Ajker Patrika

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ৫৪
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

মোটরসাইকেলের ধাক্কাকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মারধরে পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সোয়ানের (৪৪) মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দুসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সদর উপজেলার খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দুসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিহত শরিফুল ইসলাম সোয়ান শহরের ঘোষপাড়ার আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। একই সঙ্গে তিনি জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য। অন্যদিকে গ্রেপ্তার রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন নয়নের অনুসারী। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার খেজুরেরতল (চৌধুরীপাড়া) গ্রামের বিপুল চৌধুরীর ছেলে। অপরজন কুড়িগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক মিয়া।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা সোয়ানের মৃত্যুর খবরে ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন তাঁর বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা। তাঁরা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিহত সোয়ানের বন্ধু রেদওয়ান মাহমুদ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, তিনিসহ আওয়ামী লীগ নেতা সোয়ান ত্রিমোহনী বাজার এলাকা থেকে প্রাইভেট কারে করে শহরের দিকে আসছিলেন। তিনি কারের পেছনের ছিটে বসে ছিলেন। 

এ সময় খলিলগঞ্জ বাজার এলাকার অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে তিন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বহনকারী একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রলীগের দুই কর্মী ছিটকে পড়ে আহত হলে সোয়ান ও তাঁর বন্ধু আহতদের অটোরিকশায় হাসপাতালে পাঠান। 

খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বিন্দু ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়িসহ সোয়ান ও তাঁর বন্ধুদের আটক করেন। সোয়ান নিজের পরিচয় দিলে বিন্দু ও তাঁর কর্মীরা সোয়ানকে মারধর করেন। এ সময় সোয়ান ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

এ সময় বিন্দু নিজেই প্রাইভেট কার চালিয়ে সোয়ানকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর বিন্দু আবারও সোয়ানকে মারধর করেন বলে জানান তিনি। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সোয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জানতে কল দিলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বিন্দুর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর বরাত দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যক্তিগত কাজে আমি ঢাকায় রয়েছি। ঘটনা জেনেছি। বিন্দুর সঙ্গে একবার কথা হয়েছে। সে নিজের দায় অস্বীকার করেছে। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পুলিশ তদন্ত করে সঠিক তথ্য উদ্‌ঘাটন করবে।’ 

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত থাকার প্রশ্নে সাদ্দাম বলেন, ‘ঘটনায় বিন্দু কিংবা ছাত্রলীগের অন্য কোনো নেতা-কর্মীর সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনানুগ ব্যবস্থাসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। যেই জড়িত হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত