Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দশ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ

প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দশ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তিলডাঙ্গী গ্রামে স্থানীয় নর্থ এগস্ লিমিটেড নামে একটি পোলট্রি খামার থেকে ছড়িয়ে পড়া বর্জ্যে আশপাশের এলাকা দূষিত হয়ে পড়েছে। ফার্মটির মৃত মুরগি গুলিকে বাইরে যত্রতত্র ভাবে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে নর্থ এগস্ লিমিটেড নামে একটি পোলট্রি খামার স্থাপন হওয়ার পর এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বেওয়ারিশ কুকুরগুলো ওই মুরগি গুলো খেতে ফার্মের চার-পাশে ঘোরাঘুরি করে। যখন ফার্ম থেকে মৃত মুরগি না আসে তখনি এ কুকুরগুলো আশপাশের গ্রাম গুলোতে ঢুকে পড়ে। গরু-ছাগল ও মানুষের ওপর আক্রমণ করে। একাধিক ব্যক্তির গৃহপালিত গরু ও ছাগল কুকুরের আক্রমণে শিকার হয়ে কিছুদিন পর বিষক্রিয়া হয়ে একের পর এক মারা যাচ্ছে। কুকুরের আতঙ্কে পথচারীরাও নির্ভয়ে চলাচল করতে পারছে না। 

পাশের গ্রামের দশভাই পাড়ার মোমেনা খাতুন জানান, তাঁর বৃদ্ধা বাবা ইউনুস আলী সাইকেল চালিয়ে স্থানীয় একটি বাজারে রওনা হচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একটি কুকুর এসে তাঁর পায়ে কামড় দেয়। বড় ধরনের ক্ষত তৈরি হয়। দীর্ঘদিন তিনি চলা ফেরা করতে পারেননি। পরে চিকিৎসা নিয়ে এখন কোন রকম ঘরের মধ্যে দিন কাটছে তাঁর। 

দৌলতপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শামসুল হক চৈতু বলেন, খামারের বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে তিলডাঙ্গী, বিলপাড়া, কুমিল্লাহাড়ী, ধনী পাড়া, মালিপাড়া, দশ ভাই পাড়া, মণ্ডল পাড়াসহ আশপাশের অন্তত দশটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ মশা-মাছি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ জীবন যাপন করছে। খামারের পচা পানি আর মুরগির বিষ্ঠায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারদিকে। প্রতিকার পেতে কয়েকবার খামার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাঁরা বারবার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু করেনি। 

বিহারি পাড়ার আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, নলকূপের পানিও পচা গন্ধ। এতে বিশুদ্ধ পানির অভাব ভুগছেন তাঁর পরিবারসহ আশপাশের এলাকার মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, শ্বাস কষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। এ অবস্থার হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে মশারির ভেতরে ঢুকে খাবার খাচ্ছে। 

গৌরীপুর গ্রামের মতিউর রহমান জানান, স্থানীয়দের নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। 

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মাহ্ফুজার রহমান সরকার বলেন, ওই ফার্মটি পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে গ্রাম গুলোতে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যাবে। 

এ ব্যাপারে নর্থ এগস্ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় বলাকা উদ্যান নামে একটি পিকনিক স্পট ওই খামারের নিকটে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ভিআইপি পিকনিকগুলো ওই জায়গাতে করতে হয়। আমরা নিজেরাও ওই স্পটে পিকনিক করতে পারি না। 

উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে আশ্বাস দিয়ে খামার কর্তৃপক্ষ জানান, বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তাঁরা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত