Ajker Patrika

কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড, অচলাবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    
তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ। ফাইল ছবি
তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ। ফাইল ছবি

সভাপতি কে হবেন, এ নিয়ে রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হঠকারিতার কারণেই ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই কলেজে এমন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

একসময় দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে এই কলেজে পড়াশোনা করতেন। শিক্ষার মানের কারণেই কলেজটি জেলাজুড়ে পরিচিতি পেয়েছিল। তবে গত সরকারের সময়ে সভাপতিসহ গভর্নিং বডির বিভিন্ন পদে থেকে শিক্ষক নিয়োগে বেপরোয়া বাণিজ্য করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। গভর্নিং বডির পর্যবেক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর কলেজটিতে আবারও গতি ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি কলেজের সভাপতি নিয়োগ নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছর কলেজের অ্যাডহক কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে। তিনি অধ্যক্ষ থাকাকালে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার মানও বাড়িয়েছিলেন। এ জন্য তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কারও পান। তাঁর অতীত অবদান বিবেচনায় স্থানীয়রা তাঁকেই অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেন।

পরবর্তী সময়ে নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সভাপতি পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করে। গত ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো ওই তালিকায় ছিলেন সেলিম উদ্দিন কবিরাজ, আইনুল হক ও দেওয়ান মো. মকসেদুর রহমান। কিন্তু এই তিনজনকে উপেক্ষা করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফনির উদ্দিন নামের একজনকে সভাপতি করে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর থেকেই কলেজে সংকট সৃষ্টি হয়।

তালিকাভুক্ত নয়, এমন একজনকে সভাপতি করায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধা পরদিনই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। এই আবেদনপত্রে কলেজের ৬৩ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন। এরপর গত ১১ মার্চ গভর্নিং বডির সভা ডাকেন সভাপতি ফনির উদ্দিন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের তালিকার বাইরে থাকা সভাপতি হওয়ায় সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান এবং কেউ সভায় যোগ দেননি। ১৫ মার্চ বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শককে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। এতে সুপারিশ করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এরপরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং ফনির উদ্দিন গত ২৭ মার্চ ও ৩ এপ্রিল আরও দুটি সভা ডাকলেও গভর্নিং বডির কোনো সদস্য তাতে উপস্থিত হননি। ফলে ৯ এপ্রিল অধ্যক্ষ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩০ এপ্রিল আবারও ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে চিঠি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এই চিঠি হাতে পায় ৪ মে।

এ নিয়ে ৬ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন কবিরাজ। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ২৯ এপ্রিল তাঁকে সভাপতি করা হলে তিনি ৩ মে গভর্নিং বডির সভা ডাকেন এবং সব সদস্য তাতে অংশ নেন। কিন্তু ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি চিঠিতে তিনি দেখতে পান, ৩০ এপ্রিলের তারিখে ফনির উদ্দিনকে আবারও সভাপতি করা হয়েছে। এতে কলেজে আরও বড় সংকট সৃষ্টি হয়।

এ পরিস্থিতিতে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ গত ১২ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ফনির উদ্দিনকে কলেজের সভাপতি করে। কিন্তু তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের পাঠানো তিনজনের তালিকায় ছিলেন না। এরপর সদস্যদের অনাস্থার কারণে তালিকার ১ নম্বরে থাকা সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি করা হয়। অথচ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করা হয়েছে। এতে কলেজের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির নিয়োগের ক্ষমতা থাকলেও আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো কারণ জানানো হয়নি। এত দ্রুত সভাপতি বদল করলে শিক্ষার পরিবেশ যেমন নষ্ট হয়, তেমনি প্রশাসনিক কার্যক্রমেও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।’

এ বিষয়ে কলেজের সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন কবিরাজ বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের সময়ে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অনিয়মে কলেজটাকে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। সরকার পতনের পর আমাকে আহ্বায়ক করা হলে আমরা কলেজটাকে আবারও গুছিয়ে তুলছিলাম। কিন্তু এখন আমারই ছাত্র এবং কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক ফনির উদ্দিনকে সভাপতি বানানোর চেষ্টা চলছে। কয়েকজন ব্যক্তি কলেজে এমন অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছেন।’

এ বিষয়ে কথা বলতে সভাপতি ফনির উদ্দীনকে ফোন করা হলে তিনি সভায় আছেন জানিয়ে কথা বলতে চাননি। পরে কয়েক দফা ফোন করা হলেও ধরেননি। ফলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. জসিম উদ্দীন মৃধা বলেন, ‘সভাপতির পদ নিয়ে জটিলতার ফলে কলেজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সভাপতি ফনির উদ্দীনের পরামর্শে পরপর তিনটি সভা ডাকি; কিন্তু কেউ আসেননি। কমিটির সদস্যরা ওনার সঙ্গে কাজ করতে চান না। ফলে কলেজে স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন হচ্ছে। এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়, তারা কীভাবে সমাধান করবে জানি না।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ও সচিব আমিনুল আক্তার বলেন, ‘তালন্দ কলেজ নিয়ে আমরাও খুব বেকায়দায় আছি। আমাদের উপাচার্য পুরো হতাশ হয়ে গেছেন। একবার সভাপতি দেওয়া হয়, তাঁর নামে অভিযোগ আসে। পরিবর্তন করলে আরেকজন আবার ওপর থেকে ফোন করান। ফলে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে দিতে হয়। আমাদের কোনো দোষ নেই। এখন এসব বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে বলেছি। নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ রোববার ভোররাতে তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিভীষণ সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মান্নান বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাঁরা যশোর, নড়াইল, খুলনা ও মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্য ২ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ আছে।

তাঁরা হলো আব্দুল খালেক (৫৫), রিয়া পলি (১৩), নাসিমা খাতুন (৩৮), ফরিদা বেগম (৪০), ফতেজা আক্তার (৩৬), আলমাস আহমেদ (৩৬), অহিদ সরকার (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৭) সালমা বেগম (৪০), রুনা (৩৬), ছুফিয়া বেগম (৪০), জরিনা বেগম (৩০), রাকিব (৯), পারভিন (৪৮) ও বিথি খাতুন (৯)।

আবদুল মান্নান আরও বলেন, ভোরে সীমান্তে টহলের সময় আন্তর্জাতিক পিলার ২১৯ / ৭১ আরএস হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লালমাটিয়া নামক স্থানে ওই ১৫ জনকে দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। এ সময় তাদের আটক করে ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি। তাঁদের গোমস্তাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুশ ইনের শিকার ১৫ বাংলাদেশি নাগরিককে রহনপুর ডাকবাংলোতে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রাখা আছে। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁদের অভিভাবকদের ডেকে এনে সত্যতা যাচাই করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ভ্যানচালক কারাগারে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি মাদ্রাসার ১৩ বছর বয়সী ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে অভিযুক্ত ভ্যানচালক সাকিবকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলার একটি এলাকায় ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে ভ্যানচালক সাকিবের ভ্যানে করে মাদ্রাসায় ফিরছিল। পথে ভ্যানচালক ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়। গ্রেপ্তার সাকিব হোসেন রিফাইতপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের জাফের আলীর ছেলে।

পুলিশ বলছে, ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে আজ সকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগার পাঠিয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাজিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৩
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু সাজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের বোরহোলে পড়ে দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে এই ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

লিগ্যাল নোটিশটি দেওয়া হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব; বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান; সেচ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী; তানোরের সহকারী প্রকৌশলী; রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক; তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)।

লিগ্যাল নোটিশে শিশু সাজিদের মৃত্যুর জন্য রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি বরেন্দ্রজুড়ে থাকা শত শত পরিত্যক্ত বোরহোল বন্ধ করা এবং অবৈধ গভীর নলকূপ স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

এই লিগ্যাল নোটিশে গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘বরেন্দ্রজুড়ে শত শত মৃত্যুকূপ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, শত শত পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপ জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয় বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করা হলে হাইকোর্ট ডিভিশনে জনস্বার্থে মামলা করা হবে।

পরিত্যক্ত বোরহোলের খোঁজ

এদিকে শিশু সাজিদের মৃত্যু এবং পরিত্যক্ত বোরহোল নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) রেজাউল আলম সরকার বিভাগের আট জেলার জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিভাগে বিএমডিএ ও বিএডিসি (সেচ) গভীর নলকূপ স্থাপন করে। অনেক ক্ষেত্রে গভীর নলকূপের পাইপের মুখটি অরক্ষিত বা উন্মুক্ত রাখা হয়। এতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দুর্ঘটনা রোধে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসকদের কাছে সংশ্লিষ্ট জেলার পাইপের মুখ অরক্ষিত বা উন্মুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ গভীর নলকূপের তথ্য একটি ছকে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত নলকূপের বোরহোলে পড়ে শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ব্যক্তিমালিকানায় অবৈধভাবে সেমিডিপ বসাতে এই বোরহোল করা হয়েছিল। এক বছর ধরে গর্তটি উন্মুক্ত পড়ে ছিল। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার প্রতারণা ও মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩২
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ। ছবি: সংগৃহীত

একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা এবং তাঁর বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর ও মারধরের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এই নির্দেশ দেন।

তুরিন আফরোজকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার বাদী তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।

তুরিন আফরোজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোর্শেদ হাসান শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০২২ সালে তুরিন আফরোজ ও তাঁর গাড়িচালক আমির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মনজুর আলম নাহিদ নামের একজন ব্যবসায়ী। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী মনজুর আলম নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে ‘নাবিশা এন্টারপ্রাইজ’-এর মাধ্যমে বহুমুখী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তাঁর অন্যতম ব্যবসা হলো ভারতে তৈরি অশোক ল্যা ল্যান্ড বাস/ট্রাক আমদানি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি ও লিজ দেওয়া।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তুরিন আফরোজ তাঁর কাছ থেকে নগদে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ২০২১ সালের ১ জুলাই কিস্তির ভিত্তিতে ৭৮ লাখ টাকায় বাস দুটি ক্রয় করেন। এর মধ্যে তিনি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও বাকি কিস্তির টাকা পরিশোধ থেকে বিরত থাকেন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ মনজুর আলম নাহিদ কিস্তির টাকা পরিশোধের বিষয়ে তুরিন আফরোজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি তাঁকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়। এরপর ২ এপ্রিল আবারও টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল তুরিন আফরোজের গাড়িচালক আমির হোসেন ৭–৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে মনজুর আলম নাহিদকে হুমকি দেন। পরদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে তুরিন আফরোজ ও আমির হোসেন ২০–২৫ জনকে নিয়ে বসুন্ধরায় মনজুর আলম নাহিদের বাসায় গিয়ে প্রায় ৩২ লাখ টাকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং তাঁকে মারধর করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে আটক করে পুলিশ। আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় পরদিন তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত