Ajker Patrika

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৪, ২০: ৩৩
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে কমছে নদ-নদীর পানি। আর পানি কমায় জেলার নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাকবলিত মানুষ। 

আজ শুক্রবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার ১০১টি ইউনিয়নের ১ হাজার ১৮০টি গ্রামের ৬ লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ মানুষ বন্যাকবলিত। আর এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছে ৯ হাজার ৩২৯ মানুষ। 

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এর আগের দিন ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিসহ এলাকার বেশির ভাগ জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সিলেটের কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্ট ও সুরমা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

আজ সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ, শেওলা, ফেঞ্চুগঞ্জ, শেরপুর পয়েন্টে যথাক্রমে ১৩০, ৩৮, ১০১ ও ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ডাইক ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় উপজেলার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। নৌকা না থাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বিড়ম্বনায় পড়ে। পানিতে ডুবেছে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র। অনেকের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে রয়েছে মানুষ। এ উপজেলার চারটি এলাকা দিয়ে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে বানের পানি লোকালয়ে ঢুকে ভেসে গেছে বিপুলসংখ্যক পুকুর ও ফিশারির মাছ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাটসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, জকিগঞ্জ-সিলেট ও শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের একটি অংশ। 

গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ছবড়িয়া, রারাই, বাখরশাল, পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নরসিংহপুর এলাকার ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যসহ লোকজন ডাইক টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেননি। 

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম বলেন, নদ-নদীর পানি কিছুটা কমায় জকিগঞ্জে বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। লোকালয় থেকে পানি নামছে। ১২০টি পরিবারের প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদে উদীচীর গানের মিছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলে উদীচীর নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলে উদীচীর নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আজ রোববার সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলের আয়োজন করে উদীচীর নেতারা অবিলম্বে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না হলে সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ বিকেলে তোপখানা রোডের সত্যেন সেন চত্বর থেকে শুরু হওয়া গানের মিছিলটি শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এরপর আরও একটু এগিয়ে ব্যাটারি গলির মুখে মিছিল শেষ করে উদীচীর নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন।

উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুল আলম খান বলেন, এই গান বাংলার মানুষের প্রাণ। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই এই গানকে বাংলার মানুষের প্রাণ থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।

হাবিবুল আলম সরকারের এ সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আপনারা যে কাজ করেছেন, নিজেদের প্রশ্ন করেন, এর অধিকার আপনাদের আছে কি না। আপনারা কাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন, এটা পরিষ্কার হওয়ার আর কিছু বাকি নেই।’ এক সপ্তাহের মধ্যে সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সারা দেশের মেহনতি মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন সংগীত শিক্ষায় শিক্ষিত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা গান গাইতে পারব না, এটা আমি ভাবতে পারি না...বিভিন্ন সংগীতের স্কুল, একাডেমি, প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংগীত বিভাগ আছে। সেখান থেকে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী বের হচ্ছে। তারা কী করবে?’

প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জামশেদ আনোয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘চরম অসভ্যতা’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আমরা ২৬ জুলাই সত্যেন সেন চত্বর থেকেই গান গাইতে গাইতে কারফিউ ভেঙেছিলাম। গানকে আটকে রাখে এমন শক্তি পৃথিবীতে নেই। গানকে কীভাবে স্তব্ধ করবেন, মানুষের মনের কথা কীভাবে বন্ধ করবেন।’ তিনিও এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সংগঠক কামাল হোসেন বাদল বলেন, ‘আমরা চব্বিশের অভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, কোনো মৌলবাদী রাষ্ট্রের জন্য নয়।’

মিছিলে উদীচীর শিল্পীরা ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, ‘ভয় কি মরণে’, ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘বাবা বলে গেল আর কোনো দিন গান কোরো না’সহ বেশ কিছু গান পরিবেশন করেন।

অংশগ্রহণকারীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘আমরা চাই হাসি গানে মুখরিত বাংলাদেশ’, ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক পুনর্বহাল করো’, ‘শিক্ষার ফ্যাসিকরণ রুখে দাঁড়াও’ এবং ‘শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ রুখে দাঁড়াও’।

আয়োজনে আরও বক্তব্য দেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, উদীচীর নেতা আরিফ নূর ও রহমান মফিজ। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামীকাল সোমবার একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে যাবে বলে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিসিসি কর্মচারীদের না জড়ানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিসিসি কর্মচারীদের না জড়ানোর নির্দেশ

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে না জড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রাজনীতিবিদেরা করপোরেশনের এমন নির্দেশনাকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন।

জানা গেছে, করপোরেশনের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকাশ্যে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। অনেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার হয়ে ব্যানার কিংবা পোস্টার সাঁটিয়েছেন নগরজুড়ে। সেই সব ব্যানার-পোস্টারে জুড়ে দিচ্ছেন নিজের ছবি। অনেকে নেতাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে সেই ছবি ফেসবুকে দিচ্ছেন।

এসব কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে অনেকে অফিসও ফাঁকি দিচ্ছেন। ফলে রোববার (৯ নভেম্বর) সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘সিটি করপোরেশনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক সভা, সমাবেশে অংশগ্রহণ করছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থী অপরাধ। এ অবস্থায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, মিছিলে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

বরিশাল সিটি কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি নুর খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক সমর্থন থাকতেই পারে। কিন্তু অনেকে নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে, ব্যানার টানায়। করপোরেশনে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির লোকজন আছে। প্রশাসক এ বিষয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। যারা ব্যানার করছে, তাদের ডেকে সতর্ক করেছি। কর্তৃপক্ষ একজনকে শোকজও করেছে।’

এ প্রসঙ্গে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, চাকরিবিধি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সতর্ক করাই তাঁদের লক্ষ্য।

এদিকে বিসিসির অফিস আদেশ প্রসঙ্গে বাসদের জেলা সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। রাজনীতি করার অধিকার সবারই আছে। অফিস সময়ের বাইরে রাজনীতি করার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।’

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, অফিস শেষে বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে বিসিসি বাধা দিতে পারে না। এটা যে কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এভাবে রাজনীতিতে বাধা দেওয়া অন্যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডোমারে গাড়িবহরে হামলা: দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জন কারাগারে

নীলফামারী প্রতিনিধি
গোলাম ফিরোজ, মো. রাসেল ও আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
গোলাম ফিরোজ, মো. রাসেল ও আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারীর ডোমারে বিএনপির প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার জেলাজজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনছুর মিয়া এই আদেশ দেন। এর আগে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর মামলায় উপজেলার সোনারায় ও হরিণচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও একজন ইউপি সদস্য রোববার জেলাজজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিজ্ঞ বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম ফিরোজ চৌধুরী, হরিণচড়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. রাসেল রানা এবং ডোমার সদর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলমগীর রহমান। তাঁরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

সূত্রমতে, ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেন নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভগ্নিপতি। সেদিন প্রচারণার কাজে যাওয়ার পথে জোড়াবাড়ী এলাকায় তাঁর গাড়িবহরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির কমপক্ষে ৬০ নেতা-কর্মী আহত হন।

এ ঘটনায় গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে মামলা করেন। রোববার ওই মামলায় তাঁরা জেলাজজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. আবুল মনছুর মিয়ার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।

এ বিষয়ে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জানতে পেরেছি আদালতে জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে ওয়ার্কশপে অগ্নিকাণ্ড: মোটরসাইকেলে এসে আগুন দেয় দুজন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আগুন লাগার পর বিস্ফোরণে গাড়ির যন্ত্রাংশ উড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন লাগার পর বিস্ফোরণে গাড়ির যন্ত্রাংশ উড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় এক ওয়ার্কশপের সামনে থাকা একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে সেখান থেকে বিস্ফোরণে পাশে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্স ও পিকআপ ভ্যানও পুড়ে যায়। মোটরসাইকেল করে দুই ব্যক্তি এসে গাড়িতে আগুন দেয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

গতকাল শনবির (৮ নভেম্বর) রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের বাম পাশে এ ঘটনা ঘটে।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকঘেঁষে কয়েকটি ওয়ার্কশপ রয়েছে। সামনে খালি জায়গা এবং গাবতলী-সদরঘাট বেড়িবাঁধ সড়ক। খালি জায়গায় বিভিন্ন মালিক পিকআপ ভ্যান রাখেন এবং নষ্ট গাড়ি রেখে মেরামত করেন মেকানিকরা। শনিবার রাতের আগুনে পোড়া গাড়িগুলোর কাঠামো সেখানেই দেখা যায়।

আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের সময় ওয়ার্কশপের নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন লোকমান হাকিম। লোকমান জানান, শনিবার রাত দেড়টার দিকে তিনি এবং জুয়েল নামে একজন গাড়িচালক দক্ষিণ পাশে বসে কথা বলছিলেন। এ সময় বেড়িবাঁধের পাশে থাকা একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরে ওঠে। তাঁরা দুজন দৌড়ে গিয়ে দেখেন, ক্যাপ ও মাস্ক পরা এক ব্যক্তি দৌড়ে মোটরসাইকেলে ওঠার চেষ্টা করছে। তবে সে উঠতে পারেনি। এর মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে যে অপেক্ষা করেছিল সে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার দিকে দ্রুত চলে যায়। আর মাস্ক পরা ব্যক্তি দৌড়ে গাবতলীর দিকে যায়।

আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

লোকমান আরও জানান, তখন তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। এর মধ্যে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সের ছাদ ও যন্ত্রাংশ উড়ে যায়। এ পর্যায়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন তাঁরা নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন বলেও জানান লোকমান। এরপর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়। ততক্ষণে তিনটি গাড়ি পুড়ে যায়।

পোড়া অ্যাম্বুলেন্সের পাশে কাঁদতে দেখা যায় এর মালিক মো. সাগরকে। তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে গাড়িটি মেরামতের জন্য সেবা অটোমোবাইল নামে একটি গ্যারেজে দেন। তারা গাড়িটি বেড়িবাঁধের পাশে রেখেই মেরামতের কাজ করেছে। আমি তখন তাদের নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু তারা শোনেনি। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল।’ তিনি বলেন, ‘সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় এই অ্যাম্বুলেন্স কিনেছি। মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল।’

‘সেবা অটোমোবাইল’ গ্যারেজের মালিক মো. জসীম জানান, সব সময় গাড়ি গ্যারেজের সামনে রেখেই মেরামত করেন। কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। গতকাল কারা, কেন টার্গেট করে এই আগুন দিয়েছে তিনি বুঝতে পারছেন না। ঘটনার পর থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ বলেছেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, একটি মোটরসাইকেলে দুজন ছিল। এই মোটরসাইকেল থেকে কিছু একটা ছুড়ে মারার পরপরই বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। ছুড়ে মারা বস্তুটি পেট্রল বোমা বলে ধারণা তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের।’

ওসি আরও বলেন, ‘আমরা একটা ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। সেখানে একজনকে দৌড়ে চলে যেতে দেখা গেছে। মাথায় সাদা ক্যাপ। আমরা আশপাশের আরও কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করছি।’ দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তাঁকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত