ওমর ফারুক, চট্টগ্রাম
একসময় বৈশ্বিক ভাঙা জাহাজের ৩০ শতাংশ কাজই হতো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে। সেখানে দেখা মিলত তীরে ভেড়ানো মহাশক্তিশালী অসংখ্য জাহাজ, যেগুলোর বুকে উঠে শত শত শ্রমিক দিনরাত ইস্পাত টুকরা টুকরা করছেন। টনকে টন লোহার গর্জন, গ্যাস কাটারের ঝলকানি, রডভর্তি ট্রাকের দীর্ঘ সারি—সব মিলিয়ে সাগরের কিনার জুড়ে যেন জাহাজভাঙা শিল্পের অন্য রকম কোলাহল। আজ সেই ইয়ার্ডগুলো একে একে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ছে। কারণ, সমালোচনার বাইরে ছিল না এই খাত। পরিবেশদূষণ, শ্রম শোষণ এবং দুর্ঘটনার কারণে বারবার আলোচনায় এসেছে। এখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানামুখী সংকট এবং চাপের মুখে সেখানে পতনের চিত্র প্রকট। বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক ইয়ার্ড, কমে গেছে খাতটির ব্যবসার পরিধি এবং বেকার হয়েছে প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক। তবু এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কিছু উদ্যোক্তা ব্যবসার নিয়ম মেনে টিকে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। ঝুঁকিমুক্ত, সবুজ বিনিয়োগে হাত বাড়িয়েছেন। মন্দার মাঝেও পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা শিল্পে ‘গ্রিন ইয়ার্ড’ উদ্যোগ নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট, অর্থনৈতিক মন্দা, পরিবেশদূষণসহ নানা কারণে সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা শিল্পের আগের রমরমা দিনগুলো আর নেই। কাঁচামাল আমদানিতে ডলার সংকটের কারণে অনেক ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে নিবন্ধিত ইয়ার্ডের সংখ্যা মাত্র ৮১; এগুলোর মধ্যে ২০-২৫টি সক্রিয় থাকলেও গ্রিনে রূপান্তর হওয়া ইয়ার্ডের সংখ্যা ১৭। আশার দিক হচ্ছে, শতভাগ গ্রিন ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটা হলে পরিবেশদূষণ ও মানুষের প্রাণ-অঙ্গহানির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
গত কয়েক বছরে শতাধিক ইয়ার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় এই খাত ঘিরে গড়ে ওঠা ব্যবসার পরিধিও কমে গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেআর গ্রুপের চেয়ারম্যান সেকান্দার হোসেন টিংকু বলেন, একটি ইয়ার্ডে গড়ে কমপক্ষে ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। গত ১০-১২ বছরে বন্ধ হওয়া প্রায় ১৪০টি কারখানার কমপক্ষে অর্ধলাখ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন।
এর প্রভাব পড়েছে জাহাজভাঙা শিল্পে। বিএসবিআরএর তথ্যমতে, ২০২১ সালে ২৮০টি জাহাজ আমদানি হয়েছিল, যেখানে স্ক্র্যাপ লোহার পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ টন। ২০২২ সালে তা কমে ১১ লাখ টন (১৫০টি জাহাজ), ২০২৩ সালে ১০ লাখ টন (১৭৩টি জাহাজ), ২০২৪ সালে ৯ লাখ টন (১১৪টি জাহাজ) এবং চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৫ লাখ টন (৬৩টি জাহাজ) স্ক্র্যাপ আমদানি হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা অতিমারির সময়ও দেশ একাই বিশ্বের ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ রিসাইকেল করেছিল। ২০২১ সালেও বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল।
জাহাজভাঙা খাতের প্রবীণ উদ্যোক্তা ও বিএসবিআরএর সাবেক সভাপতি আবু তাহের বলেন, ১৯৬০ সালে এক ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রামের উপকূলে আটকা পড়ে গ্রিক জাহাজ এমভি আলপাইন। ১৯৬৫ সালে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে তা ভেঙে স্টিলের কাঁচামাল হিসেবে কাজে লাগানো হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত একটি পাকিস্তানি জাহাজও স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হয়। এভাবেই চট্টগ্রামে জাহাজভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়।
আশির দশকে ব্যবসা রমরমা হয়ে ওঠে। ইয়ার্ড এলাকার মানুষের আয়-উপার্জন বাড়ে, হাজার রকম কাজ ও পণ্যের ব্যবসা গড়ে ওঠে, ফলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। জাহাজভাঙা পণ্যের বেচাকেনায় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান যুক্ত। লোহা প্রায় সম্পূর্ণ পুনর্ব্যবহারযোগ্য। ক্ষতিকর বর্জ্য ছাড়া জাহাজের কোনো অংশ ফেলনা নয়। নিলামে পাওয়া পণ্য ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর হাতে পৌঁছায়। চট্টগ্রামের বাঁশবাড়িয়া থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত এবং পাহাড়তলী সিডিএ মার্কেট, সাগরিকা, পশ্চিম মাদারবাড়ী, কদমতলী ও মুরাদপুরে এসব পণ্য বিক্রি হয়। ঢাকার ধোলাইখাল ও সদরঘাটেও পৌঁছায়।
এক জাহাজে থাকে রি-রোলিং মিলের কাঁচামাল, বড় পাইপ, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, আসবাব, জেনারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, কম্পিউটার, টেলিভিশনসহ নানা পণ্য। রপ্তানিযোগ্য দামি অংশ প্রপেলার, তামা, পিতল, মরিচারোধী ইস্পাতও বিক্রি হয়।
তবে শিল্পটি সমালোচিতও। শ্রম শোষণ, পরিবেশদূষণ ও দুর্ঘটনার কারণে বারবার আলোচনায় এসেছে। সরকারের উদ্যোগে নানা আইন ও নিয়মের মাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা চলছে। পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে দূষণ ও ঝুঁকিমুক্ত শিল্প গড়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন এবং ২০০৯ সালে চীনে অনুষ্ঠিত হংকং কনভেনশন অনুযায়ী, ২৬ জুনের মধ্যে সব জাহাজভাঙা কারখানাকে গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিএসবিআরএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমজাদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ পর্যন্ত মাত্র ১৭টি ইয়ার্ড গ্রিন সনদ পেয়েছে, আরও ১৫-২০টি গ্রিন হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আগামী নভেম্বরে আইএমওর সভায় এ বিষয়ে আরও ছয় মাস সময় চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপরও যারা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের ইয়ার্ড বন্ধ করে দিতে হবে।
সাত বছর আগে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড প্রথম গ্রিন ইয়ার্ডে নাম লেখায়। এরপর এসএন করপোরেশন, কবির স্টিল লিমিটেড, কেআর শিপ রিসাইক্লিং, ম্যাক করপোরেশন, জনতা শিপ ব্রেকিং, এইচএম শিপিং, ফেরদৌস স্টিল ও বিওবি শিপ রিসাইক্লিং গ্রিনে রূপান্তরিত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, একটি গ্রিন ইয়ার্ড স্থাপনে ২০ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ১৭টি গ্রিন ইয়ার্ডে কমপক্ষে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর সবই উদ্যোক্তাদের নিজস্ব উদ্যোগে অর্থায়ন হয়েছে, কিন্তু সবার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
বর্তমান বাজারে প্রতি টন মেল্টিং স্ক্র্যাপ ৪৬ হাজার টাকা, প্লেট ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের মাসে স্ক্র্যাপ ৬১ হাজার, প্লেট ৭৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা কমায় টনে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা দাম কমেছে। সমিতির সভাপতি আমজাদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববাজারে স্ক্র্যাপ জাহাজের দাম ৪৫০-৫৫০ ডলার, তবে নির্মাণ খাতের স্থবিরতার কারণে চাহিদা কম। ফলে লোকসান হচ্ছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী শাহিন বলেন, ২৬ জুনের মধ্যে গ্রিন ইয়ার্ড হওয়া ইয়ার্ডগুলোই বিশ্ববাজার থেকে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করতে পারছে। শুরুর দিকে অনীহা থাকায় ব্যবসায়ীরা পিছিয়ে গেছে। আগামী দশকে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার জাহাজ স্ক্র্যাপিংয়ের জন্য আসবে। ব্যবসায়ীরা গ্রিন ইয়ার্ড তৈরিতে মনোযোগ না দিলে বিশাল বাজার হাতছাড়া হবে। তিনি সরকারকে এই খাতে প্রণোদনা দেওয়ারও আহ্বান জানান।
একসময় বৈশ্বিক ভাঙা জাহাজের ৩০ শতাংশ কাজই হতো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে। সেখানে দেখা মিলত তীরে ভেড়ানো মহাশক্তিশালী অসংখ্য জাহাজ, যেগুলোর বুকে উঠে শত শত শ্রমিক দিনরাত ইস্পাত টুকরা টুকরা করছেন। টনকে টন লোহার গর্জন, গ্যাস কাটারের ঝলকানি, রডভর্তি ট্রাকের দীর্ঘ সারি—সব মিলিয়ে সাগরের কিনার জুড়ে যেন জাহাজভাঙা শিল্পের অন্য রকম কোলাহল। আজ সেই ইয়ার্ডগুলো একে একে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ছে। কারণ, সমালোচনার বাইরে ছিল না এই খাত। পরিবেশদূষণ, শ্রম শোষণ এবং দুর্ঘটনার কারণে বারবার আলোচনায় এসেছে। এখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানামুখী সংকট এবং চাপের মুখে সেখানে পতনের চিত্র প্রকট। বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক ইয়ার্ড, কমে গেছে খাতটির ব্যবসার পরিধি এবং বেকার হয়েছে প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক। তবু এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কিছু উদ্যোক্তা ব্যবসার নিয়ম মেনে টিকে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। ঝুঁকিমুক্ত, সবুজ বিনিয়োগে হাত বাড়িয়েছেন। মন্দার মাঝেও পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা শিল্পে ‘গ্রিন ইয়ার্ড’ উদ্যোগ নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট, অর্থনৈতিক মন্দা, পরিবেশদূষণসহ নানা কারণে সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা শিল্পের আগের রমরমা দিনগুলো আর নেই। কাঁচামাল আমদানিতে ডলার সংকটের কারণে অনেক ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে নিবন্ধিত ইয়ার্ডের সংখ্যা মাত্র ৮১; এগুলোর মধ্যে ২০-২৫টি সক্রিয় থাকলেও গ্রিনে রূপান্তর হওয়া ইয়ার্ডের সংখ্যা ১৭। আশার দিক হচ্ছে, শতভাগ গ্রিন ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটা হলে পরিবেশদূষণ ও মানুষের প্রাণ-অঙ্গহানির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
গত কয়েক বছরে শতাধিক ইয়ার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় এই খাত ঘিরে গড়ে ওঠা ব্যবসার পরিধিও কমে গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেআর গ্রুপের চেয়ারম্যান সেকান্দার হোসেন টিংকু বলেন, একটি ইয়ার্ডে গড়ে কমপক্ষে ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। গত ১০-১২ বছরে বন্ধ হওয়া প্রায় ১৪০টি কারখানার কমপক্ষে অর্ধলাখ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন।
এর প্রভাব পড়েছে জাহাজভাঙা শিল্পে। বিএসবিআরএর তথ্যমতে, ২০২১ সালে ২৮০টি জাহাজ আমদানি হয়েছিল, যেখানে স্ক্র্যাপ লোহার পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ টন। ২০২২ সালে তা কমে ১১ লাখ টন (১৫০টি জাহাজ), ২০২৩ সালে ১০ লাখ টন (১৭৩টি জাহাজ), ২০২৪ সালে ৯ লাখ টন (১১৪টি জাহাজ) এবং চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৫ লাখ টন (৬৩টি জাহাজ) স্ক্র্যাপ আমদানি হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা অতিমারির সময়ও দেশ একাই বিশ্বের ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ রিসাইকেল করেছিল। ২০২১ সালেও বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল।
জাহাজভাঙা খাতের প্রবীণ উদ্যোক্তা ও বিএসবিআরএর সাবেক সভাপতি আবু তাহের বলেন, ১৯৬০ সালে এক ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রামের উপকূলে আটকা পড়ে গ্রিক জাহাজ এমভি আলপাইন। ১৯৬৫ সালে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে তা ভেঙে স্টিলের কাঁচামাল হিসেবে কাজে লাগানো হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত একটি পাকিস্তানি জাহাজও স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হয়। এভাবেই চট্টগ্রামে জাহাজভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়।
আশির দশকে ব্যবসা রমরমা হয়ে ওঠে। ইয়ার্ড এলাকার মানুষের আয়-উপার্জন বাড়ে, হাজার রকম কাজ ও পণ্যের ব্যবসা গড়ে ওঠে, ফলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। জাহাজভাঙা পণ্যের বেচাকেনায় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান যুক্ত। লোহা প্রায় সম্পূর্ণ পুনর্ব্যবহারযোগ্য। ক্ষতিকর বর্জ্য ছাড়া জাহাজের কোনো অংশ ফেলনা নয়। নিলামে পাওয়া পণ্য ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর হাতে পৌঁছায়। চট্টগ্রামের বাঁশবাড়িয়া থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত এবং পাহাড়তলী সিডিএ মার্কেট, সাগরিকা, পশ্চিম মাদারবাড়ী, কদমতলী ও মুরাদপুরে এসব পণ্য বিক্রি হয়। ঢাকার ধোলাইখাল ও সদরঘাটেও পৌঁছায়।
এক জাহাজে থাকে রি-রোলিং মিলের কাঁচামাল, বড় পাইপ, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, আসবাব, জেনারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, কম্পিউটার, টেলিভিশনসহ নানা পণ্য। রপ্তানিযোগ্য দামি অংশ প্রপেলার, তামা, পিতল, মরিচারোধী ইস্পাতও বিক্রি হয়।
তবে শিল্পটি সমালোচিতও। শ্রম শোষণ, পরিবেশদূষণ ও দুর্ঘটনার কারণে বারবার আলোচনায় এসেছে। সরকারের উদ্যোগে নানা আইন ও নিয়মের মাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা চলছে। পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে দূষণ ও ঝুঁকিমুক্ত শিল্প গড়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন এবং ২০০৯ সালে চীনে অনুষ্ঠিত হংকং কনভেনশন অনুযায়ী, ২৬ জুনের মধ্যে সব জাহাজভাঙা কারখানাকে গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিএসবিআরএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমজাদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ পর্যন্ত মাত্র ১৭টি ইয়ার্ড গ্রিন সনদ পেয়েছে, আরও ১৫-২০টি গ্রিন হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আগামী নভেম্বরে আইএমওর সভায় এ বিষয়ে আরও ছয় মাস সময় চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপরও যারা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের ইয়ার্ড বন্ধ করে দিতে হবে।
সাত বছর আগে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড প্রথম গ্রিন ইয়ার্ডে নাম লেখায়। এরপর এসএন করপোরেশন, কবির স্টিল লিমিটেড, কেআর শিপ রিসাইক্লিং, ম্যাক করপোরেশন, জনতা শিপ ব্রেকিং, এইচএম শিপিং, ফেরদৌস স্টিল ও বিওবি শিপ রিসাইক্লিং গ্রিনে রূপান্তরিত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, একটি গ্রিন ইয়ার্ড স্থাপনে ২০ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ১৭টি গ্রিন ইয়ার্ডে কমপক্ষে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর সবই উদ্যোক্তাদের নিজস্ব উদ্যোগে অর্থায়ন হয়েছে, কিন্তু সবার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
বর্তমান বাজারে প্রতি টন মেল্টিং স্ক্র্যাপ ৪৬ হাজার টাকা, প্লেট ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের মাসে স্ক্র্যাপ ৬১ হাজার, প্লেট ৭৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। চাহিদা কমায় টনে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা দাম কমেছে। সমিতির সভাপতি আমজাদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববাজারে স্ক্র্যাপ জাহাজের দাম ৪৫০-৫৫০ ডলার, তবে নির্মাণ খাতের স্থবিরতার কারণে চাহিদা কম। ফলে লোকসান হচ্ছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী শাহিন বলেন, ২৬ জুনের মধ্যে গ্রিন ইয়ার্ড হওয়া ইয়ার্ডগুলোই বিশ্ববাজার থেকে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করতে পারছে। শুরুর দিকে অনীহা থাকায় ব্যবসায়ীরা পিছিয়ে গেছে। আগামী দশকে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার জাহাজ স্ক্র্যাপিংয়ের জন্য আসবে। ব্যবসায়ীরা গ্রিন ইয়ার্ড তৈরিতে মনোযোগ না দিলে বিশাল বাজার হাতছাড়া হবে। তিনি সরকারকে এই খাতে প্রণোদনা দেওয়ারও আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজে পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। আজ শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের বলরুমে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেব
১৪ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে একলাফে ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা; যা দেশের ইতিহাসে এক ভরি স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।
১৫ ঘণ্টা আগেপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
১৭ ঘণ্টা আগেধারণা করা হয়, ভারতবর্ষের প্রাচীনতম নগরী হলো বারানসি। খ্রিষ্টপূর্ব ১ হাজার ৮০০ সাল থেকেই এ নগরীর অস্তিত্ব আছে বলে মনে করা হয়। এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির মেলবন্ধন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শাড়ির বিক্রি কমেছে। নানা কারণে এ মন্দা দেখা দিলেও সর্বশেষ ধাক্কা এসেছে ভারত-বাংলাদেশের চলমান টানা
২০ ঘণ্টা আগে