Ajker Patrika

রাত নামলেই আতঙ্ক কামারখন্দের সড়কে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
ঝাঐল ওভারব্রিজসংলগ্ন মহাসড়ক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝাঐল ওভারব্রিজসংলগ্ন মহাসড়ক। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা থেকে টাঙ্গাইল যাচ্ছিলেন মাইক্রোবাসচালক রাশেদুল ইসলাম (২০)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন টিপু সুলতান (২৮) নামের এক সহযোগী ও কয়েকজন যাত্রী। গাড়িটি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজ এলাকায় পৌঁছায় মধ্যরাতের কাছাকাছি সময়ে। হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত পাথরের টুকরা ছুড়ে মারে গাড়িটির জানালায়। মুহূর্তেই ভেঙে যায় কাঁচ।

গাড়িতে থাকা যাত্রী আসাদুজ্জামান রনি বলেন, ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, গাড়ির টায়ার ফেটেছে। কিন্তু শব্দটা এত জোরে হয়েছিল যে চালক গাড়ি থামাতে যাচ্ছিলেন। পরে আমরা বলি, এখানে থামা নিরাপদ নয়, সামনে যেতে হবে। কড্ডারমোড়ে গিয়ে দেখি, চালকের এক সহযোগীর মুখে আঘাত লেগে রক্ত বের হচ্ছে। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার এ মহাসড়ক ও এর সঙ্গে যুক্ত আঞ্চলিক সড়কগুলোতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে কামারখন্দের ঝাঐল ওভারব্রিজ এলাকায় সংঘটিত ডাকাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে আতঙ্ক আরও বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যা নামলেই কামারখন্দের মফিজ মোড় থেকে নান্দিনা হাটখোলা, সীমান্ত বাজার থেকে বিয়ারা বাজার আর নলকা মোড় থেকে জামতৈল বাজার—এ সড়কগুলো হয়ে ওঠে ফাঁকা। অল্প গাড়ি বা ভ্যান বের হয়, অনেকে ঝুঁকি এড়াতে দীর্ঘপথ ঘুরে মূল মহাসড়ক ব্যবহার করেন।

ঝুঁকিপূর্ণ মফিজ মোড় এলাকায় দেখা হলো মো. মজনুর (৪৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মফিজ মোড় থেকে নান্দিনা হাটখোলা পর্যন্ত দুটি ওভারব্রিজ আছে। সেখানে কিছু ছেলে আমাদের সার্চ করে টাকা নেয়। আমরা ভ্যানচালকেরা গরিব মানুষ, দিনভর কামাই করা টাকা তারা ছিনিয়ে নেয়। পুলিশের কোনো ব্যবস্থা দেখি না।’

আবু সিদ্দিক নামের আরও একজন বলেন, ‘কোনাবাড়ী আর বড়ধুল এলাকায় আগেও ডাকাতি হতো, এখনো হচ্ছে। টাকাপয়সা ছিনতাই হয়। রাত ৭টা-৮টার পর আমরা এই রাস্তা ব্যবহার করি না। ঈদের সময় পুলিশ থাকে, পরে আর দেখা যায় না।’

কয়েকজন ভ্যানচালক বলেন, ‘মাগরিবের পর আমরা বের হই না। দিনে যে টাকা কামাই করি, সেটা রাত হলে ছিনতাই হয়ে যায়। আবার অস্ত্রও দেখায়।’ তাঁরা বলেন, পুলিশ রাস্তার ওপর থাকে, কিন্তু ভেতরে কী হয়, তা তারা খোঁজ নেয় না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো। কামারখন্দ আগে চুরি-ছিনতাই অধ্যুষিত এলাকা ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আমরা ইতিমধ্যে দুটি টিম দিয়েছি। আমাদের কাছে অভিযোগও তেমন আসে না।’

সম্প্রতি মহাসড়কে ডাকাতির ভিডিওর ভাইরালের বিষয়ে যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। তবে কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আমরা মানুষের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় সব সময় কাজ করছি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রেপ্তার অভিযান চলমান আছে। আর যমুনা সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল (সিরাজগঞ্জ রোর্ড) পর্যন্ত চারটি টিম টহল দেয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রতি রাতে সাপ হয়ে দংশন করেন স্ত্রী, প্রশাসনে অভিযোগ স্বামীর

চমকে দিয়ে বিসিবির সহসভাপতি হওয়া কে এই শাখাওয়াত

বিসিবির পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

আওয়ামী লীগ নেতার হিমাগারে মেডিকেল শিক্ষার্থীকে ‘হাতুড়িপেটা’ ও দুই বোনকে ‘সেফটি পিন ফুটিয়ে’ নির্যাতন

ইসির চিঠির জবাবে শাপলা প্রতীক চেয়ে ৭টি নমুনা পাঠাল এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত