Ajker Patrika

মিরপুরে ডাকাতি

তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য—ডাকাতির সময় দুই কিশোরীকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩৫
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি

‘জিনসপত্র যা নিয়েছি, নিলাম; কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি করবা না, তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য।’ রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের একটি বাসায় ডাকাতি করে বের হয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দলের নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার বাসায় থাকা দুই কিশোরীকে এভাবে হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া হোসনে আরা চম্পা।

গত ২০ জুলাই বেলা ২টার দিকে পল্লবী থানার ডিওএইচএসের ৬ নম্বর অ্যাভিনিউর ১১ নম্বর ‘সাবের অ্যান্ড ডেইজি ড্রিম’ নামের বাড়ির ষষ্ঠ তলায় তাঁর ভাড়া ফ্ল্যাটে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাড়িটির মালিক অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাবের আলী। হোসনে আরা চম্পা চার মাস ধরে ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। তিনি ছাড়াও ফ্ল্যাটটিতে তাঁর ছেলে অহিদুল ইসলাম অহিদ (২৪), কিশোরী মেয়ে (১৭) ও কিশোরী গৃহকর্মী থাকে। ঘটনার দিন ২০ জুলাই দুপুরে হোসনে আরা চম্পা তাঁর অসুস্থ ছেলে অহিদুল ইসলাম অহিদকে নিয়ে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে ছিলেন। বাসায় ছিল তাঁর কিশোরী মেয়ে ও গৃহকর্মী।

সূত্রমতে, ঘটনার দিন বেলা ২টার দিকে বাড়ির সামনে একটি আকাশি রঙের প্রাইভেট কার এসে থামে। ডাকাত দলের সাত থেকে আটজন সদস্য সেখানে ছিলেন। বাড়ির প্রধান ফটকে নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী ও তাঁর স্ত্রী রেশমা বেগম কেউ না কেউ সারাক্ষণ থাকেন। সেদিন ফটকে ছিলেন রেশমা বেগম, আর বাড়ির ছাদে এসির মিস্ত্রিরা কাজ করায় সেখানে ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী।

রেশমা বেগম আজকের পত্রিকা বলেন, গেটটি খোলাই ছিল, কয়েকজন (পাঁচজন) দ্রুত ওপরে চলে যান, তাঁরা কিছু জানতেই চাইলেন না।

নিরাপত্তাকর্মী মাসুম আলী বলেন, ‘বাড়ির বাইরে একটি গাড়ি থাকায় গেট খোলা ছিল। ডাকাতেরা কিছু না বলেই ওপরে চলে যায়। আমি ছাদে ছিলাম, ছাদ থেকে কিছুক্ষণ পর নিচে নেমে স্ত্রীর কাছে জানতে পারি, ওপরে পাঁচজন লোক গিয়েছে, আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই, গিয়ে দেখতে পাই, ভাড়াটিয়ার মেয়ে ও গৃহকর্মী কাঁপছে আর কান্না করছে। তারা জানায়, সব নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন।’

তিনি সেদিন পুরো ফ্ল্যাটে তছনছ অবস্থায় দেখতে পেয়ে দৌড়ে নিচে নামেন। সবাইকে ঘটনাটি বলেন। তবে অনেকেই ভেবেছিলেন এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তল্লাশি। মাত্র ১৫ মিনিটে ডাকাতি শেষ করে চলে যায় ডাকাতেরা।

এদিকে ডাকাতেরা ডাকাতি করে চলে যাওয়ার সময় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে হোসনে আরা চম্পাকে ফোন করে বলা হয়, ‘আপনি কোথায় আছেন? আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় আসেন, আমরা সরকারি লোক। আপনার বাসা ডিজিএফআই ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তল্লাশি করবে।’ এই বলে ফোনটি কেটে দেন।

হোসনে আরা চম্পা পরে ওই নম্বরে আবার কল দেন। তিনি জানতে চান, কোনো সার্চ ওয়ারেন্ট আছে কি না, অপরিচিত ব্যক্তি বলেন, বাসায় এলেই জানতে পারবেন।

বিষয়টি হোসনে আরা চম্পার সন্দেহ হলে তিনি মোবাইল নম্বরটি ডিওএইচএসের সেনা কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেন। পাশাপাশি ধানমন্ডি থেকে তিনি বাসায় আসেন। বাসায় এসে দেখতে পান, তাঁর পুরো ঘর এলোমেলো। ঘর থেকে গয়না, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, প্রসাধনীসহ দামি সব জিনিস নিয়ে গেছে।

হোসনে আরা চম্পার কাছ থেকে খবর পেয়ে ডিওএইচএসের নিরাপত্তায় থাকা সেনাসদস্যরা প্রাইভেট কারসহ চারজনকে আটক করেন। অন্যরা পালিয়ে যান। আটক ব্যক্তিদের পরে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় হোসনে আরা চম্পা বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন।

সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার, সাবেক করপোরাল মুকুল হোসেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হারুন অর রশীদ ওরফে রাকিব হাওলাদার ও প্রাইভেট কারের চালক মোন্তাছির আহম্মেদ মাসুমকে। বর্তমানে সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা ছাড়াও এই চক্রের আরও পলাতক দুজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাঁরাও একটি বাহিনীর সাবেক সদস্য। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্লবী থানার এসআই মাসুদুর রহমান।

হারুনের বিরুদ্ধে মাদক ও চুরি-ডাকাতির তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া অন্য সদস্যরাও একাধিক ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ি থেকে ইয়াবাও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডাকাত দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট (অব.) মোহাম্মদ ফিরজো ইফতেখার। সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করেন সাবেক করপোরাল মুকুল হোসেন। তাঁদের ডাকাতির জন্য বাড়ি ঠিক করে দিতেন রাকিব হাওলাদার। এরপর দলের সদস্যদের নিয়ে ফিরজো ইফতেখার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তল্লাশির নামে বাড়িতে গিয়ে ডাকাতি করতেন। দলটিতে অবসর ও চাকরিচ্যুত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।

সোর্স রাকিব হাওলাদারের সঙ্গে হোসনে আরা চম্পার ছেলে অহিদের সঙ্গে মিরপুর ১০ নম্বরে পরিচয় হয়। এরপর একদিন তিনি (রাকিব) বাসার নিচে এসেছিলেন। বাসার পুরো তথ্য তাঁর কাছে ছিল। এর কয়েক মাস পর তাঁরা ডাকাতি করতে আসেন। ডাকাতির সময় চক্রটি দুই কিশোরীকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছবিও তোলে।

হোসনে আরা চম্পা ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ডাকাতেরা ফ্ল্যাটে কলিং বেল দেয়, গৃহকর্মী দরজা খুলে বলতে চেয়েছিল, কেউ নেই বাসায়। এর মধ্যেই ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা গৃহকর্মী ও তাঁর মেয়েকে একটি কক্ষে যেতে বলে, সব চাবি দিতে বলে। এরপর তারা লুটতরাজ চালায়। তারা অস্ত্র ও মাদক খোঁজার কথা বলে সব নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় দুই মেয়েকে, কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি না করতে হুমকি দিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইফতেখার বলেন, ‘যা নিলাম নিয়েছি, তোমাদের যে কোনো ক্ষতি করিনি, তা-ই ভাগ্য।’

সেদিনের ঘটনা নিয়ে বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাবের আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাটি যাঁরা ঘটিয়েছেন, তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটা কেবল ডাকাতির ঘটনাই।

মামলা তদন্তের বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে কিছু মালামাল উদ্ধার হয়েছে, আরও কিছু উদ্ধারে অন্যদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্যটক বাড়ছে স্টিমার পিএস মাহসুদে, আশাবাদী বিআইডব্লিউটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
দ্বিতীয় ট্রিপে স্টিমার পিএস মাহসুদ বরিশাল পৌঁছার পর নামছেন পর্যটকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দ্বিতীয় ট্রিপে স্টিমার পিএস মাহসুদ বরিশাল পৌঁছার পর নামছেন পর্যটকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দ্বিতীয় ট্রিপে পর্যটক বেড়েছে স্টিমার পিএস মাহসুদের। আজ শুক্রবার সকালে ৭৩ জন পর্যটক নিয়ে বরিশালে পৌঁছায় মাহসুদ। এতে আশাবাদী হয়ে উঠছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। স্টিমার সার্ভিসে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তারা।

গত ২৮ নভেম্বর থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে সপ্তাহে এক দিন করে ট্যুরিস্ট সার্ভিস দিচ্ছে ঐতিহ্যের প্যাডেলচালিত স্টিমার পিএস মাহসুদ। প্রথম যাত্রায় ২৩ জন পর্যটক হওয়ায় এই সার্ভিস টিকিয়ে রাখা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছিল।

স্টিমার মাহসুদের ক্লার্ক নিপু জানান, আজ ঢাকা থেকে বরিশাল ৭৩ জন যাত্রী নিয়ে রওনা করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে চাঁদপুরে কিছু যাত্রী নেমেছেন। এই ট্রিপে প্রথম শ্রেণির কেবিনে ২০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনে ১৬ জন এবং চেয়ার সিটে ৩৭ জন এসেছেন।

আজ ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আব্দুর রহমান বলেন, ভ্রমণের জন্য নিঃসন্দেহে মাহসুদের সার্ভিস ভালো।

স্টিমার মাহসুদের মাস্টার সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, আগের তুলনায় পর্যটক বাড়া শুরু করেছে। তাঁরা আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যার পর বরিশালে পৌঁছেছেন।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ নভেম্বর ঢাকা থেকে বরিশালে আসার কথা ছিল স্টিমার মাহসুদের। কিন্তু পর্যটক না হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। এরপর ২৮ নভেম্বর মাত্র ২৩ জন পর্যটক নিয়ে বরিশালে পৌঁছায় মাহসুদ। ওই যাত্রায় বরিশাল কিংবা চাঁদপুর থেকে কোনো পর্যটক ওঠেননি। এতে এই ট্যুরিস্ট সার্ভিস নিয়ে হতাশ ছিল বিআইডব্লিউটিসি।

স্টিমার পিএস মাহসুদের ড্রাইভার মো. সোহাগ বলেন, প্রতিটি ট্রিপে বরিশাল থেকে ঢাকা ১০ ঘণ্টা এবং ঢাকা থেকে বরিশাল ৯ ঘণ্টা সময় লেগেছে। তিনি বলেন, আপডাউনে (আসা ও যাওয়া) পিএস মাহসুদের জন্য জ্বালানি তেল দরকার হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২০০ লিটার। এতে জেনারেটর, মেইন ইঞ্জিনসহ সব কার্যক্রম সচল ছিল। প্রতি লিটার ডিজেল ১০০ টাকা দরে আপডাউনে মাহসুদের তেল খরচ হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার। তাঁর মতে, প্রথম ট্রিপে ১ লাখ টাকার কম ভাড়া পেয়েছে স্টিমার মাহসুদ। বাকিটা ভর্তুকি দিতে হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির বরিশালের ব্যবস্থাপক মো. জসীম উদ্দিন জানান, দ্বিতীয় ট্রিপে পিএস মাহসুদ ঢাকা থেকে বরিশালে ৭৩ পর্যটক নিয়ে আসে। প্রথমবার মাত্র ২৩ পর্যটক হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে স্টিমারে পর্যটক বাড়বে।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা-বরিশাল রুটে বিআইডব্লিউটিসির প্যাডেলচালিত স্টিমার সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। তিন বছর পর সেই স্টিমার যাত্রী পরিবহনে ফেরাতে কয়েক মাস ধরে তৎপরতা চলে। শত বছরের পুরোনো জাহাজটি মেরামতে ব্যয় করা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীতাকুণ্ডে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) সীতাকুণ্ড
কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো সরঞ্জাম আজ দুপুরে পুড়িয়ে দেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো সরঞ্জাম আজ দুপুরে পুড়িয়ে দেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর (দুপুরে) কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো এসব সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেন তাঁরা।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছিল। ফলে উপকূল সুরক্ষায় নির্মিত বেড়িবাঁধ ও চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে এলাকাবাসী একত্র হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত খননযন্ত্রসহ সব সরঞ্জাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তবে এ সময় বালু উত্তোলনে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাগর থেকে একটি চক্র অবৈধভাবে খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাইরে বিক্রি করছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙছে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ।

স্থানীয় জেলে সন্তোষ কুমার জলদাস বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে সাগরের গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে মাছ ধরার নৌকা রাখার জায়গাগুলো বিলীন হচ্ছে।

কুমিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ পুড়িয়ে দেওয়ার খবর জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে বালু উত্তোলনে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে বালু উত্তোলনে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত বুধবার উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় একটি শিপইয়ার্ডে অবৈধভাবে সাগর থেকে বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া দেয় এলাকাবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুধু সরকারি খাতের ভর্তুকি দিয়ে কারখানা চলতে পারে না: শিল্প উপদেষ্টা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় বন্ধ করে দেওয়া কলকারখানাগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ দরকার। শুধু সরকারি খাতের ভর্তুকি দিয়ে কারখানা চলতে পারে না। এ জন্য বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কেইন ক্যারিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। উদ্বোধন উপলক্ষে মিলের কেইন ক্যারিয়ার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর।

শিল্প উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের যে অবস্থা করে গেছে, তা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে অনেকটা সময় লেগেছে। নতুন করে শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য বিডা ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। হয়তো আমরা থাকব না, কিন্তু আমাদের কাজের ফলাফলে আপনারা নিশ্চয়ই খুশি হবেন।’

আদিলুর রহমান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, ‘চিনিকলটির আধুনিকায়ন এবং আখমাড়াই ও চিনি উৎপাদন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের বিএমআরআই প্রকল্পটি (আধুনিকায়ন) অচিরেই কার্যক্রম শুরু করবে। আমি আশা করেছিলাম, আজই বিএমআরআই চালু হবে। পরে জানলাম, কিছু কাজ বাকি আছে। তবে কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছে, অচিরেই এটি কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হবে। খুব দ্রুত আমরা প্রকল্পটি চালু করব।’

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আখচাষি, কৃষক ও অস্থায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান এবং উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে বাস্তবসম্মত পাঁচ বছরের রোডম্যাপ হাতে নিয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান।

২০২৫-২৬ মৌসুমে মাড়াই দিবস ধরা হয়েছে ৬৯ দিন। এই মৌসুমে ৭৬ হাজার টন আখ মাড়াই করার মাধ্যমে ৪ হাজার ২৫৬ টন চিনি উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৫.০৬ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেশবপুরে অস্ত্র-মাদকসহ স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের চার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
কেশবপুরে পিস্তল, গুলি, রামদা, চাকু, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেশবপুরে পিস্তল, গুলি, রামদা, চাকু, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তল, গুলি, রামদা, চাকু, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, উপজেলার ভোগতী ও আলতাপোল এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনীর পৃথক অভিযানে পৌরসভার ভোগতী এলাকার আলমগীর হোসেনের (৪০) কাছ থেকে একটি পিস্তল, পাঁচটি গুলি, একটি ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ভোগতী এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন পলাশ (৩৫) ও মূলগ্রামের রাসেলের (২৩) কাছ থেকে ৩০ পিস ইয়াবা, একটি রামদা, একটি চাকু, একটি চায়নিজ কুড়াল, একটি বার্মিজ চাকু, দুটি ইলেকট্রিক শক মেশিন ও একটি চাপাতি এবং আলতাপোল এলাকার উজ্জ্বল বিশ্বাসের (৩৯) কাছ থেকে একটি রামদা, তিনটি হাঁসুয়া ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেন পলাশ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এবং আলমগীর হোসেন ও উজ্জ্বল বিশ্বাস পৌর যুবদল থেকে বহিষ্কৃত।

কেশবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার ওই চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদা দুটি মামলা হয়। আজ সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত