Ajker Patrika

পানি কমলেও দুর্ভোগে তিস্তাপারের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৪৪
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সবশেষ আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুরের কাউনিয়ায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

অপর দিকে একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা গতকাল রোববার রাতে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

রংপুর

রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে কমছে। নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা তিস্তার তীরবর্তী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া উপজেলার রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে ২৯ দশমিক ৪৪ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমে ভাটির দিকে নেমে যাওয়া কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোরের পর থেকে পানি বাড়ছে নদীতে। ইতিমধ্যে তাঁর ইউনিয়নের হরিচরণশর্মা, চরগনাই, হয়বৎখাঁ গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ক্রমে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুপুরের দিকে তীরবর্তী তিনটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চরগনাই গ্রামের আব্দুল বাতেন বলেন, ‘নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। পানিবন্দী হওয়ার আতঙ্কে রয়েছি।’ তিনিসহ অনেকেই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

চর হয়বৎখাঁ গ্রামের সোবহান আলী বলেন, ‘গভীর রাত থেকে পানি যে হারে বাড়তেছে, তাতে পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে গেলে গবাদিপশু আর বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। তাই সকালের দিকে গবাদিপশু আর বাচ্চাদের উঁচু স্থানে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মহিদুল হক বলেন, ‘আজ তিস্তা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আমরা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করে প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

লালমনিরহাট

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে টানা ১২ ঘণ্টা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তাপাড়ের লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়েছে পড়ে। যার মুক্তি মেলে টানা ২৪ ঘণ্টা পরে। পানি কমে গেলেও বেড়ে যায় দুর্ভোগ।

বন্যার পানির চাপে বেশ কয়েকটি সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। হাতীবান্ধার দোয়ানী গড্ডিমারী ও পাটগ্রামের দহগ্রাম সড়ক ভেঙে যায়। স্থানীয় জনতা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বালুর বস্তা ফেলে সড়কগুলো রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করেন।

গেল ২৪ ঘণ্টায় পানিবন্দী পরিবারগুলো সীমাহীন কষ্টে পড়ে। নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষের। বিশেষ করে, শিশু, বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বড্ড বিপাকে পড়েন বন্যাকবলিতরা। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। গবাদিপশু-পাখি নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছেন খামারিরা। কেউ কেউ এসব পশুকে পাশে সড়কে বা উঁচু এলাকায় তাঁবুর নিচে রেখেছেন। উঁচু স্থানে মাচা বানিয়ে কেউ কেউ সারা দিনের রান্না একবারে সেরে নিয়েছেন। টিউবয়েল ও টয়লেট ডুবে যাওয়ায় শৌচকাজে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসব এলাকার নারীরা। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, মধ্যবয়সী আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত।

উজানের ঢল কমে যাওয়ায় আজ পানি বিপৎসীমার নিচে নামলে মুক্তি পেতে থাকে পানিবন্দী পরিবারগুলো। বন্যাদুর্গত এলাকার প্রতিটি বাড়িঘরে ডুকে পড়েছে আবর্জনা, কচরিপানা আর পোকামাকড়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক পরিবারের আসবাবপত্র ভিজে গেছে বন্যার পানিতে।

গৃহবধূ সাহানা বেগম বলেন, ‘ঘরের পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু মেরামত না করে ঘরের ভেতরে থাকা দুষ্কর। আবর্জনা, কচুরিপানা ও কাদায় একাকার। পোকামাকড়ের আতঙ্কে রয়েছি। আজ পানি না থাকলেও নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। সন্তানদের নিয়ে গতকাল রাত বসে থেকে কাটিয়েছি। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। আমরা তিস্তা নদীর স্থায়ী বাঁধ চাই।’

কৃষক খলিল মিয়া বলেন, ‘মধ্যবয়সী আমন ধানের খেতে টানা প্রায় ৩০ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে ডুবে আছে। জানি না খেতের কী হলো। আবাদ নষ্ট হলে তো না খেয়ে মরতে হবে।’

মৎস্যচাষি ডলার বলেন, ‘পুকুরের চারদিকে নেট জাল দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারিনি। বন্যার স্রোতে সব ভেসে গেছে। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শাইখুল আরেফিন বলেন, মধ্যবয়সী আমন খেতে দুই-তিন দিন ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। অস্থায়ী বন্যা আমনে ক্ষতি নয়, বরং উপকার। তবে পানি দ্রুত নেমে না গেলে ক্ষতি হতে পারে। পানি কমে গেছে, এখন আমনে তেমন ক্ষতি হবে না। পানি কমে গেলে খেতে জমে থাকা কচুরিপানাসহ আবর্জনা সরিয়ে দিতে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, রাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যার সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্য কমে গেছে। ফলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের জন্য জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ঢেউটিন মজুত রয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে তা বিতরণ করব।’

পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাটগ্রাম

উজানে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল রোববার বেলা ২টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায় এবং তিস্তা নদীরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানি হু হু করে দহগ্রামে ঢুকে বন্যা দেখা দেয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।

এ সময় পানির তোড়ে আঞ্চলিক পাকা রাস্তা প্রায় ৭ কিলোমিটার, একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট ভেঙে যায়। প্রায় ১০ হেক্টর আমন ধান, বাদামসহ অন্যান্য সবজি খেত পানিতে তলিয়ে যায় এবং চাষাবাদের জমি ভেঙে আবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

আজ বিকেলে দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তার পানিতে এই ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা চরাঞ্চলসহ কলোনিপাড়া, মুন্সিপাড়া, ক্লিনিকপাড়া, কাদেরের চর, মহিমপাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া, গুচ্ছগ্রাম, বড়বাড়ি, নতুনহাট, হাঁড়িপাড়া এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে কলোনিপাড়া, মহিমপাড়া ও স্বাধীন বাংলা চত্বর এলাকার পাকা সড়ক ভেঙে যায়।

দহগ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টিয়ারপাড় এলাকার সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়ক, কলোনিপাড়ার দুটি কালভার্ট এবং ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গেরবাড়ী হতে নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে গেছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে একাকার হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষের চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব এলাকার পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

দহগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনিপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘প্রতিবছর ভারত পানি ছেড়ে দেয়, এতে আমাদের এই রাস্তা ভেঙে যায়। জমি-জায়গা, রাস্তাঘাট নষ্ট হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা চালু করলে আমাদের উপকার হবে, না হলে আমাদের ক্ষতি হতেই থাকবে।’

এ বিষয়ে ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু দেখেছি। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সংস্কার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জনদুর্ভোগ কমে যাবে।’

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারী

নীলফামারীতে তিস্তার রুদ্রমূর্তি ৯ ঘণ্টা পর শান্ত হয়েছে। আজ বেলা ৩টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ ও সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে গতকাল রাত ১১টায় ওই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাত ১২টার পর কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে এসব গ্রামের অন্তত ১০ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আজ পানি কমায় স্বস্তি ফেরে এসব মানুষের মধ্যে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘ওই রাতে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আজ পানি নেমে গেলেও ইউনিয়নের ১ হাজার ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চরের খেতে থাকা আধা পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নের খোকার চরে তিন স্থানে এবং যৌথ বাঁধের কাছে তিন স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে প্রবল বেগে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। এতে ইউনিয়নের সাড়ে আট শ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। সকালে পানি নেমে গেলেও পরিবারগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে। পানির সঙ্গে আসা বালু ও পলি পড়ে এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

একই উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামের স্কুলশিক্ষক বিপুল চন্দ্র রায় বলেন, রাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষের। এ সময় তলিয়ে যায় এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন খেত। আজ পানি কমায় এসব খেত জেগে উঠলেও বানের পানিতে ভেসে আসা বালি ও পলি পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, তিস্তার ক্ষণিকের ওই বন্যায় উপজেলার ৬০ হেক্টর আমন খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়। দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গতকাল রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর পর থেকে পানি কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৬টায় ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় আরও কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ২০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলা কালিগঞ্জ নামের স্থানে জিরো পয়েন্টে নদীর ডান তীর বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলে রাতেই বাঁধটি রক্ষা করতে সক্ষম হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কমতে শুরু করে। আজ সকাল থেকে পানি কমে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট (৪৪) খুলে রাখা হয়েছে।

অমিতাভ চৌধুরী আরও বলেন, তিস্তার জিরো পয়েন্টের কাছে কালিগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে বাঁশের পাইলিং ও বালুর বস্তা দিয়ে সেটি ঠেকানো গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়ির পাশে গর্তের পানিতে ডুবে প্রাণ গেল দুই শিশুর

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
এআই দিয়ে বানানো প্রতীকী ছবি
এআই দিয়ে বানানো প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বাড়ির পাশে গর্তে জমা থাকা পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত শিশুরা হলো মোহাম্মদ নোমান (৫) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৫)। নোমান ওই গ্রামের আব্দুল মাবুদের ছেলে ও জান্নাতুল বেলাল উদ্দিনের মেয়ে।

এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সাহারবিল ইউপি সদস্য আজিজুল হক বলেন, আব্দুল মাবুদ কিছুদিন আগে বাড়ির পাশ থেকে গভীর গর্ত খুঁড়ে মাটি নেন। পরে গর্তে পানি জমে থাকে। আজ দুপুরে শিশু নোমান ও জান্নাতুল উঠানে খেলা করার সময় গর্তের পানিতে পড়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবরটি শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মৃত দুই শিশুর লাশ নিজেদের বাড়িতে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলি: ফয়সালকে ভারতে পালাতে সহায়তাকারী দুজন ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সিবিয়ন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। ঢাকার সিএমএম আদালত ভবনে। ছবি: সংগৃহীত
সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সিবিয়ন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। ঢাকার সিএমএম আদালত ভবনে। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদকে অবৈধ পথে ভারতে পালাতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজনকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।

দুই আদিবাসী হলেন সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে দুইজনকে আটক করে দিবি পুলিশ। আজ এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

এর আগে বুধবার মাইক্রো বাসে করে ফয়সালকে পালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার নুরুজ্জামানকে তিন দিন ও মঙ্গলবার ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির ওরফে দাঁতভাঙা কবিরকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ মামলায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু এবং বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে গ্রেপ্তারের পর গত সোমবার রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তার আগের দিন একটি মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। বুধবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল করে আসা দুজনের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত রোববার রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।

উল্লেখ্য, এ মামলায় ফয়সালের মা-বাবা গত বুধবার আদালতে জবানবন্দি দিয়ে ফয়সালকে পালাতে সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহীর পৈতৃক বসতভিটা সংরক্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহীর পৈতৃক বসতভিটা সংরক্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহীর পৈতৃক বসতভিটা সংরক্ষণ ও ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহীর সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঋত্বিক কুমার ঘটক ক্ষণজন্মা বাঙালি চলচ্চিত্রকারদের অন্যতম, যাঁর সৃষ্টিশীল হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মানজনক অবস্থান লাভ করেছে। এমন একজন মহান চলচ্চিত্রকারের স্মৃতি বহনকারী বসতভিটা রাজশাহী শহরের মিঞাপাড়ায় অবস্থিত হলেও তা সংরক্ষণের পরিবর্তে ধ্বংসের মুখে। এটি জাতির জন্য লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।

বক্তারা জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঋত্বিক ঘটকের ওই বসতভিটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা ও আইসিটি) নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিষয়টির চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বসতভিটাটি আগের অবস্থায় সংরক্ষিত থাকবে। অথচ সেই আশ্বাস উপেক্ষা করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ পুনরায় সেখানে থাকা ঋত্বিক ঘটকের শেষ স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা চালায়।

বক্তারা জানান, বসতভিটার ঐতিহ্যবাহী ইটগুলো শহরের অদূরে খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় শাহ মখদুম নার্সিং কলেজের পাশে একটি পুকুর ভরাটের কাজে ফেলে দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, একই সঙ্গে এখানে দুটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। একদিকে ঐতিহ্য ধ্বংস, অন্যদিকে পরিবেশবিরোধীভাবে পুকুর ভরাট। তাঁরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধনে রাজশাহীর চলচ্চিত্র সংসদকর্মী এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও যুব সংগঠনের সদস্যরা বক্তব্য দেন। পরে পাঁচ দফা দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি ও প্রস্তাবনা রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো হয়। একই দাবিগুলো উল্লেখ করে আরেকটি স্মারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কাছেও দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্মারকলিপির অনুলিপি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।

এর আগে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির নির্বাহী সদস্য মো. আতিকুর রহমান আতিকের সঞ্চালনায় ও সভাপতি আহসান কবীর লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হোসেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহীর সভাপতি উপেন রবিদাস প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৬০০ বাউন্ডলি, গ্রেপ্তার ৩

কক্সবাজার প্রতিনিধিনাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
জব্দ বাউন্ডলিসহ গ্রেপ্তারকৃতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ বাউন্ডলিসহ গ্রেপ্তারকৃতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের রামুতে একটি মিনিট্রাকে তল্লাশি করে পুলিশ ১ হাজার ৬০০টি বাউন্ডলি (সামরিক পোশাকে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের ম্যাগাজিন রাখার বেল্ট) উদ্ধার করেছে। এসব বাউন্ডলি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কম্বনিয়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. শাহজাহান (২৫), একই ইউনিয়নের আশারতলী এলাকার মো. বদিউজ্জামানের ছেলে মো. ইলিয়াছ (১৯) ও ঘিলাতলী এলাকার এম এ সামাদের ছেলে আতিকুর রহমান (২৫)।

ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা-বাগান এলাকা দিয়ে যানবাহনে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহের জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম পাচার করা হবে বলে খবর পায় পুলিশ। পরে চা-বাগান এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর সামনে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কে পুলিশের একটি অস্থায়ী তল্লাশিচৌকি বসানো হয়। একপর্যায়ে চট্টগ্রাম দিক থেকে আসা নাইক্ষ্যংছড়িগামী একটি মিনিট্রাক সেখানে পৌঁছালে থামার সংকেত দেয় পুলিশ। এ সময় গাড়িতে থাকা সন্দেহজনক তিনজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালান। ধাওয়া দিয়ে পুলিশ তাঁদের আটক করতে সক্ষম হয়। পরে মিনিট্রাকটি তল্লাশি করে প্লাস্টিকের সাদা চটের ৩২টি ছোট বস্তা পাওয়া যায়। বস্তাগুলো খুলে ভারী আগ্নেয়াস্ত্রের ম্যাগাজিন রাখার ১ হাজার ৬০০টি বাউন্ডলি পাওয়া যায়। মিনিট্রাকটি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ওসি বলেন, উদ্ধার করা ম্যাগাজিন রাখার বাউন্ডলিগুলো নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কাছে পৌঁছে দিতে নিয়ে যাচ্ছিল। আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে রামু থানায় মামলা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত