Ajker Patrika

ইউপি কার্যালয়ে সদস্যদের নাচগানের ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সদস্যরা নাচগান করার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সদস্যরা নাচগান করার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কয়েকজন সদস্য একটি কক্ষে বসে আছেন। একজন পুরুষ সদস্য নাচছেন। মাঝে মাঝে পাশে বসে থাকা একজন নারী সদস্যের গায়েও হাত দিচ্ছেন। সামনের টেবিলে একটি বোতল, একটি গ্লাস। গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি জেলার তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের। এ ঘটনায় এলাকায় সমালোচনা-আলোচনার জন্ম হয়েছে। অনেকের ধারণা, দেশীয় মদ পান করে সদস্যরা এমন নাচানাচিতে মেতে উঠেছেন। এ নিয়ে তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। ইউপি চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করছেন, মদপানের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ইউপি কার্যালয়ে নাচগানের ঘটনাটি ঘটে গত ১৩ আগস্ট। ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গাফফার এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাইনুল ইসলাম নাচগানে মেতে আছেন। তাঁদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পদধারী কয়েকজন ইউপি সদস্যও অংশ নেন। প্রকাশ্যে এমন কর্মকাণ্ডে বিএনপির নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘গাফ্ফার ও মাইনুল প্রায়ই ইউপি কার্যালয়ে মজমা বসিয়ে মদ পান করেন। তাঁদের কর্মকাণ্ডে বিএনপির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এরা দুজনই বিএনপির কর্মী গাণিউল হত্যা মামলার আসামি। দলের সম্মান রক্ষায় তাঁদের দ্রুত বহিষ্কার করা প্রয়োজন।’

ভিডিওটিতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং আট নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মাইনুল ইসলামকে নাচানাচি করতে দেখা যায়। আসরে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউপির ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মাবিয়া বিবি, মহিলা আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সহসভাপতি ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারী সদস্য বেবি আরা এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আরেক আব্দুল গাফফার।

এ বিষয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইউপি সদস্যরা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর কথা। কিন্তু তাঁরা যদি মদ্যপ অবস্থায় নাচগান করেন, তাঁহলে জনগণ আর কোথায় যাবে? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।’

নাচানাচির বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুল গাফফার বলেন, ‘আমার কোনো দুঃখ নাই, সব সময় সুখ নিয়েই চলি। দুঃখ করলে হার্ট অ্যাটাক কইরে মইরে যাব। খাইয়ে-দাইয়ে আইসে একটা মিম্বার একটা মোবাইলে গান দিয়েছে, আমি একটু নাচিছি। এইটুকুই গো ভাই, এক মিনিটও লয়। এটাই ছড়ায় গেছে। বোতলে সাদা পানি ছিল ভাই। মদটদ কিছু লয়।’

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ‘১৩ আগস্ট আমি ছুটিতে ছিলাম। দায়িত্বে ছিলেন প্যানেল চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। সে মেম্বারদের গোস্ত-ভাত খাওয়ায়। তারপর কেউ ছিল না, খেয়েদেয়ে তারা একটু ডানা লড়ালড়ি করছিল। গাফফার মেম্বার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। এখানে নেশাভান কিছু না। বিষয়টা ভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও দেখেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলার উপপরিচালক তাঁর কাছে জানতে চেয়েছেন। এ জন্য মঙ্গলবার তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে ডেকে জানতে চেয়েছিলেন। আজ বুধবার সদস্যদের ডেকেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন পাঠাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

বিতর্কিত মন্তব্যে পাকিস্তানে জনপ্রিয় আলেম ইঞ্জিনিয়ার আলি মির্জা গ্রেপ্তার

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শুল্ক বিরোধের মধ্যেও বিলিয়ন ডলারের চুক্তির পথে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র

যুদ্ধবিরতি চেয়ে ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভ, নেতানিয়াহুর রোষানলে জিম্মিদের পরিবার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত