Ajker Patrika

তিস্তার পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দী ১০ চরের মানুষ

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৮: ৪৪
তিস্তার পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দী ১০ চরের মানুষ

তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকলেও আতঙ্কে রয়েছেন পাড়ের বাসিন্দারা। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলায় ১০টি চরের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে ফসলি জমি, গবাদি পশুসহ ঘরবাড়ির চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তিস্তার তীরবর্তী চরাঞ্চলের বাসিন্দারা।

আজ রোববার সকাল ৮টার দিকে তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২ দশমিক ৭২ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হলেও দুপুরের পর থেকে পানি প্রবাহ কিছুটা কমেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, টেপা খড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ি, চাপানি, ঝুনাগাছ ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। প্রায় ১০টি চর প্লাবিত হয়েছে। এতে পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। পানিবন্দী অনেক পরিবার বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। পানি বাড়ার কারণে ওই এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বদিউজ্জামান বলেন, ‘এরই মধ্যে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত বন্যায় তিস্তার করাল গ্রাসে আমার ভিটেমাটি, বাড়িঘর বিলীন হয়েছে। পানি যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে, ততই আমার বুকের কাঁপুনি বাড়ছে।’

কিসামত চরের বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি হুহু করে বাড়ছে। এতে চরের মানুষের চোখে ঘুম নেই। বসতভিটে, গবাদিপশু ও ফসলের খেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। এর আগে তিস্তার গ্রাসে ৮ বার আমার বাড়ি ভেঙে গেছে। আমার মতো এ এলাকার মজিদ, ইব্রাহিম, আয়নালসহ অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেওয়া সুমি আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমিয়েছিলাম। পরে পানির শো শো শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। জেগে দেখি ঘরের মেঝেতে কোমর পানি, আঙিনায় বুক বরাবর। এ সময় ছয় মাস বয়সী শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে কোনোরকমে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। সেই ভয়ে এখনো ঘুমাতে পারছি না।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে দুপুরের পর কিছুটা কমলেও পানি আবার বাড়তে পারে। এ জন্য বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে আমার ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছিল। এখনো ১৫০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। তাঁদের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, বন্যাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত