বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
মৃত্যুর পর নিজের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন না করার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন দবিরুল ইসলাম নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক বরাবরে এ আবেদন করেছেন।
জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদনটি পাওয়ার বিষয়টি জানান দপ্তরে কর্মরত অফিস সহকারী মো. আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিঠিটা আমি পড়েছি। সকলেই সম্মান চান, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম সম্মানটা পাওয়ার পরও নিতে চান না। বিষয়টি আমার কাছেও অবাক লেগেছে। এর আগেও একবার এমন চিঠি দপ্তরে জমা দিতে এসেছিলেন তিনি।’
তরে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করি। তা ছাড়া আবেদনটি তিনি (বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম) হয়তো দপ্তরে এসে দিয়ে গেছেন। আমি এখনো দেখিনি। তবে কেন তিনি এমনটা চাচ্ছেন, সরাসরি আসলে আমি জানার চেষ্টা করব। এর বাইরে এটি নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলামের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ছোট পলাশবাড়ী গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত সফিজ উদ্দীনের ছেলে। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর-৮৯৭, এফ এফ নম্বর-২০৭৭, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-০৩১০০৩০০৬০।
মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল তাঁর আবেদনপত্রে লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার বহর দেখে চেতন মুক্তিযোদ্ধারা দুঃখিত, ব্যথিত, লজ্জিত ও অপমানিত। মৃত্যুর পর আর অপমানিত হইতে চাই না। আমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করবেন না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে স্বাধীন করতে আমরা জীবন বাজি রেখেছিলাম। দেশ স্বাধীনের পর আমাদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান দেওয়া হচ্ছে এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে। এটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। অথচ গত কয়েক বছরে মুক্তিযুদ্ধ না করেও অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সম্মানের সাথে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে।’
দবিরুল আরও বলেন, ‘যুদ্ধ করে আমরা যে সম্মানটা পাচ্ছি, যুদ্ধ না করেও তাঁরা সেই সম্মানে সম্মানিত। তাই আমি মনে করি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার জন্য এটা অপমান। তাই আমি ডিসি বরাবরে আবেদন করেছি, আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত না করা হয়।’
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানী পাওয়ার টাকা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার কথা বলে বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সম্মানীর টাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দেব এবং মরণোত্তর দেহ প্রদান করব।’
এর আগে ১৭ ও ১৮ মার্চ তিনি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তাঁর দপ্তরে একই আবেদন প্রদানের চেষ্টা করেছিলেন। ইউএনও এবং তাঁর দপ্তরের কেউই আবেদনটি গ্রহণ না করায় তিনি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে গিয়ে এ আবেদন জমা দিয়েছেন বলেও জানান।
তবে এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। দপ্তরে বিভিন্ন আবেদন যেখানে জমা হয়, সেখানে খোঁজ নিতে হবে।’
এদিকে এ বিষয়ে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নীলকান্ত সিংহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা সবারই এমন। তিনি মনের দুঃখে এমনটা করেছেন। দবিরুল ইসলাম একজন প্রতিবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর মতো সবাই হলে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা কখনো স্বীকৃতি পেত না।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলামকে। কয়েক বছর আগে নিজেই বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ সব কোটা বাতিল করে মেধার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ আলোচনাতেও আসেন তিনি।
আরও খবর পড়ুন:
মৃত্যুর পর নিজের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন না করার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন দবিরুল ইসলাম নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক বরাবরে এ আবেদন করেছেন।
জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদনটি পাওয়ার বিষয়টি জানান দপ্তরে কর্মরত অফিস সহকারী মো. আলম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিঠিটা আমি পড়েছি। সকলেই সম্মান চান, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম সম্মানটা পাওয়ার পরও নিতে চান না। বিষয়টি আমার কাছেও অবাক লেগেছে। এর আগেও একবার এমন চিঠি দপ্তরে জমা দিতে এসেছিলেন তিনি।’
তরে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করি। তা ছাড়া আবেদনটি তিনি (বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম) হয়তো দপ্তরে এসে দিয়ে গেছেন। আমি এখনো দেখিনি। তবে কেন তিনি এমনটা চাচ্ছেন, সরাসরি আসলে আমি জানার চেষ্টা করব। এর বাইরে এটি নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলামের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ছোট পলাশবাড়ী গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত সফিজ উদ্দীনের ছেলে। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর-৮৯৭, এফ এফ নম্বর-২০৭৭, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-০৩১০০৩০০৬০।
মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল তাঁর আবেদনপত্রে লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার বহর দেখে চেতন মুক্তিযোদ্ধারা দুঃখিত, ব্যথিত, লজ্জিত ও অপমানিত। মৃত্যুর পর আর অপমানিত হইতে চাই না। আমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করবেন না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে স্বাধীন করতে আমরা জীবন বাজি রেখেছিলাম। দেশ স্বাধীনের পর আমাদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান দেওয়া হচ্ছে এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে। এটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। অথচ গত কয়েক বছরে মুক্তিযুদ্ধ না করেও অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সম্মানের সাথে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে।’
দবিরুল আরও বলেন, ‘যুদ্ধ করে আমরা যে সম্মানটা পাচ্ছি, যুদ্ধ না করেও তাঁরা সেই সম্মানে সম্মানিত। তাই আমি মনে করি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার জন্য এটা অপমান। তাই আমি ডিসি বরাবরে আবেদন করেছি, আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত না করা হয়।’
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানী পাওয়ার টাকা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার কথা বলে বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সম্মানীর টাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দেব এবং মরণোত্তর দেহ প্রদান করব।’
এর আগে ১৭ ও ১৮ মার্চ তিনি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তাঁর দপ্তরে একই আবেদন প্রদানের চেষ্টা করেছিলেন। ইউএনও এবং তাঁর দপ্তরের কেউই আবেদনটি গ্রহণ না করায় তিনি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে গিয়ে এ আবেদন জমা দিয়েছেন বলেও জানান।
তবে এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। দপ্তরে বিভিন্ন আবেদন যেখানে জমা হয়, সেখানে খোঁজ নিতে হবে।’
এদিকে এ বিষয়ে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নীলকান্ত সিংহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা সবারই এমন। তিনি মনের দুঃখে এমনটা করেছেন। দবিরুল ইসলাম একজন প্রতিবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর মতো সবাই হলে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা কখনো স্বীকৃতি পেত না।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলামকে। কয়েক বছর আগে নিজেই বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ সব কোটা বাতিল করে মেধার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ আলোচনাতেও আসেন তিনি।
আরও খবর পড়ুন:
বরিশাল নগরীতে যুবলীগ নেতার হয়ে জমি দখলচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত মহানগর বিএনপির দুই যুগ্ম আহ্বায়ককে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেওয়া শোকজে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী শোকজে স্বাক্ষর করেছেন।
৭ মিনিট আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সকল বিভাগের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা আগামীকাল স্থগিত করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষক চাইলে স্বতন্ত্রভাবে ক্লাস নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (১৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের...
২২ মিনিট আগেঢাকার মূল সড়কে কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না। রিকশা চলাচল করবে অভ্যন্তরের সড়কে। ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ডেসকোর সহায়তায় এসব রিকশার চার্জিং পয়েন্ট ও উৎপাদনের ওয়ার্কশপগুলো বন্ধ করা হবে বলে জানান ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
২৬ মিনিট আগেখুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হাসান মাহমুদ সাকিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমানকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত নোমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল...
২৮ মিনিট আগে