Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে ৫৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ১ মাস ধরে ওষুধের সংকট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওষুধ না পেয়ে রোগীরা খালি হাতেই ফিরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ওষুধ না পেয়ে রোগীরা খালি হাতেই ফিরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৫৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকে এক মাস ধরে ওষুধের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে এসব ক্লিনিকে গেলেও ওষুধ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। দরিদ্র রোগীরা বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে চড়া দামে ওষুধ কিনছে।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ঠাকুরগাঁওয়ে মোট ১৪৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। এসব ক্লিনিকে সর্দি-জ্বর, আমাশয়, ডায়রিয়া, মাথাব্যথাসহ সাধারণ রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সাধারণত বছরে তিন দফায় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তবে গত ডিসেম্বরের পর থেকে সদর উপজেলার ৫৯টি ক্লিনিকে কোনো ওষুধ আসেনি।

রোববার সকালে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আঙ্গরাই পুকুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, রোগীরা ওষুধ চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) অসহায়ভাবে না বলছেন। ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা প্রদীপ কুমার বর্মণ বলেন, ‘এই ক্লিনিকের আওতায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই ওষুধ ফুরিয়ে যায়। এখন টানা এক মাস ধরে কোনো ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না।’

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই ক্লিনিকে আসা ভারতী রানী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওষুধের জন্য আসলাম, কিছুই নাই। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।’

সদরের সিংগিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিস্থিতিও একই রকম। গ্রামের বাসিন্দা ৬০ বছরের জমেলা খাতুন বলেন, ‘সর্দি-জ্বরে অসুস্থ হয়ে ওষুধ নিতে আসলাম। কিন্তু এখানে কিছু নেই।’ ওই ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাইদুর রহমান জানান, ‘ওষুধ না থাকায় অনেক সময় রোগীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। তবু প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে থাকতে হয়।’

কিসমত দৌলতপুর ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রেহানা বেগম বলেন, ‘ওষুধ নাই, তাই বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। খরচ সামলানো মুশকিল হয়ে গেছে।’ ক্লিনিকের সিএইচসিপি রুবিনা খাতুন জানান, ‘বছরে তিনবার ওষুধ পাওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর এখনো একবারও পাইনি।’

গৌরীপুর পীরবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ছবি লাল ঘোষ বলেন, ‘একজন রোগীকে পুরো ওষুধ দেওয়া যায় না। এক-দুইটা ট্যাবলেট কেটে দিতে হয়।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার মো. সায়েদুজ্জামান বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সংকটের বিষয়টি গত ১০ আগস্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে চাহিদা বেশি থাকায় বিলম্ব হচ্ছে। আশা করি এ মাসের মধ্যেই নতুন সরবরাহ আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত