Ajker Patrika

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ 

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটকে রিকশায় যেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট। কিলো তিনেক এ পথের ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার সময় এ পথে একবার যেতেই সময় লাগছে অন্তত দেড় ঘণ্টা। একবার গন্তব্যে যেতেই ছয়গুণ বেশি সময় লাগার কারণে ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে তিন থেকে চারগুণ বেশি। অনেকে আবার এর চেয়েও বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।

আজ সোমবার সকাল থেকে রাবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ দিন চার শিফটে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। এই ইউনিটটিতে ১ হাজার ৫৯৪টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ হাজার ৮৫০ জন। এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছেন আবার ফিরেছেন। তাই শহরজুড়েই দেখা দেয় যানজট।

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামসরেজমিনে দেখা গেছে, ভর্তি পরীক্ষার প্রভাব পড়েছে পুরো শহরেই। নগরীর সাহেববাজার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়মুখী সব সড়কেই রিকশা-অটোরিকশার জট। এর মধ্যে নগরীর শিরোইল এলাকায় টার্মিনালের বাস সড়কে পার্কিং এবং ভদ্রা মোড়ে বাসে যাত্রী ওঠানামা করার কারণে এ দুই এলাকায় দুপাশে অসহনীয় যানজট লেগে থাকছে। শিরোইল ও ভদ্রা মোড় পার হতেই রিকশা-অটোরিকশার কমপক্ষে ৪০ মিনিট সময় লাগছে।

এরপর তালাইমারী মোড় থেকে গাড়ির চাকা যেন নড়েই না। তালাইমারী-অক্ট্রোয় মোড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটক পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা পেরোতেই আরও ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগছে। সাহেববাজার কিংবা রেলগেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে অন্তত দেড় ঘণ্টা লাগছে অতিরিক্ত রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের চাপের কারণে।

অসহনীয় এই যানজটের কারণে প্রচুর রিকশা-অটোরিকশা ঢুকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের রাস্তায়। নগরীর ভদ্রা মোড় হয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পেছন দিক দিয়ে রাবির কৃষি অনুষদের সামনে দিয়ে চারুকলার দিকে গাড়িগুলো চলাচল করছে। কৃষি অনুষদ থেকে স্টেশন বাজার হয়েও গাড়ি চলাচল করছে। এই রাস্তাতেও যানজট দেখা গেছে।

রিকশাচালক মো. মারুফ জানান, সোমবার সকালে তিনি সাহেববাজার থেকে একবার রাবি ক্যাম্পাসে যান। সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। স্বাভাবিক সময়ে এই রাস্তায় সময় লাগে ১৫ মিনিট। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকার কারণে ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়েছে। ৪০ টাকার ভাড়া এখন তিনি নিচ্ছেন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। সময় বেশি লাগছে বলে ভাড়াও বেশি।

 রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামতবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, কোনো কোনো রিকশা-অটোরিকশাচালক একেবারেই অস্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন ভর্তি–ইচ্ছুকদের কাছ থেকে। মাত্র কয়েক কিলোমিটারের পথের জন্য ২০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীর চাপ ও যানজটের কারণে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোতেও ১৫ টাকার ভাড়া এখন হয়ে গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

জামালপুর থেকে আসা ভর্তি পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রথমবারের মতো তিনি রাজশাহী এসেছেন। রাজশাহী শহরের কিছুই চেনেন না। সাহেববাজার থেকে ক্যাম্পাসে যেতে রিকশায় তার কাছে নেওয়া হয়েছে ১৮০ টাকা। প্রথমে ভেবেছিলেন অনেক দূরের পথ। কিন্তু পরে দেখেন দূরত্ব বেশি না। তবে রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণে সময় লেগেছে বেশি। সময়মতো পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছানোর তাগিদে তিনি বেশি টাকাতেই এসেছেন বলে জানান।

বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অটোরিকশা চালক মো. কালু বলেন, ‘আমরা ৫০০ টাকা জমায় গাড়ি চালাই। গাড়ি চলুক বা না চলুক মহাজনকে এই টাকা দিতেই হবে। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকছি যানজটের কারণে। ভাড়া মারতে পারছি না। এখন ভাড়া বেশি না নিলে মহাজনকেও দিতে পারব না, নিজেরও কিছু থাকবে না। বাধ্য হয়েই বেশি নিচ্ছি।’

সড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে। তারপরও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। হঠাৎ করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়েও কাউকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। সিটি করপোরেশন এই শহরের রিকশা-অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে সিটি করপোরেশন কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানালেন সিটি করপোরেশনের রিকশা-অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি সরিফুল ইসলাম বাবু।

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামতিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই পরীক্ষার সময় বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টা ঘটে। সব রিকশা-অটোরিকশা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক চলাচল শুরু করার কারণে তীব্র যানজটও হয়। এই অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। আমরা চেষ্টা করি। কিন্তু এটা ঠেকাতে পারি না। এবারও কয়েক দিন আগে আমরা বসেছিলাম। বলেছিলাম, পরীক্ষার্থীরা আমাদের মেহমান। তাদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। এতে রাজশাহীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা ঠিকই নেওয়া হচ্ছে। আমরাও কিছু করতে পারছি না। এটাই বাস্তবতা।’

রাজশাহী ইজিবাইক চালক সমিতির সভাপতি মো. রাশেদ বলেন, ‘আমরা একতাবদ্ধ না। চালকদের একক কোনো সংগঠনও গড়ে ওঠেনি। কেউ কারও কথা শোনে না। ফলে যে যার মতো ভাড়া আদায় করে। আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘যারা পরীক্ষা দিতে আসছে তারা অতিথি। যানজটের জন্য একটু ক্ষতি হলেও দু-একদিনের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া ঠিক না। যারা বেশি নেয়, তাদের গাড়ি জব্দ করা উচিত। ট্রাফিক পুলিশই এ ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার অনির্বাণ চাকমাকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা চলবে। তিন হাজার ৯৩০টি আসনের বিপরীতে এবার পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী। তাদের অনেকের সঙ্গে অভিভাবকও রাজশাহী এসেছেন। বাড়তি মানুষের যাতায়াতের চাপে রাজশাহীতে দেখা দিয়েছে যানজট। প্রতিবছর পরীক্ষা চলাকালীন সময়টিতেই শহরে এমন যানজট থাকে। ভাড়া নিয়েও থাকে নৈরাজ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন ছিল সাদিয়ার

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
সাদিয়া হক পাটোয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
সাদিয়া হক পাটোয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকে চাকরি নিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল সাদিয়া হক পাটোয়ারীর (২৪)। কিন্তু তাঁর শেষ দুটি ইচ্ছা আর পূরণ হয়নি। তার আগেই কক্সবাজারের চকরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সাদিয়া, তাঁর মা-ভাবিসহ একই পরিবারের ৫ জন নিহত হন।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জানাজা শেষে সাদিয়াসহ ৫ জনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে বুধবার বেলা ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া এলাকায় সাদিয়াদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে তিনিসহ পরিবারের ৫ সদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁদের মৃত্যুর সংবাদে শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় দুটি গ্রাম।

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় সাদিসহ ৫ জনের লাশ বহনকারী ৫টি অ্যাম্বুলেন্স যখন গ্রামে প্রবেশ করে, তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

নিহত সাদিয়ের চাচাতো বোন সাহিদা সুলতানা ঊর্মি বলেন, ‘তাঁর (সাদিয়া) ইচ্ছা ছিল এমবিএ শেষে করে ব্যাংকে চাকরি নেবে। এরপর সে বিয়ে করবে। কিন্তু তাঁর শেষ ইচ্ছাগুলো আর পূরণ হলো না। সাদিয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় বেপরোয়া গতিতে বিপরীত থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের চান্দিশকরা গ্রামের উদয় পাটোয়ারীর স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা (২৮), মা রুমি বেগম (৬৫), বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী (২৪), শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী (৫৫) ও শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা (২৫) নিহত হন। এ সময় আহত হন উদয় পাটোয়ারী (৪৩), ভাইয়ের ছেলে সামাদ পাটোয়ারী (৪) ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশান। তাঁদের মধ্যে লিশানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সাদিয়ার বড় ভাই মো. মনিরুল হক বলেন, ‘১৫ দিন আগে কক্সবাজারে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সামাদের মাথায় আঘাতের কারণে পিছিয়ে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার ভোরে সাদিয়া, আম্মা, ভাইয়ের শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে চৌদ্দগ্রাম থেকে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িটি ভাই নিজেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সাদিয়া ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিল। তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ব্যাংকার হবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে সে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্নীতির মামলায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের বিচার শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর)। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর)। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুরের (এস কে সুর) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক আয়েশা নাসরিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে সম্পদবিবরণী দাখিল না করার এই মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেওয়ান আশিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

এস কে সুরকে কারাগার থেকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শুরু হয়। দুদকের বিশেষ পিপি শামসুদ্দিন মো. আবুল কালাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিপক্ষে আইনজীবী না থাকায় তাঁর পক্ষে শুনানি হয়নি। অভিযোগ গঠনের পর আদালতের প্রশ্নের উত্তরে এস কে সুর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, অবৈধ সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগে এস কে সুরের নিজের ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে বা বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ বা সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। তিনি গত বছরের ২৭ অক্টোবর নিজ স্বাক্ষরে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশসহ সম্পদ বিবরণী ফরম গ্রহণ করেন। কিন্তু আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।

এ জন্য গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ওই দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধুনটে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলরসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার ধুনট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে পৌরসভার চর ধুনট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে চর ধুনট গ্রামের নির্মাণশ্রমিক ও ঠিকাদার রিপন প্রামাণিককে চাঁদার দাবিতে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আহত রিপন প্রামাণিকের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন চর ধুনট গ্রামের সোবাহান প্রামাণিক (৪৬) ও তাঁর ছেলে মনির হোসেন (২২)।

পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর সহযোগীরা রিপন প্রামাণিকের কাছে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু রিপন প্রামাণিক টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর লোকজন মঙ্গলবার রাতে রিপন প্রামাণিকের বাড়িতে গিয়ে চাঁদার টাকা চান। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়।

এ সময় রিপন প্রামাণিকের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে জাহাঙ্গীর ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত রিপন প্রামাণিককে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রিপনের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

থানাহাজতে থাকা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে রিপন প্রামাণিকের মারামারির ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সহকর্মী পুলিশ সদস্যকে পরকীয়ার জেরে হত্যার দায়ে এক পুলিশ দম্পতিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক হারুন-অর রশিদ। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কনস্টেবল নাসরিন নেলী। আলাউদ্দিনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর এলাকায়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালে কনস্টেবল আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাসরিন নেলীর সঙ্গে সহকর্মী কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের জের ধরেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি এলাকায় প্রেমিকা নেলীর ভাড়া বাসাতেই পরকীয়া প্রেমিক পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলামকে খুন করেন নেলী ও তাঁর স্বামী আলাউদ্দিন।

হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত পুলিশ দম্পতি সাইফুল ইসলামের মরদেহ বস্তাবন্দী করে গুম করার চেষ্টা করেন। তবে লাশ গুম করতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। নগরীর টাউন হল মোড়ে পুলিশের তল্লাশির সময় বস্তাবন্দী লাশসহ তাঁরা হাতেনাতে আটক হন।

ঘটনার পর নিহত সাইফুলের মা মোছা. মুলেদা বেগম ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী নাসরিন নেলীসহ আরও অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত