Ajker Patrika

ঢাকা-মাওয়া

বাতি জ্বলে না এক্সপ্রেসওয়ের

  • ৪ মাস ধরে সড়কবাতি বন্ধ এক্সপ্রেসওয়ের।
  • ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন, দুর্ঘটনা ও ছিনতাইয়ের শঙ্কা।
  • তার চুরির কারণে এমন অবস্থার সৃষ্ট হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ০৪
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ছবিটি গত বুধবার রাতের। আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ছবিটি গত বুধবার রাতের। আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও সার্ভিস লেনে চার মাস ধরে নিভে আছে সব সড়কবাতি। ফলে রাত নামলেই সড়কজুড়ে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কাও। তার কেটে চুরির কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গত বুধবার রাত ৮টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়ের কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী সেতুর টোল প্লাজা থেকে শুরু করে সিরাজদিখানের কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া ফ্লাইওভার ও দক্ষিণ প্রান্ত হয়ে নিমতলা পর্যন্ত কোথাও সড়কবাতি জ্বলছে না। প্রায় চার মাস ধরে মূল সড়ক ও সার্ভিস লেন সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছে। এতে রাতে ওই পথে যানবাহন চালানো ও চলাচল করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

কুচিয়ামোড়া এলাকার দোকানদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগে বাতিগুলো নিয়মিত জ্বলত। কিন্তু প্রায় চার মাস হলো সব বন্ধ। এখন রাত হলেই পুরো এক্সপ্রেসওয়ে অন্ধকারে ঢেকে যায়। এতে দুর্ঘটনা যেমন বাড়ছে, তেমনি ছিনতাইও হচ্ছে প্রায়ই।

বড় শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল মোল্লা বলেন, মূল লেন থেকে সার্ভিস লেন, সব জায়গা অন্ধকারে থাকে। এই সুযোগে রাতের বেলায় ছিনতাইকারীরা সক্রিয় হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলও চোখে পড়ে না, তাই চালক ও যাত্রীরা আতঙ্কে থাকে।

অটোরিকশাচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে যাত্রী নিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করা এখন ভয়ংকর। কোথায় গর্ত বা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে বোঝা যায় না। কয়েক দিন আগে আমার এক সহকর্মীর অটোরিকশা ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেছে।’

পিকআপ ভ্যানচালক আল-আমিন বলেন, ‘রাতে ঢাকা থেকে মাছ নিয়ে মুন্সিগঞ্জ আসি। আলো না থাকায় রাস্তা দেখা যায় না। দুর্ঘটনার ভয় লেগেই থাকে। অনেক সময় রাস্তার পাশে সন্দেহজনক লোক দাঁড়িয়ে থাকেন, থামলেই ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’

মোটরসাইকেলের চালক হৃদয় আহমেদ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে রাতে আমার মোটরসাইকেলের হেডলাইট হঠাৎ নষ্ট হয়ে যায়। তখন আমি কুচিয়ামোড়া ফ্লাইওভারের নিচে থেমে মেরামত করছিলাম। ঠিক সে সময় পেছন থেকে একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে প্রায় ধাক্কা দিচ্ছিল। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। যদি সড়কবাতি জ্বলত, তাহলে এমন বিপদের মুখে পড়তে হতো না।’

মুন্সিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে টোল প্লাজার অপারেটর কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের (কেইসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এক্সপ্রেসওয়ের ছোটখাটো বিভাগগুলো তারা দেখে। তাই বিষয়টি আমরা তাদের জানিয়েছি। এর মধ্যে বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে বিকল্পভাবে চেষ্টা চলছে।’

মাসুদ মাহমুদ সুমন আরও বলেন, ‘বেশির ভাগ জায়গায় ওভারপাস ব্রিজগুলোর নিচ দিয়ে বৈদ্যুতিক তার টানা হয়েছিল; যার ফলে অনেক সময় তার চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা আগেই এই সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এখন চেষ্টা করছি তারগুলো ওপর দিয়ে নেওয়ার; যাতে কেউ কেটে নিতে না পারে। দূরত্ব ও নিরাপত্তা বিবেচনায় এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত