Ajker Patrika

প্রতি কেজি আলুতে কৃষকের লোকসান ১৪-১৬ টাকা

  • পরিবহন, হিমাগার ভাড়াসহ প্রতি কেজিতে খরচ ২৬-২৮ টাকা।
  • এ বছর উৎপাদন হয়েছে ১০.৮২ লাখ টন।
  • গত বছর হয়েছিল ১০.৩০ লাখ টন।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
হিমাগারে আলু বাছাই করছেন শ্রমিকেরা। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ফাইভস্টার হিমাগারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হিমাগারে আলু বাছাই করছেন শ্রমিকেরা। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ফাইভস্টার হিমাগারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের শীর্ষ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সিগঞ্জে কৃষকেরা এবার চরম লোকসানে পড়েছেন। বেশি ফলন ও হিমাগার-সংকটে বিপাকে পড়া এ জেলার কৃষকদের উৎপাদন খরচের অর্ধেকও উঠছে না। প্রতি কেজি আলুতে কৃষকের লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৪-১৬ টাকা। বর্তমানে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২ ও খুচরা বাজারে ১৮-২০ টাকায়। কিন্তু কৃষকেরা পাইকারি বাজারেই আলু বিক্রি করতে বাধ্য হন। ফলে খুচরা দামের সুফল তাঁদের কাছে পৌঁছায় না।

উৎপাদন বেড়েছে, দাম কমেছে: জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মুন্সিগঞ্জের ৬ উপজেলায় ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৮২ হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় ৫২ হাজার টন বেশি। তবে জেলার ৭৪টি হিমাগারের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ৫৮টি, যেগুলোর ধারণক্ষমতা প্রায় ৫ লাখ টন। উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি তথা ৫ লাখ ৮২ হাজার টনের মতো আলু সংরক্ষণের জায়গার অভাব রয়েছে। ফলে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে না পেরে ওই আলু কৃষক তাঁর বাড়িতে মাচার মধ্যে সংরক্ষণ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মাচাবন্দী থাকায় আলুতে পচন ধরায় তা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা।

কৃষকের হিসাব, ক্ষতির চিত্র: কৃষকদের হিসাবে, এ বছর ১ কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৬-১৮ টাকা। হিমাগার পর্যন্ত পরিবহন ও শ্রমিকের পারিশ্রমিকের সঙ্গে হিমাগার ভাড়া যোগ করলে খরচ দাঁড়াচ্ছে ২৬-২৮ টাকা। অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১২ টাকা দরে। এর মধ্যে গত বছর হিমাগারে আলু সংরক্ষণে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ভাড়া পড়ত ২১০-২৫০ টাকা। এ বছর সেই বস্তার ভাড়া পড়ছে ৩০০ টাকা।

সিরাজদিখানের গোবরদী গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ ইয়াছিন শেখ বলেন, ‘৬ কানি তথা ৮৪০ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করেছি। ৫০ কেজি বস্তার দেড় হাজার বস্তা আলু পেয়েছি। বিক্রি করে এখন পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র ৫ লাখ টাকা। ৫০০ বস্তা আলু হিমাগারে রেখেছি। বর্তমানে পাইকারি বাজারে আলুর দাম কেজিপ্রতি ১২ টাকা। হিমাগারে থাকা ওই আলু বিক্রি করে দিলে আমার লোকসান হবে ১৩-১৪ লাখ টাকা।’

বাজার পরিস্থিতি: জেলার হিমাগারগুলোতে এখনো লাখ লাখ বস্তা আলু মজুত রয়েছে। তবে বাজারে দামের কোনো উন্নতি হয়নি। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, সর্বোচ্চ ১২ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। কৃষকদের দাবি, ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

জেলার আলুচাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, কৃষকদের বাঁচাতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কৃষকের এমন লোকসানের মুহূর্তে সরকারি প্রণোদনা, ঋণ মওকুফ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের জন্য একটি কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা অপরিহার্য।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, এ বছর দেশে ২৪ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদিত হয়েছে। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণেই দাম কমেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত