Ajker Patrika

বাঘায় বন্যার পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি

গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন, বাঘা (রাজশাহী) 
রাজশাহীর বাঘায় কমেছে বন্যার পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর বাঘায় কমেছে বন্যার পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে এবারের বন্যায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ বিঘা আবাদি ফসল, গোচারণভূমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেক অংশও পানিতে ডুবে যায়। উপজেলার চকরাজাপুর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার ৪০০ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী হয়ে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মার পানি কমতে শুরু করায় বন্যার পানিও নামছে। কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় নতুন করে ভোগান্তি বাড়ছে। এখনো অনেকে বসতঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারেননি। নিম্ন আয়ের মানুষ কাজের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছে। পাশাপাশি গোখাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বন্যায় চকরাজাপুর ইউনিয়নের পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়াড়কাদিরপুর, লক্ষ্মীনগর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের কড়ারি নওশারা, খানপুর গুচ্ছগ্রাম, আশরাফপুর ও খানপুর নীচপাড়াসহ ১০ গ্রামের ২ হাজার ৪০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ এর চারপাশে ৫০টি পরিবার।

স্থানীয়দের দাবি, বন্যায় প্রায় ৫০ বিঘা পেয়ারাবাগান, ৩০০ বিঘা কাউন, ৪০০ বিঘা আউশ ধান, ২০০ বিঘা ভুট্টা, ৫০০ বিঘা পেঁপে, ২০০ বিঘা কলা ও আখের খেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

আতারপাড়া গ্রামের খোশ মোহাম্মদ জানান, পানি কমলেও ঘরে এখনো পানি রয়ে গেছে।

সুফিয়ান ঢালী, ইব্রাহীম হাওলাদার, রমজান ব্যাপারী ও জাকারিয়া, জামাল ব্যাপারীসহ আরও কয়েকজন বলেন, বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হওয়াই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ওই গ্রামের জাহানারা, ছকেনা ও রাজেনা জানান, স্বামী না থাকায় উপার্জনের অভাবে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। রানা কাজী জানান, কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার বলেন, আতারপাড়ায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী। পানি কমলেও কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিয়েছে।

কালিদাশখালী গ্রামের সকেনা বেগম বলেন, ঘরে হাঁটুপানি থাকলেও এখন কমেছে। কিন্তু কাজ নেই, সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বাতেন মোল্লা নামের এক কৃষক জানান, তাঁর লিজ নেওয়া ৮ বিঘা জমির কাউন ও আধাপাকা ধান পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সহিদুল ইসলাম বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সবাইকে এখনো সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার জানান, ইতিমধ্যে চৌমাদিয়া গ্রামের ২২০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল এবং খানপুর গুচ্ছগ্রামের ৮৫ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, শিগগিরই মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত