Ajker Patrika

সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কে সড়কবাতি স্থাপনের দাবি

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
নিমতলা থেকে সিরাজদিখান উপজেলা মোড় পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কজুড়ে কোথাও কোনো সড়কবাতি নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিমতলা থেকে সিরাজদিখান উপজেলা মোড় পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কজুড়ে কোথাও কোনো সড়কবাতি নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কে রাতের বেলায় সড়কবাতি না থাকায় পুরো সড়কটি অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। এতে পথচারী ও যানবাহন চালকদের চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে দুর্ঘটনা ও অপরাধমূলক ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, নিমতলা থেকে সিরাজদিখান উপজেলা মোড় পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কজুড়ে কোথাও কোনো সড়কবাতি নেই। পুরো সড়কটি অন্ধকারে ডুবে থাকে। মাঝেমধ্যে যানবাহনের হেডলাইটের আলো ছাড়া কিছুই দেখা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অন্ধকারের সুযোগে মাঝেমধ্যেই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটে। তাই শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশা পড়ার আগে সড়কবাতি স্থাপন না হলে জননিরাপত্তা ও চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কের অটোরিকশাচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, রাতে এই রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা চালানো খুবই বিপজ্জনক। আলো না থাকায় সামনে কিছু দেখা যায় না, আবার অন্ধকারের সুযোগে ছিনতাইকারীরাও সক্রিয় থাকে। সড়কবাতি থাকলে এসব ঝুঁকি অনেকটা কমে যেত।

সিরাজদিখান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নিতাই দাস বলেন, ‘ভোরবেলা আমরা যাত্রাবাড়ী থেকে মাছ নিয়ে বাজারে আসি। তখন পুরো রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকে। কুয়াশা পড়লে কিছুই দেখা যায় না, দুর্ঘটনার ভয় থাকে। রাস্তার দুই পাশে বাতি লাগালে সবাই নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়া প্রতি শীত মৌসুমে এই সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তাই এই সড়কে বাতি স্থাপনের পাশাপাশি পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।’

সবজি ব্যবসায়ী আলমগীর শেখ বলেন, ‘ভোরের দিকে সবজি আনতে গেলে ভয় লাগে। আলো না থাকায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ; অনেক সময় ডাকাতির ভয় থাকে। তাই দ্রুত সড়কবাতি স্থাপন করা দরকার।’

রশুনিয়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার খান বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু রাতের বেলায় পুরো রাস্তা অন্ধকারে থাকে। শীতের সময় কুয়াশা পড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়। তাই দ্রুত সড়কবাতি স্থাপন করা প্রয়োজন।

পিকআপ ভ্যানচালক আল আমিন বলেন, ‘সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কটি সিরাজদিখানের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এর প্রায় সাত কিলোমিটার অংশে সড়কবাতি না থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সড়কবাতি স্থাপন করা অবশ্যই প্রয়োজন ছিল। বছর বছর ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। শীতকালে শুধু টিউবলাইট স্থাপন করে কাজ শেষ করা হয়, যা পর্যাপ্ত নয়। কার্যকরী সমাধান হলো, সারা বছর এখানে সড়কবাতি স্থাপন করা। তাই প্রশাসনের প্রতি আমরা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

আল আমিন আরও বলেন, ‘আমরা ভোরবেলায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে ঢাকা যাই। ঢাকা থেকে বিভিন্ন মাছ, মাংস ও সবজি নিয়ে সিরাজদিখান, বালুচর, ইছাপুরা, তালতলাসহ বিভিন্ন বাজারে পৌঁছাই। কিন্তু ভোরবেলায় বারবার ডাকাতির কবলে পড়তে হয়। আমাদের ওপর অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। তাই নিরাপদ চলাচলের জন্য এই সড়কে সড়কবাতি স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।’

সিরাজদিখান থানার ওসি মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি শীত মৌসুম ও ঘন কুয়াশার আগে নিমতলা থেকে সিরাজদিখান পর্যন্ত সড়কে সড়কবাতি স্থাপন করার। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দিষ্ট দূরত্বে সড়কবাতি বসানো হবে, যাতে মানুষ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে। পাশাপাশি সড়কে ডাকাতি বা অন্য কোনো অপরাধমূলক ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যরা সতর্ক ও নজরদারিতে থাকবে। আমাদের লক্ষ্য, সকল পথচারী ও যানবাহনের চালক যেন নিরাপদে সড়ক ব্যবহার করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...