Ajker Patrika

এবার আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের মারধর সেই বরখাস্ত এসপি ফজলুলের

নাটোর প্রতিনিধি 
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫, ১৮: ০৫
বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক এবার আদালত চত্বরে কয়েক সাংবাদিককে মারধর করলেন। আজ দুপুরে নাটোরে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক এবার আদালত চত্বরে কয়েক সাংবাদিককে মারধর করলেন। আজ দুপুরে নাটোরে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরখাস্ত পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হক এবার নাটোর আদালত চত্বরে কয়েক সাংবাদিককে মারধর করলেন। স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিনের দায়ের করা নারী নির্যাতনের মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে এসেছিলেন ফজলুল হক। এজলাস থেকে কোর্ট হাজতে নেওয়ার সময় হাতকড়া না পরানোর সুযোগে ফজলুল হক চড়াও হন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

আদালত ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিনের দায়ের করা নারী নির্যাতনের মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিয়ে জামিন চান বরখাস্ত এসপি ফজলুল হক। আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর কোর্ট পুলিশের একটি দল তাঁকে এজলাস থেকে কোর্ট হাজত পর্যন্ত নিয়ে আসেন। কোর্ট হাজতে ঢোকার সেই দৃশ্য উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্যামেরায় ধারণ করার সময় তিনি এখন টিভির চিত্রসাংবাদিক শামীম হোসেন সুমন, সময় টিভির চিত্রসাংবাদিক রোকন হিমু ও এনটিভির চিত্রসাংবাদিক আর এম রবিকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।

ফজলুল হকের সঙ্গে কোর্ট পুলিশের সদস্যরা থাকলেও তাঁরা কেউই বাধা দেননি। তিন চিত্রসাংবাদিককে মারধর করতে দেখে অন্য গণমাধ্যমকর্মীরা এগিয়ে এলে কোর্ট পুলিশের সদস্যরা ফজলুল হককে দ্রুত হাজতে ঢুকিয়ে দেন। পরে জেলার সব সাংবাদিক আদালত চত্বরে অবস্থান নিলে সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পরও একজন আসামিকে কেন হাতকড়া পরানো হয়নি জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মোস্তফা কামাল।

বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক এবার আদালত চত্বরে কয়েক সাংবাদিককে মারধর করলেন। আজ দুপুরে নাটোরে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক এবার আদালত চত্বরে কয়েক সাংবাদিককে মারধর করলেন। আজ দুপুরে নাটোরে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ মাহমুদ মিঠু বলেন, ‘একজন আসামির পরিচয় যাই হোক না কেন, বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর হাতকড়া পরানোটাই প্রচলিত; এটা সব আসামির ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার স্বার্থে করা হয়। কিন্তু একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলে আইন তাঁর বেলায় শিথিলভাবে প্রয়োগ হবে, তা আইনের লঙ্ঘন।’

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকদের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত করেই আসামি ফজলুল হককে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক। ছবি: সংগৃহীত
বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক। ছবি: সংগৃহীত

বরখাস্ত এসপি এস এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাটোর সদরের জংলী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে এস এম ফজলুল হকের সঙ্গে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর মেহনাজ আক্তার আমিনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ১৫ ও ৮ বছর বয়সী দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০২১ সালে র‍্যাবে এসপি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ কথা বলার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জের ধরে ফজলুল হককে সরকার শাস্তি দেয়। একই বছর তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়। এদিকে তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় স্ত্রী বাধা দেন। তাতে স্ত্রী-সন্তানদের মারধর শুরু করেন তিনি। ২০২৩ সালে ফজলুল হক পুনরায় ঠাকুরগাঁয়ে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে এসপি হিসেবে যোগ দিয়ে সেখানকার জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একটি ভাড়া বাসায় সেই নারীর সঙ্গে অবস্থান করার সময় স্ত্রী-সন্তানেরা কৌশলে সেখানে উপস্থিত হন। এতে ফজলুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে শীতের মধ্যে রাতে স্ত্রী-সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এমন নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ বিগত সরকার তাঁকে আবারও বরখাস্ত করে। এ ঘটনার পর ফজলুল হক রাজশাহীর বাসায় এসে স্ত্রী-সন্তানদের জোর করে অভিযোগ নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা নেন। তাঁর ভয়ে স্ত্রী-সন্তানেরা পুলিশ সদর দপ্তরে তদন্ত কমিটির সামনেও হাজির হতে পারেননি। ইতিমধ্যে ফজলুল হক জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে কর্মরত সেই নারী কর্মকর্তাকে বিয়ে করে নাটোর শহরের মোহনপুরে বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।

ফজলুর হকের স্ত্রী মেহনাজ আক্তার আমিন বলেন, ‘এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় আমার ও সন্তানদের কোনো খরচ বহন না করে উল্টো আমার এবং বাবা-মা ও ভাইদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তিনি সুযোগ পেলেই যেকোনো মানুষের ওপর ক্ষমতা দেখান, কেউ বাদ যায় না। আমি সন্তানসহ পুরো পরিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশপ্রধানের কাছে হস্তক্ষেপ ও নিরাপত্তা কামনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করছে প্রশাসন

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি 
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নির্বাচনী আচরণবিধি বাস্তবায়নে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকিব ওসমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রচারসামগ্রী অপসারণের কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরানো হয়নি। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এর আগে গত শনিবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড নিজ দায়িত্বে অপসারণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। নির্দেশনা অমান্য করায় রোববার দুপুরে প্রশাসন নিজ উদ্যোগে এসব প্রচারসামগ্রী অপসারণ করে।

অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছেনমং রাখাইন ও চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অভিযানে অংশ নেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলায় সব রাজনৈতিক ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করা হচ্ছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করতে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবিপ্রবি ও জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পাবিপ্রবির পক্ষে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল এবং ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভাইস প্রেডিডেন্ট প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এই সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে উভয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাগত ও একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে। পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা জাপানের মর্যাদাপূর্ণ মেক্সট স্কলারশিপ লাভ করবে। স্কলারশিপ প্রাপ্তরা জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, নতুন প্রযুক্তি ও গবেষণার সঙ্গে পরিচিত হবেন এবং একাডেমিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে মেধাশূন্য করা হয়েছিল। আমরা আজকে সমঝোতা স্মারক চুক্তির দিন হিসেবে বেছে নিয়েছি। কারণ, আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষ গড়তে চাই। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরা হেরে যাইনি।’

প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া বলেন, ‘সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে শিক্ষা, গবেষণা, রিসোর্স এবং মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে আমরা উভয়ে মিলে কাজ করব। আমরা কার্যকর সমঝোতা গড়ে তুলব। আমাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হবে। ফলে আমাদের মধ্যে জ্ঞানের অংশীদারত্বের পথ সৃষ্টি হবে। এতে আমরা দুই পক্ষই লাভবান হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতারা, বয়কট মুক্তিযোদ্ধাদের

নেত্রকোনা, প্রতিনিধি
মোহনগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোহনগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াত নেতারা আসায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আজ রোববার উপজেলার অডিটরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে সকালে দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে উপজেলার অডিটরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রশাসন।

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের দাওয়াত দেওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সভা বর্জন করে চলে যান। পরে শহরের স্টেশন রোডে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন তাঁরা।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মঞ্চে স্থান দেওয়ায় আমরা আলোচনা সভা বর্জন করি। যারা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করল, তাদের সঙ্গে আমরা বসতে পারি না। এখানে আমরা কোনো আপস করতে পারি না।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘এর আগে আমরা উপজেলা প্রশাসনকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় জামায়াতকে না রাখতে ইউএনওর প্রতি অনুরোধ জানাই। কিন্তু আমাদের অনুরোধ তিনি রাখেননি।’

এ সময় বক্তব্য দেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান ও সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমেনা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সব রাজনৈতিক নেতাকে দাওয়াত দিয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধারা সভায় বিলম্বে যাওয়ায় আমাদের পাশেই তাঁদের জন্য আলাদা চেয়ারও রেখেছিলাম। কিন্তু উনারা চেয়ারে না বসে ব্যস্ততা দেখিয়ে হলরুম ত্যাগ করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: শেরপুর থেকে দুজন আটক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪১
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ

রাজধানীর পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান শরিফ হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শেরপুর থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

এর আগে হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে আটক করে র‍্যাব। তাঁকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর পল্টন এলাকার বক্স কালভার্ট ডিয়ার টাওয়ারের সামনে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন দুর্বৃত্ত ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ওপর নেক্কারজনক হামলা চালায়। হেলমেট পরিহিত অবস্থায় হামলাকারীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে হাদি গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতরা শেরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে, তাঁদের যারা সীমান্ত পার করে দিয়েছিলেন, আটককৃত এই দুজন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যে হামলাকারী দুই সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গুলি করেছে ফয়সাল করিম এবং মোটরসাইকেল চালক ছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর শেখ।’

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, প্রাথমিক তদন্তে মোট তিনজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলের মালিক মান্নানকে র‍্যাব আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ইমিগ্রেশন ডাটাবেজ চেক করে এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজনদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’ তিনি বলেন, ফয়সাল করিম মাসুদের পাসপোর্ট নম্বর পাওয়া গেছে এবং তাঁর পাসপোর্ট ইতিমধ্যে ব্লক করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন রেকর্ড অনুযায়ী, ফয়সালের সর্বশেষ বিদেশযাত্রা ছিল গত জুলাই মাসে। তিনি থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর আর কোনো ডিপার্চারের তথ্য নেই।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, স্থল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালানোর সম্ভাবনা মাথায় রেখে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সতর্ক করা হয়েছে। সব ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের বিষয়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা গুজব থাকলেও আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত বিদেশে পালানোর কোনো অথেনটিক তথ্য নেই।’

ঘটনার পর এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আহত ওসমান হাদির পরিবার বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে দেরি হচ্ছে। আমরা তাদের সঙ্গে দুইদিন ধরে যোগাযোগ করছি। প্রয়োজনে হাসপাতাল থেকে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা করা হবে। তা না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রেকর্ড করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত