Ajker Patrika

টিসিবির পণ্য: তেল-ডাল-চিনির সঙ্গে চালও পাওয়া যাবে 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৪১
টিসিবির পণ্য: তেল-ডাল-চিনির সঙ্গে চালও পাওয়া যাবে 

দেশব্যাপী তেল, চিনি ও ডালের সঙ্গে আগামীকাল রোববার থেকে জনপ্রতি ৫ কেজি চালও পাচ্ছেন টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরা। মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমানো হয়েছে। আগামীকাল রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন খাদ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

টিসিবি জানায়, আগামীকাল থেকে ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের মধ্যে ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এদিন দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আবদুল্লাপুর পলওয়েল কনভেনশন শপিং সেন্টারের পেছনে তেল, ডাল ও চিনির সঙ্গে চাল বিতরণ উদ্বোধন করবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। দেশব্যাপী এ কার্যক্রম টিসিবির ডিলারদের কাছ থেকে নির্ধারিত দিন ও তারিখে বিতরণ করা হবে। 

টিসিবি আরও জানায়, আগে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ছিল ৭০ টাকা। বর্তমানে কেজি প্রতি ১০ টাকা কমিয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। একজন কার্ডধারী ২০০ টাকায় দুই লিটার সয়াবিন তেল, ১২০ টাকায় দুই কেজি মসুর ডাল, ৭০ টাকায় এক কেজি চিনি ও ১৫০ টাকায় ৫ কেজি চাল কিনতে পারবেন। 

জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৯ টাকা, চিনি ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ৯০-১০০ টাকা ও মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারায় নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা। 

দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের এক কোটি পরিবারের মধ্যে টিসিবির মাধ্যমে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও চিনি বিক্রি করে আসছে সরকার। মহানগরী ছাড়াও দেশের বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির স্থায়ী ডিলারদের কাছ থেকে নির্ধারিত সময়ে চারটি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের পর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ে। বেড়ে যায় ডলারের দামও। ফলে দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এতে পণ্য আমদানিতে ভোগান্তিতে পড়েন দেশের আমদানিকারকেরা। এই অবস্থা থেকে দেশের হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের সহযোগিতার জন্য এক কোটি পরিবারের মধ্যে স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আমদানি করবে সিটি, মেঘনা ও ডেল্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগামী এক বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন তেলবীজ আমদানি করবে দেশের তিনটি শীর্ষ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান—মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও ডেল্টা অ্যাগ্রো। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন রপ্তানি কাউন্সিলের (ইউএসএসইসি) সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন প্রতিষ্ঠান তিনটির কর্মকর্তারা।

এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বাজারে মার্কিন কৃষকের প্রতিযোগিতা আরও বিস্তৃত হবে এবং বাংলাদেশের উচ্চমানের কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সক্ষমতা শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউএসএসইসির সহায়তায় সম্পন্ন হওয়া এ চুক্তি দুই দেশের কৃষি-বাণিজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীর একটি হোটেলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের কর্মকর্তা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, বাংলাদেশের বাজারে সয়াবিনভিত্তিক পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এই চুক্তির পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন। বিপরীতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় ৩ লাখ টন। বিশাল এই ঘাটতির জোগানে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে বাংলাদেশ। অর্থাৎ প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানিনির্ভর; যার সিংহভাগই আসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে।

জানা যায়, গত আগস্টে পাল্টা শুল্কের মুখে বাণিজ্যঘাটতি কমাতে মার্কিন বাজার থেকে গম, সয়াবিন, তুলা, বোয়িংসহ বেশ কিছু পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দেয় বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে সয়াবিন আমদানি চুক্তি সই করেছে দেশের শীর্ষ ভোজ্যতেল প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান তিনটি।

সয়াবিন রপ্তানির মাধ্যমে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন ইউএসইসির সিইও কেভিন এম রোপকে।

সিটি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. হাসান বলেন, ‘কৃষিভিত্তিক ব্যবসা ও খাদ্যনিরাপত্তায় এই চুক্তি ভূমিকা রাখবে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এগিয়ে নিলে পরস্পরের জন্য লাভজনক হবে। বাংলাদেশের খাদ্য ও তেলের সরবরাহব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি ইতিবাচক হবে।’

মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, চুক্তির ফলে বাংলাদেশের ভোক্তারা প্রতিযোগিতামূলক দামে সয়াবিন পাবেন।

এই চুক্তির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে নতুন গতি পাবে বলে মনে করেন ডেল্টা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আমিরুল হক।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বলেন, বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্র এখন বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি সহযোগী। ভবিষ্যতে দুদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।

ট্রেসি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাজার এখন মার্কিন কৃষিপণ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই উদ্যোগের ফলে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন বিক্রি অন্তত তিন গুণ বাড়তে পারে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।

সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য, বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৬২৬ কোটি ডলার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের শুল্ক: থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের দখলে যাচ্ছে ভারতের হারানো রপ্তানি বাজার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের ধাক্কায় ভারতের রপ্তানি খাতে দীর্ঘস্থায়ী পতন দেখা দিয়েছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (২ নভেম্বর) সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের রপ্তানি খাতে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ স্বল্প-মেয়াদি পতনের ঘটনা।

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। গত এপ্রিল মাসে প্রথমে ভারতের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর আগস্টের শুরুতে ২৫ শতাংশ এবং ওই মাসের শেষে রাশিয়ার তেল কেনার ‘শাস্তি’সহ শুল্ক বাড়িয়ে মোট ৫০ শতাংশ করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর প্রভাব ছিল তাৎক্ষণিক এবং মারাত্মক। এর প্রভাবে মাত্র পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৮৮০ কোটি ডলার থেকে কমে ৫৫০ কোটি ডলারে নেমে আসে।

এই পতনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে শুল্কমুক্ত পণ্যের ওপর, যা একসময় ভারতীয় পণ্য রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ছিল। শুল্কমুক্ত এসব পণ্যের চালান প্রায় ৪৭ শতাংশ কমেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের শুল্কমুক্ত রপ্তানি মে মাসের ৩৪০ কোটি ডলার থেকে সেপ্টেম্বরে ১৮০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্মার্টফোন এবং ওষুধ খাত। ভারতের স্মার্টফোন রপ্তানি গত বছরের (২০২৪) এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২০২৫ সালের শুরুর দিকে ১৯৭ শতাংশ বেড়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ মাসে এটি ৫৮ শতাংশ কমে গেছে। মে মাসে ২২৯ কোটি ডলার থাকলেও সেপ্টেম্বরে তা ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে নেমে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল রপ্তানি কমেছে ১৫ দশমিক ৭। গত মে মাসে এই খাতে রপ্তানি ছিল ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। কিন্তু পাঁচ মাসে কমে সেপ্টেম্বর মাসে তা হয়েছে ৬২ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।

শ্রম-নির্ভর বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, রাসায়নিক, কৃষিজাত খাদ্যপণ্য ও যন্ত্রপাতি—এই খাতগুলো সম্মিলিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি পণ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ। এখানে ৩৩ শতাংশ সংকোচন দেখা গেছে— গত মে মাসের ৪৮০ কোটি ডলার থেকে সেপ্টেম্বরে ৩২০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

রত্ন ও গয়না ভারতের রপ্তানি আয়ের অন্যতম উৎস। যুক্তরাষ্ট্রে এগুলোর রপ্তানি প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যাওয়ায় (৫০ কোটি ২ লাখ ডলার থেকে ২০ কোটি ২৮ লাখ ডলারে নেমে এসেছে) সুরাট এবং মুম্বাইয়ের উৎপাদন কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের সোলার প্যানেল রপ্তানি কমেছে ৬০ দশমিক ৮ শতাংশ। এই খাতে চীনা পণ্যে ৩০ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক বহাল থাকার পরও রপ্তানিতে ভারতের অবস্থান অনেক নিচে নেমে গেছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ধাতু ও যন্ত্রাংশ রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানি ৩৭ শতাংশ, তামা ২৫ শতাংশ এবং যন্ত্রাংশ রপ্তানি কমেছে ১২ শতাংশ। তবে জিটিআরআই মনে করে, এই পতন মার্কিন শিল্প চাহিদার সামগ্রিক মন্দার ফল।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের তথ্যমতে, রপ্তানি হারানো ভারতের এই খাতগুলো এখন থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম দখল করে নিয়েছে।

ভারতের ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকেরা ইতিমধ্যে সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—অর্থায়নের খরচ কমাতে সুদের সমতা বৃদ্ধি, নগদ প্রবাহের চাপ কমাতে শুল্ক প্রত্যর্পণ (শুল্ক-করের অর্থ ফেরত দেওয়া) দ্রুত করা এবং এমএসএমই (ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ) রপ্তানিকারকদের জন্য জরুরি ঋণ সুবিধা চালু করা।

জিটিআরআই সতর্ক করে বলেছে, দ্রুত নীতিগত পদক্ষেপ না নিলে, ভারত ঐতিহ্যগতভাবে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা খাতগুলোতেও ভিয়েতনাম, মেক্সিকো এবং চীনের কাছে দীর্ঘমেয়াদি বাজার হারাতে পারে। জিটিআরআইয়ের চূড়ান্ত বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই শুল্কগুলো কেবল মুনাফার মার্জিনকেই সংকুচিত করেনি, বরং ভারতের রপ্তানি কাঠামোর মধ্যেকার গভীর দুর্বলতাগুলোও উন্মোচিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রয়টার্সের প্রতিবেদন /আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪০
ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানি পাওয়ার কোম্পানির এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ছবি: বিজনেস লাইন/দ্য হিন্দু
ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানি পাওয়ার কোম্পানির এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ছবি: বিজনেস লাইন/দ্য হিন্দু

বাংলাদেশ জানিয়েছে, ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মেটাতে আন্তর্জাতিক সালিসি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিষয়টি জানিয়েছেন। আদানি পাওয়ারও এক বিবৃতিতে একই ধরনের পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

ভারতের শিল্পপতি গৌতম আদানির নেতৃত্বাধীন আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বেশ কিছুদিন ধরে বকেয়া বিল নিয়ে মতবিরোধ চলছে। ২০১৭ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যে বিদ্যুৎ-সরবরাহ চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তির শর্ত নিয়েই এই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

আদানির এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কিছু ব্যয়ের হিসাব ও বিল তৈরির পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। তাই দুই পক্ষই বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চালু করতে রাজি হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই প্রক্রিয়া দ্রুত, মসৃণ ও উভয়ের জন্য লাভজনক সমাধান এনে দেবে।’

তবে বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনা এখনো চলছে। তিনি বলেন, ‘আলোচনা শেষ হলে প্রয়োজনে আমরা আন্তর্জাতিক সালিসি প্রক্রিয়ায় যাব।’

আদানি পাওয়ার ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় এক–দশমাংশ পূরণ হয়।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গত ডিসেম্বরে অভিযোগ করেছিল, আদানি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। কারণ, গড্ডা কেন্দ্র ভারতের কাছ থেকে যে কর-ছাড় সুবিধা পেয়েছিল, তা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ আদানিকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ১৪.৮৭ টাকা (০.১২২০ ডলার) হারে মূল্য দিয়েছে। অন্য ভারতীয় কোম্পানির কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ আসে, তার গড় মূল্য ইউনিটপ্রতি ছিল ৯.৫৭ টাকা।

গত সপ্তাহে আদানি পাওয়ার জানায়, বাংলাদেশের কাছ থেকে তাদের পাওনা এখন অনেক কমে এসেছে। মে মাসে যেখানে বকেয়া ছিল প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার এবং বছরের শুরুর দিকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল, এখন তা কমে ১৫ দিনের ট্যারিফ সমপরিমাণে নেমে এসেছে।

সংস্থাটি সোমবার আরও জানায়, ‘আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অটুট রাখবে এবং নির্ভরযোগ্য, প্রতিযোগিতামূলক ও উচ্চমানের বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে থাকবে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিকায় বদলাবে মাছ চাষের হিসাব

মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত রোগে প্রতিবছর মাছ চাষ খাত হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এবার সেই ক্ষতি ঠেকাতে সরকার নিচ্ছে ৪৩ কোটি টাকার টিকা প্রকল্প। দেশীয় প্রজাতির মাছকে রোগমুক্ত রাখতে প্রথমবারের মতো তৈরি হবে মিঠাপানির মাছের টিকা, যা মৃত্যুহার কমাবে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পের সফল প্রয়োগ হলে মাছ চাষ খাত নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, বাড়বে উৎপাদন, বিনিয়োগ আর রপ্তানির সুযোগ।

দেশের মিঠাপানির খামারগুলোয় প্রতিবছর অজানা ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে বিপুল পরিমাণ মাছ মারা যায়। এই ক্ষতি থেকে চাষিদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় শতকোটি টাকায়। এতে অনেক উদ্যোক্তা বাধ্য হয়ে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন। সেই হতাশার পরিপ্রেক্ষিতেই শুরু হচ্ছে ‘মিঠাপানির মাছের মড়ক প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উদ্ভাবন’ প্রকল্প; যা দেশের মাছ চাষে এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১১ জেলার ৩৩ উপজেলায়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশীয় প্রজাতির টেকসই উৎপাদন ধরে রাখতে এই প্রকল্প অপরিহার্য। এটি সফল হলে শুধু উৎপাদন বাড়বে না, বরং মাছ চাষে আত্মনির্ভরতা আরও সুদৃঢ় হবে।

সরকারি তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ৫৭ শতাংশ আসে মিঠাপানির খামার থেকে। চার লাখ হেক্টরের বেশি পুকুরে এই চাষ পরিচালিত হলেও সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা ও রোগনিয়ন্ত্রণের ঘাটতিতে খামারগুলো ক্রমেই ঝুঁকিতে পড়ছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, বগুড়া, যশোর ও রাজশাহীর মতো মাছ চাষের প্রধান এলাকাগুলোয় ভাইরাস সংক্রমণে কয়েক দিনের মধ্যেই ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে নিয়মিতভাবেই।

এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যেই সরকারের এই টিকা উদ্ভাবনের উদ্যোগ। প্রথম ধাপে ৯টি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি—কই, পাঙাশ, তেলাপিয়া, কার্প, শিং, মাগুর, পাবদা, ট্যাংরা ও গুলশায় এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ প্রকল্পে সহযোগিতা দেবে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাছের রোগ নিয়ন্ত্রণে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখে খাওয়ার এই টিকা সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই মাছ চাষে নেতৃত্ব নিতে পারে। এতে একদিকে খামারিদের আর্থিক ঝুঁকি কমবে, অন্যদিকে মাছ চাষ খাত পাবে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতি ও বিনিয়োগের নতুন গতি। মৎস্য বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সিরাজুম মুনির বলেন, চাষিরা বিক্রির ঠিক আগমুহূর্তে অনেক সময় ৭০-৮০ শতাংশ মাছ হারান। কার্যকর টিকা প্রয়োগ করা গেলে এই মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে কমবে।

প্রকল্পের আওতায় আধুনিক বায়োমলিকুলার প্রযুক্তিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শনাক্ত করা, জীবাণুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ এবং তাদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক টিকা তৈরি করা হবে। মুখে খাওয়ার টিকা উদ্ভাবনকে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার; কারণ, এটি প্রয়োগে সহজ, খরচে সাশ্রয়ী এবং মাছের ওপর কোনো শারীরিক চাপ ফেলে না।

সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও একাডেমিক খাতেও চলছে গবেষণা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ ইতিমধ্যে উদ্ভাবন করেছে ‘বায়োফ্লিম’ নামে একটি টিকা, যা এরোমোনাস হাইড্রোফিলা ব্যাকটেরিয়াজনিত ক্ষত, আলসার ও পাখনা পচা রোগ প্রতিরোধে ৮৪ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ওই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বায়োফ্লিম শুধু পাঙাশ নয়; রুই, কাতলা, কই, শিংসহ অন্যান্য প্রজাতিতেও কার্যকর। এটি বাণিজ্যিক পর্যায়ে গেলে দেশীয় ফিশ হেলথ ইন্ডাস্ট্রির নতুন বাজার তৈরি হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি ও পানিসম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টিকা উদ্ভাবন সফল হলে এই খাত বিদেশি বিনিয়োগের নতুন দ্বার খুলে দেবে।

২০২৫ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্প ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে। বাজেট কাঠামো অনুসারে প্রতি অর্থবছরে ৭ থেকে ১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সরকারের প্রত্যাশা, এই প্রকল্প শুধু রোগ প্রতিরোধে নয়, বরং উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত