতে হবে। ২০২১ সালের ১৬ জুন আটটি রুটে ওই মাশুল নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়। প্রতি টন পণ্যে প্রতি কিলোমিটারে মাশুল ১ টাকা ৮৫ পয়সা।

গতবছর ৮ আগস্ট পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের আওতায় ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী কন্টেইনার মোংলা বন্দরে ভীড়ে। ছবি: টুইটার

আটটি রুটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব মোংলা বন্দর-গোপালগঞ্জ-মাওয়া-ঢাকা-নরসিংদী-আশুগঞ্জ-সিলেট-তামাবিল রুটের। এই রুটে ৪৩৫ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য টোলসহ মাঝারি পণ্য পরিবহনক্ষমতার ট্রাকের আদায়যোগ্য মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ১৯৫ টাকা। সবচেয়ে কম দূরত্ব চট্টগ্রাম বন্দর-ফেনী-কুমিল্লা-বিবিরবাজার রুটের, ১৪৩ কিলোমিটার। এই রুটে সড়কপথের মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৮৮ টাকা।

বিভিন্ন ধরনের মাশুলের ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) আরোপ হবে।

২০২০ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় পণ্যের কয়েকটি চালান বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে আনা-নেওয়া হয়েছে। তখন বিশেষ অনুমোদনের মাধ্যমে সেটা করা হয়েছিল। এখন এনবিআর স্থায়ী আদেশ জারির মাধ্যমে নিয়মিত ট্রানজিট কার্যক্রম শুরুর পথ খুলেছে। 

ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে (আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল ও মেঘালয়) পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ বেশি লাগে। এ জন্য দেশটি চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের সড়ক দিয়ে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহন করতে চায়। 

২০১৮ সালের অক্টোবরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ে দুই দেশের সচিব পর্যায়ে চুক্তি হয়। এক বছর পর ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকে এ-সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতির মান বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়। 

উল্লেখ্য, ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বাংলাদেশ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য করার সুযোগও পেয়েছে।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের এসওপি সই হওয়ার পর ২০২০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক চালান আনা-নেওয়া হয়। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে আরও কয়েকটি চালান পরীক্ষামূলকভাবে আনা-নেওয়া হয়েছে।

গতবছর ৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের আওতায় ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে ভীড়ে। ছবি: টুইটারএনবিআরের আদেশ অনুযায়ী, ভারতের পণ্য চালান চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে আটটি রুটে (পথ) বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে স্থলবন্দর হয়ে ভারতে নেওয়া যাবে। আবার একইভাবে ওই আটটি রুটে ভারত থেকে বাংলাদেশের স্থলবন্দর হয়ে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য চালান আবার ভারতে নেওয়া যাবে।

এই আটটি রুট হলো চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম বন্দর-তামাবিল ডাউকি, মোংলা বন্দর-তামাবিল-ডাউকি, চট্টগ্রাম বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, মোংলা বন্দর-শেওলা-সুতারকান্দি, চট্টগ্রাম বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাপুড়ের রক্তে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিভেনম

সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখলেই পুলিশে সোপর্দ করবেন: সামান্তা

কুষ্টিয়ায় দুই পুলিশকে আসামির হাতুড়িপেটা

১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরছেন জোবাইদা রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত