Ajker Patrika

সবজির সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী ডিম-মুরগি

  • ১ কেজি বেগুন কিনতে হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
  • আমদানি করা ছোট দানার মসুর ডাল ১৬০ টাকা।
  • ফার্মের ডিম ও মুরগির দামও বেড়েছে চলতি সপ্তাহে।
  • কাঁচা মরিচ মিলছে ২৫০ টাকা কেজির মধ্যে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০৪
বাজারে অধিকাংশ সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবু থেমে নেই বেচাকেনা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাজারে অধিকাংশ সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবু থেমে নেই বেচাকেনা। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বর্ষায় উৎপাদন ব্যাহত, বৃষ্টিতে সরবরাহ সমস্যা আর দুই মৌসুমের ফাঁদসহ নানা কারণে সবজির দাম কয়েক মাস ধরেই বেশি। সেই বাড়তি দাম আরও বেড়েছে চলতি সপ্তাহে। ১ কেজি বেগুন কিনতে এখন ক্রেতার খরচ হচ্ছে ১৬০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৪০ টাকা বেশি। শুধু বেগুনই নয়, চলতি সপ্তাহে পটোল, ঢ্যাঁড়স, বরবটি, কাঁকরোলসহ বাজারে বেশি চাহিদার প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে।

সবজির সঙ্গে চলতি সপ্তাহে ক্রেতার জন্য দুঃসংবাদ রয়েছে মুদিপণ্য ও আমিষের বাজারেও। মসুর ডাল, আটা, ভোজ্যতেলসহ কিছু কিছু পণ্যের দাম কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া ফার্মের ডিম ও মুরগির দামও বেড়েছে চলতি সপ্তাহে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, খিলগাঁও, রামপুরা, সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০-১২০ টাকা, পটোল ৭০-৮০, যা ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০-১১০, যা ছিল ৭০-১০০ টাকা, করলা ৮০-১০০, যা ছিল ৮০-৯০, টমেটো ১৩০, গাজর ১৪০ ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে।

আমদানি বন্ধ থাকায় কাঁচা মরিচের দাম গত সপ্তাহে বেড়ে ৩৫০ টাকায় ওঠে। তবে চলতি সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। পণ্যটি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি।

রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রোবেল বলেন, সবজির দাম কমতে আরও সময় লাগবে। কিছু কিছু অঞ্চলে সবজির আবাদ শুরু হলেও বৃষ্টিতে জমা থাকা পানির কারণে অনেক জায়গায় আবাদ শুরু হয়নি। আবাদ শুরু হওয়ার পরও তা পরিপক্ব হতে ৫০-৬০ দিন সময় লাগে। তাই নভেম্বরের মাঝামাঝি সবজির দাম কমা শুরু হতে পারে।

সবজির সঙ্গে গত দেড় থেকে দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে মসুর ডালের দাম। বর্তমানে ভালো মানের আমদানি করা ছোট দানার মসুর ডাল কিনতে লাগছে ১৬০ টাকা কেজি, যা মাসখানেক আগেও ছিল ১৪০ টাকা। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এই বাড়তি দামের মধ্যে গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ২-৫ টাকা। বাজারে দেশি ছোট দানার মসুর ডাল পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪৬ টাকা। এই ডাল মাসখানেক আগে পাওয়া যেত ১৩০-১৩৫ টাকায়। বাজারে মাঝারি মানের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫, যা এক সপ্তাহ আগে ১২৫-১৩০ টাকা ছিল। এ ছাড়া মোটা দানার মসুর ডাল কিনতে লাগছে ১০৫-১১৫ টাকা।

বাজারে বেড়েছে প্যাকেটজাত আটার দামও। প্রতি কেজি আটায় দাম বেড়েছে ৫ টাকা। গতকাল খিলগাঁও বাজারে ২ কেজি আটার প্যাকেট বিক্রি হয়েছে ১১০, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ টাকা। জানতে চাইলে রাজধানী খিলগাঁও বাজারের ফেনী জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, আটা ও ডালের দাম এখন কিছুটা বাড়তি। এই পণ্যগুলোর সরবরাহ কিছুটা কম। বাকি পণ্যের দাম ঠিক আছে।

বাজারে খোলা ভোজ্যতেলের দামও বাড়তি। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭১-১৭২ টাকায়। এ ছাড়া পাম তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৫৩-১৫৫ টাকায়। সর্বশেষ সরকারনির্ধারিত প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন এবং পাম তেলের দাম ১৬৮ টাকা।

ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত যে মানের ডিম ১৪০ টাকা ডজন ছিল, তা গতকাল ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে তুলনামূলক ছোট ডিম ডজন ১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ফার্মের মুরগির মধ্যে সোনালি জাতের দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।

বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩১০-৩২০ টাকা কেজি। তবে ব্রয়লার আগের মতোই ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম ও মুরগি বিক্রেতা নূর-ই-আলম বলেন, বর্ষা শেষে এখন সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় সোনালি জাতের মুরগির চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। আর সবজির দাম বেশি হওয়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বাড়লে দাম কিছুটা বেশি থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত