Ajker Patrika

বিদেশে পাচারের টাকা উদ্ধারে ১২ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে চুক্তির নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিগত সরকারের আমলে বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এর মাধ্যমে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকগুলো চুক্তি করবে।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নিলে গভর্নর এ নির্দেশনা দেন ব্যাংকারদের।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ল ফার্ম ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠানে (মোট ১২টি) এনগেজ করলে তারা টাকাগুলো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারবে। কিছু ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে। একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে এবং বাইরের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অ্যাগ্রিমেন্ট করা হবে। এরপর দেখা হবে সেই টাকা কীভাবে ডিপোজিট করা সম্ভব।’

ওমর ফারুক আরও বলেন, ‘স্পেশাল সিআইডি প্রাথমিকভাবে মোট ১১টি স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের নামগুলো হলো—বসুন্ধরা, নাসা, এস আলম ইত্যাদি। আর এনডিএ (নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট বা গোপনীয়তার চুক্তি) করে আমরা স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করব। চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো—বাংলাদেশ থেকে যেসব টাকা পাচার হয়েছে, সেসব রিকভার করা।’

এবি ব্যাংকের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এটি একটি ‘টোটাল ব্যাংকিং’ কনসেপ্ট, যেখানে বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা ছিল। সভায় প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল।

পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি লন্ডারিংসংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে এনডিএ করে ফরেন অ্যাসেট রিকভারি কাজ করতে বলা হবে।

সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নাম ছাড়াও পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তালিকায় রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, ওরিয়ন, জেমকন, নাবিল, সামিট প্রভৃতি। এসব গোষ্ঠীর মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের কিছু অংশ সুবিধাভোগী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছেছে।

পাচার করা অর্থ উদ্ধারে আগে কাজ করা আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার নামও উল্লেখ করা হয়েছে—দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি করাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা তথ্য আহরণে সফলতা পেয়েছে এবং এখন আইনিপ্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন অবিলম্বে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত