Ajker Patrika

কেন্দ্রনির্ভর হয়ে পড়েছে মানিকগঞ্জে আ.লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৫: ৩৬
কেন্দ্রনির্ভর হয়ে পড়েছে মানিকগঞ্জে আ.লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো কেন্দ্রনির্ভর হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সবগুলো সহযোগী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা-কর্মীরা কাউন্সিল না করে কেন্দ্রীয় নেতাদের ম্যানেজ করে আহ্বায়ক কমিটি বাগিয়ে নিয়ে আসছেন। সেই আহ্বায়ক কমিটির নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারছে না। এতে জেলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ মে যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজাকে আহ্বায়ক এবং আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান জনিকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ঢাকায় বসে কমিটি ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ স্বাক্ষরিত একটি প্যাডে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২৫ সদস্যের প্রস্তাবিত আহ্বায়ক কমিটিকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে সব উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

সেই ৯০ দিনের আহ্বায়ক কমিটি প্রায় তিন বছর পার করলেও জেলা সম্মেলন দূরে থাক, নানা কারণে উপজেলায়ও সম্মেলন করতে পারেনি। এরপরও তাদের কমিটিকে সফল দাবি করা হচ্ছে। অন্যদিকে ৯০ দিনের আহ্বায়ক কমিটি গত তিন বছরে পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এরপর ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ সৌমির চন্দ্র ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি জেলা কৃষক লীগের এক বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আসেন। সেখানে এসে পূর্বের কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের বিভিন্ন কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে তাৎক্ষণিক উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. সমাপ্ত হোসেনকে আহ্বায়ক ও কৃষক লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক বুলবুল আহম্মেদকে সদস্যসচিব করে ৭৯ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দিয়ে যান। তিন মাসের জন্য তাৎক্ষণিক করে দেওয়া সেই কমিটি এক বছরের বেশি সময় পার করেছে, কিন্তু মানিকগঞ্জ সদর ও দৌলতপুর উপজেলা ছাড়া আর কোনো কমিটি করতে পারেনি। স্থানীয় সংসদ সদস্যরা সময় না দেওয়ার কারণে উপজেলা কৃষক লীগের কমিটি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

অন্যদিকে ২০২১ সালের ২৬ জুলাই মানিকগঞ্জ জেলায় ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকার এম এ সিফাত কোরাইশী সুমনকে সভাপতি এবং দৌলতপুর উপজেলার রাজিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকায় বসে কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। জেলায় ছাত্রলীগের একাধিক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কাউন্সিল না দিয়ে ছাত্রলীগের প্যাডে কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। আগামী এক মাস (জুলাই) এই কমিটির মেয়াদ রয়েছে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, গত এক বছরে হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা কৌড়ি কলেজ এবং খাজা রহমত আলী ডিগ্রি কলেজের আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো কমিটি করতে পারেনি ছাত্রলীগ। এমনকি জেলা শহরের পৌর ছাত্রলীগ ও সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির মেয়াদ দীর্ঘদিন ধরে শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা কমিটি করতে পারেননি। আগামী এক মাসের মধ্যে করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

এদিকে ২০২২ সালের ২৩ মে তিন বছরের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। এতে আবু বক্কর সিদ্দিক খান তুষারকে সভাপতি ও আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু স্বাক্ষরিত একটি দলীয় প্যাডে ঢাকায় বসে কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দুই মাস পার হলেও কমিটি দূরে থাক, একটি সভাও করতে পারেননি স্বেচ্ছাসেবক লীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। মানিকগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক সভাপতি বা সম্পাদক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কোনো কাউন্সিল না দিয়ে কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় সংসদ।

অভিযোগ রয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগের হাইকমান্ড আবুল বাশারের কাছে ম্যানেজ হয়ে ঢাকায় বসে পকেট কমিটি দিয়েছেন। এই কমিটি বাতিলের দাবিতে একাধিকবার প্রতিবাদ মিছিল করেছেন পদবঞ্চিতরা। 

অন্যদিকে ২০২২ সালের ১৮ জুন মানিকগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অবৈধভাবে কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এ নিয়ে পদবঞ্চিতদের বিক্ষুব্ধ অনুসারীরা সম্মেলনে আসা মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমসহ আগত নেত্রীদের সার্কিট হাউসে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। 

মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীদের অভিযোগ, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সিঙ্গাইর উপজেলার বাসিন্দা আনোয়ারা খাতুনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আনোয়ারা খাতুন সিঙ্গাইর উপজেলার মূল আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হলেও তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ এমনকি সিঙ্গাইর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য না হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে কমিটি বাগিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

সর্বশেষ, ২০২২ সালে ২২ জুন মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক জেলা যুবলীগের নেত্রী রোমেজা আক্তার খান মাহিনকে আহ্বায়ক ও সালেহা জাহানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঢাকায় বসে ঘোষণা দিয়েছেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আকতার জেলায় কাউন্সিল না করে ঢাকায় বসে কমিটি ঘোষণা দেওয়ায় জেলা যুব মহিলা লীগের অনেক নেতা-কর্মীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

অভিযোগ রয়েছে, এই কমিটির আহ্বায়ক মাহিন খান পরিচয় গোপন করে ঢাকায় থাকা তাঁর দুই মেয়েকে সদস্য বানিয়েছেন। এতে করে মূলধারার যুব মহিলা লীগের নারী নেত্রীরা বাদ পড়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র এক নেতা বলেন, ‘তৃণমূলে খবর না নিয়ে এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে ঢাকায় বসে নিজস্ব প্যাডে দুজনের নাম বসিয়ে কমিটি দিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করছে সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিগুলো। সংসদ সদস্যদের অনুরোধে তাঁদের পছন্দের মানুষদের দিয়ে কমিটি দেওয়ায় মাঠের অনেক নেতা-কর্মী হারিয়ে যাচ্ছেন। এতে জাতীয় নির্বাচনসহ আন্দোলন-সংগ্রামে প্রভাব পড়তে পারে। এ কারণে কমিটি ঘোষণা হওয়ার আগে অবশ্যই জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সম্মেলনের মাধ্যমে করতে পারলে একদিকে যেমন দলের জন্য মঙ্গল হবে, অন্যদিকে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অভিযোগ-ক্ষোভ ও হতাশা থাকবে না।’

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগসহ তার সহযোগী যেকোনো কমিটিই কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত হলে তা শক্তিশালী হবে এটাই স্বাভাবিক। ঢাকায় বসে কমিটি ঘোষণাটা দলের জন্য শুভলক্ষণ হবে না। তবে এটাও সত্য, কেন্দ্রীয় কমিটি ঢাকায় বসে যাদের নাম ঘোষণা করে কমিটি দিচ্ছে, তারা তাদের সম্পর্কে সব জেনে, খোঁজ-খবর নিয়েই ঘোষণা দিচ্ছে।

এদিকে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ তিন বছর আগে শেষ হয়েছে। মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটির প্রয়োজন। জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে ভোটার এবং কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে যোগ্যদের দিয়ে কমিটি হলে জেলা রাজনীতির জন্য ভালো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর: ৭ বছরেও জোড়া লাগেনি সেতু

বিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ
সাত বছরেও জোড়া লাগেনি তাহিরপুরের শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর দুই পাড়। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
সাত বছরেও জোড়া লাগেনি তাহিরপুরের শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর দুই পাড়। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।

এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।

সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত

এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।

তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’

এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী: টার্মিনাল নেই, নাকাল মানুষ

  • ৫৩ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি।
  • যেখানে-সেখানে যাত্রী ও মালপত্র ওঠানো-নামানোয় বাড়ছে যানজট।
  • গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
বাস টার্মিনাল না থাকায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের উর্বশী সিনেমা হলের সামনে সড়কে যাত্রী ওঠানো-নামানোয় যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাস টার্মিনাল না থাকায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের উর্বশী সিনেমা হলের সামনে সড়কে যাত্রী ওঠানো-নামানোয় যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।

জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।

উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।

ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’

শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

একই আসনে মুখোমুখি বিএনপি ও জামায়াত দুই ভাই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আজিজুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক
আজিজুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।

তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।

গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনলাইন ট্রেডিং সাইট

অনলাইনে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব ৪ শতাধিক পরিবার

  • সবার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নে।
  • ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগের দাবি।
  • গত সোমবার সকালে সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
  • পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী মুখ খুলতে রাজি হননি।
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৭: ২৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লিনো ইমেক্সে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছে তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রতারণার শুরু সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আশিক (২২) নামের এক যুবক গ্রামের দুই তরুণ—নিরব হোসেন ও আকাশ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশিক তাঁদের জানান, ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে টাকা রাখলে প্রতিদিন শতকরার ভিত্তিতে লাভ পাওয়া যায়। ১০০ টাকায় দৈনিক ৪ টাকা লাভ। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে নিরব ও আকাশ কাজ শুরু করেন এবং কিছু টাকা লাভও তোলেন। এরপর তাঁরা গ্রামের আরও পাঁচজনকে নিয়ে মোট সাতটি দল তৈরি করে এই ‘লাভজনক’ স্কিম দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকেন।

এই চক্রের প্রলোভনে পড়ে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া, শ্রীকোল, নেহালপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া বড়শলুয়াসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ নিরব ও আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা জমা দিতে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এই দুই হোতা বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।

জানা যায়, শুধু নিরবের গ্রুপেই সদস্যসংখ্যা ছিল ২১৮ জন। নিজেদের বিনিয়োগ এবং অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া কমিশন মিলিয়ে নিরব ও আকাশ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, যা দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের এক কৃষক জানান, প্রথমে বিশ্বাস না হলেও গ্রামের অনেকের লাভ দেখে তিনি হালের গরু বিক্রি করে এবং নিজের জমানো টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ওই সাইটে দিয়েছিলেন। এখন সাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব হারিয়েছেন।

একই গ্রামের কালাম নামের একজন বলেন, ‘টাকা দ্বিগুণ হওয়ার আশায় উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পাখি ভ্যানটি বিক্রি করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমি পথের ফকির।’ ইজিবাইক চালক মিজানুর ছোট ভাইয়ের কথায় ১৮ হাজার টাকা জমা করে এখন বাকরুদ্ধ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নেহালপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামেরই দুই শতাধিক ব্যক্তি ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে ৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন। এ ছাড়া শ্রীকোল, নেহালপুর, কুন্দিপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও বড়শলুয়ার অন্তত দুই শ পরিবার বিভিন্ন পরিমাণে বিনিয়োগ করেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন—কেউ হালের গরু, গাভি, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে, কেউ এনজিও বা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ-বা জমি বন্ধক রেখে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।

গত সোমবার সকালে যখন সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গ্রামজুড়ে নেমে আসে হাহাকার। মান-সম্মানের ভয় এবং পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বলেন, ‘নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অসচেতনভাবে এই অনলাইন সাইটে টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। নেহালপুর ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত