রিমন রহমান, রাজশাহী
হেমন্তের বিকেলের মিষ্টি রোদ পড়েছে খেতভরা সোনালি ধানে। এক, দুই, তিন-বলার সঙ্গে সঙ্গেই কিষানিদের কাস্তে চলতে শুরু করল। শুরু হলো ধান কাটার প্রতিযোগিতা। হই হুল্লোড় করে কাঠা দু-এক জমির ধান চোখের পলকেই কাটা শেষ। তিনটি দলে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ১৫ জন নারী তিন সারি ধান কেটে সাবাড় করলেন। প্রথম হলো শাহানাপাড়ার মুকুল সরকারের দল।
প্রতিযোগিতায় ধান কাটতে নেমে কোনো নারী একবারের জন্যও নিজের কোমরটি সোজা করেননি। প্রথম হয়ে মুকুল সরকারের দলের কৃষাণী বিমলা বেগ নিজেদের ওরাও ভাষায় বললেন, ‘হামনে কষ্ট করিকে ধান কেটকে ফাস্ট হোহি।’ এ কথার বাংলা অর্থ ‘আমরা কষ্ট করে ধান কেটে প্রথম হয়েছি।’ ধান কাটার সময় একবারও কোমর সোজা করেননি, এ কথা বলতেই বিমলা বেগ বললেন, ‘কোমর ওপরে তুললে কী পারব ধান কাটতে?’
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন বেলডাঙ্গা গ্রামের আলপি খাখার দল। আর তৃতীয় চৈতন্যপুরের মমতা রানীর দল। তৃতীয় হলেও আনন্দের সীমা নেই মমতার। ধান কাটা শেষে জমিতেই তিনি নাচছিলেন। মমতা বলেন, ‘আমরা না জিতেছি তো কী হয়েছে? আরেকজন তো জিতেছে। এই উৎসব হলে খুব আনন্দ লাগে। আমার মনে খুব ফুর্তি। তাই না জিতলেও আমি নেচেছি।’
অগ্রহায়ণের প্রথম দিন বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে এভাবেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে উদ্যাপন হয়েছে ‘কৃষকের নবান্ন উৎসব’। রাজশাহীর কৃষি উদ্যোক্তা ও এ বছর বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষক মনিরুল ইসলাম মনির এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন। এর আগেও তিন বছর তিনি এ আয়োজন করেছেন। তাঁর এ আয়োজনে উৎসবের ঢল নেমেছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত এই গ্রামে। গ্রামের শত শত দর্শক উৎসব উপভোগ করেন।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সকালে এ গ্রামের নারীরা নিজ নিজ বাড়ি লেপা মোছার কাজ করেন। আঁকা হয় আলপনা। বাড়িতে বাড়িতে রান্না হয় মাংস। ভাপা পিঠা, অ্যাংকর পিঠাসহ অন্যান্য ভালো খাবার করেন নারীরা। গোসল, খাওয়া-দাওয়া সেরে নতুন কাপড় পরে বিকেল ৩টায় তাঁরা যোগ দেন নবান্ন উৎসবে। গ্রামের শিশুরাও এসেছিল নতুন নতুন পোশাক পরে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা, ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রউফ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির আহমেদ ও সফল উদ্যোক্তা। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কিশোরীরা তাঁদের ফুল ছিটিয়ে এবং গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন।
অনুষ্ঠানস্থলটিকে সাজানো হয়েছিল কাগজের ফুল দিয়ে। সেখানেই জাতীয় সংগীতের সঙ্গে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর অতিথিরা ধান কাটা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে দেন। প্রতিযোগিতা শেষে শিশু-কিশোর ও কিশোরীরা নৃত্য পরিবেশন করে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ির সবুজ সরকার নিজের উদ্ভাবন করা ড্রোন নিয়ে এসেছিলেন এই এ উৎসবে। তাঁর ড্রোন কীভাবে ফসলের জমিতে কীটনাশক স্প্রে করবে তা তিনি দেখান। পরে চেয়ার খেলা ও হাঁড়িভাঙাসহ নানা খেলা অনুষ্ঠিত হয়। চলতে থাকে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের নাচ-গান। রাতে ধান কাটার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী নারীদের নতুন শাড়ি পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমরা যে এলাকায় থাকি না কেন, আমাদের অতীত সবার গ্রাম। শহুরে নানা কার্যক্রমের ভেতর এ ধরনের অনুষ্ঠান হারিয়ে যেতে বসেছে। আদি এই ঐতিহ্য ধরে রাখবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এমন আয়োজন প্রতিবছর গ্রামে গ্রামে হবে এ প্রত্যাশা করি।’
উৎসবের আয়োজক মনিরুল ইসলাম বললেন, ‘আমরা এবার চতুর্থবারের মতো এ উৎসব করলাম। কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় তাহলে এ ধরনের উৎসবও গ্রামে গ্রামে আরও বেশি বেশি হবে। এ উৎসবে একদিনের জন্য হলেও কৃষকের যে নির্মল আনন্দ তার প্রয়োজন আছে। তাই যত দিন কৃষির সঙ্গে আছি, তত দিন চালিয়ে যাব।’
হেমন্তের বিকেলের মিষ্টি রোদ পড়েছে খেতভরা সোনালি ধানে। এক, দুই, তিন-বলার সঙ্গে সঙ্গেই কিষানিদের কাস্তে চলতে শুরু করল। শুরু হলো ধান কাটার প্রতিযোগিতা। হই হুল্লোড় করে কাঠা দু-এক জমির ধান চোখের পলকেই কাটা শেষ। তিনটি দলে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ১৫ জন নারী তিন সারি ধান কেটে সাবাড় করলেন। প্রথম হলো শাহানাপাড়ার মুকুল সরকারের দল।
প্রতিযোগিতায় ধান কাটতে নেমে কোনো নারী একবারের জন্যও নিজের কোমরটি সোজা করেননি। প্রথম হয়ে মুকুল সরকারের দলের কৃষাণী বিমলা বেগ নিজেদের ওরাও ভাষায় বললেন, ‘হামনে কষ্ট করিকে ধান কেটকে ফাস্ট হোহি।’ এ কথার বাংলা অর্থ ‘আমরা কষ্ট করে ধান কেটে প্রথম হয়েছি।’ ধান কাটার সময় একবারও কোমর সোজা করেননি, এ কথা বলতেই বিমলা বেগ বললেন, ‘কোমর ওপরে তুললে কী পারব ধান কাটতে?’
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন বেলডাঙ্গা গ্রামের আলপি খাখার দল। আর তৃতীয় চৈতন্যপুরের মমতা রানীর দল। তৃতীয় হলেও আনন্দের সীমা নেই মমতার। ধান কাটা শেষে জমিতেই তিনি নাচছিলেন। মমতা বলেন, ‘আমরা না জিতেছি তো কী হয়েছে? আরেকজন তো জিতেছে। এই উৎসব হলে খুব আনন্দ লাগে। আমার মনে খুব ফুর্তি। তাই না জিতলেও আমি নেচেছি।’
অগ্রহায়ণের প্রথম দিন বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে এভাবেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে উদ্যাপন হয়েছে ‘কৃষকের নবান্ন উৎসব’। রাজশাহীর কৃষি উদ্যোক্তা ও এ বছর বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষক মনিরুল ইসলাম মনির এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন। এর আগেও তিন বছর তিনি এ আয়োজন করেছেন। তাঁর এ আয়োজনে উৎসবের ঢল নেমেছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত এই গ্রামে। গ্রামের শত শত দর্শক উৎসব উপভোগ করেন।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সকালে এ গ্রামের নারীরা নিজ নিজ বাড়ি লেপা মোছার কাজ করেন। আঁকা হয় আলপনা। বাড়িতে বাড়িতে রান্না হয় মাংস। ভাপা পিঠা, অ্যাংকর পিঠাসহ অন্যান্য ভালো খাবার করেন নারীরা। গোসল, খাওয়া-দাওয়া সেরে নতুন কাপড় পরে বিকেল ৩টায় তাঁরা যোগ দেন নবান্ন উৎসবে। গ্রামের শিশুরাও এসেছিল নতুন নতুন পোশাক পরে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা, ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রউফ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির আহমেদ ও সফল উদ্যোক্তা। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কিশোরীরা তাঁদের ফুল ছিটিয়ে এবং গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন।
অনুষ্ঠানস্থলটিকে সাজানো হয়েছিল কাগজের ফুল দিয়ে। সেখানেই জাতীয় সংগীতের সঙ্গে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর অতিথিরা ধান কাটা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে দেন। প্রতিযোগিতা শেষে শিশু-কিশোর ও কিশোরীরা নৃত্য পরিবেশন করে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ির সবুজ সরকার নিজের উদ্ভাবন করা ড্রোন নিয়ে এসেছিলেন এই এ উৎসবে। তাঁর ড্রোন কীভাবে ফসলের জমিতে কীটনাশক স্প্রে করবে তা তিনি দেখান। পরে চেয়ার খেলা ও হাঁড়িভাঙাসহ নানা খেলা অনুষ্ঠিত হয়। চলতে থাকে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের নাচ-গান। রাতে ধান কাটার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী নারীদের নতুন শাড়ি পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমরা যে এলাকায় থাকি না কেন, আমাদের অতীত সবার গ্রাম। শহুরে নানা কার্যক্রমের ভেতর এ ধরনের অনুষ্ঠান হারিয়ে যেতে বসেছে। আদি এই ঐতিহ্য ধরে রাখবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এমন আয়োজন প্রতিবছর গ্রামে গ্রামে হবে এ প্রত্যাশা করি।’
উৎসবের আয়োজক মনিরুল ইসলাম বললেন, ‘আমরা এবার চতুর্থবারের মতো এ উৎসব করলাম। কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় তাহলে এ ধরনের উৎসবও গ্রামে গ্রামে আরও বেশি বেশি হবে। এ উৎসবে একদিনের জন্য হলেও কৃষকের যে নির্মল আনন্দ তার প্রয়োজন আছে। তাই যত দিন কৃষির সঙ্গে আছি, তত দিন চালিয়ে যাব।’
চট্টগ্রাম নগরে পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে বছরখানেক আগে সড়কের পাশের ২৩ শতক জায়গার ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেসিলেটের ১৩৩ বছরের পুরোনো এমসি কলেজ। এর ছাত্রাবাসের সপ্তম ব্লকে ১২৮ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কলেজের কয়েকজন কর্মচারীও থাকেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে পানির তীব্র সংকট থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গোসল করা দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খাওয়ার পানিও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে
৫ ঘণ্টা আগেটানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
৫ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
৫ ঘণ্টা আগে