Ajker Patrika

চার মাস ধরে স্কুলমাঠে পানি

মিজান মাহী, দুর্গাপুর
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১১: ০৭
চার মাস ধরে স্কুলমাঠে পানি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে এক মাসের বেশি। কিন্তু  ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। মাঠটিতে পানি জমে রয়েছে। মাঠের এই হালে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলাও রয়েছে বন্ধ।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, চার মাস ধরে কলেজের মাঠে পানি জমে আছে। এ ছাড়া মাঠের চারপাশে প্রায় ৩০০ বিঘা আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। ফলে বিপাকে কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় কয়েক শ কৃষক।

২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর চার থেকে ছয় মাস ডুবে থাকে কলেজের মাঠসহ আশপাশের ফসলের খেত। অপরিকল্পিত পুকুর খননে পাশে ডাহার বিলের নালার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফলে তিন বছর ধরে এই দুর্ভোগ। এ নিয়ে একাধিকবার জনপ্রতিনিধিদের বলেও কোনো কাজ হয়নি।

গত বুধবার সরেজমিনে কলেজের মাঠ পানির নিচে তলিয়ে থাকা অবস্থায় দেখা গেছে।  

দেবীপুর বিএম স্কুল অ্যান্ড  কলেজের করণিক আসাদুল ইসলাম বলেন, টেকনিক্যাল এই স্কুল ও কলেজে চারটি ট্রেড রয়েছে। প্রতিটি ট্রেডে ৬০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে। বর্তমানে স্কুল ও কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২০ জন। গত ১২ সেপ্টেম্বর  ক্লাস শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে উপস্থিতির হার ছিল ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশের ওপরে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ক্লাস নিতে বিড়ম্বনা হচ্ছে। পানি ও কাদা অতিক্রম করে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে চাইছে না।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ফিরোজ বলেন, কলেজ খুললেও মাঠজুড়ে পানি। পানি মাড়িয়ে ক্লাসে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। চার মাস ধরেই এ অবস্থা। শুধু কলেজই নয়, আশপাশের প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদুল হক বলেন, এ বিষয়ে তাঁদের কিছুই করার নেই। শুধু একাডেমিক বিষয়গুলো দেখা তাঁদের দায়িত্ব। উপজেলা প্রশাসন এসব বিষয় দেখভাল করে। 

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপাকে কৃষকেরাও। স্থানীয় কৃষক হেলাল উদ্দিন বলেন, পানির নিচে তলিয়ে থাকা এসব জমিতে বছরে আগে তিন ধরনের ফসল হতো। এখন শুধু শুকনো মৌসুমে বোরো ধান হয়। দুই গ্রামবাসীর প্রায় ৩০০ বিঘা জমি চার-ছয় মাস পানির নিচে থাকে। এ নিয়ে একাধিকবার জনপ্রতিনিধিদের বলেও কোনো কাজ হয়নি।

দুর্গাপুর পৌরসভার ১ নম্বর দেবীপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টা অনেক বড় ব্যাপার। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ডাহার বিলের নালা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে কলেজের মাঠ ও কৃষকের ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কৃষকেরা এ বিষয়ে আমার কাছে অনেকবার অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু আমার একার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব না। আমি কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি ইউএনও মহোদয়কে এ ব্যাপারে অভিযোগ করতে। শুনেছি কৃষকেরা অভিযোগ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমি  কৃষকদের সঙ্গে থেকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করব।’  

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, অপরিকল্পিত পুকুর খননে এই উপজেলায় জলাবদ্ধতা একটা প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকার পুকুরের পাড় ও নালা কেটে অনেক জায়গায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন কৃষকেরা এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।

ইউএনও আরও বলেন, জলাবদ্ধতায় কৃষকের সমস্যার কথা শুনেছেন তিনি, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ডুবে থাকার বিষয়টি তিনি জানেন না। ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান ও কৃষকেরা যৌথভাবে তা জানালে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

কলকাতার নিউটাউনে বসে আয়েশ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

চাকরি না ছেড়েই বিদেশে পাড়ি, ৪৮ শিক্ষক বরখাস্ত

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত