Ajker Patrika

দর্শকের মন ছুঁয়ে গেল ‘কলঙ্কিত সমাজ’

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি 
‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আধুনিক জীবনযাত্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্য যাত্রাপালা। সাধারণ মানুষের বিনোদনের পন্থা কমে এসেছে। তাই এই লোকসংস্কৃতি পুনরুদ্ধারে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে মানিকগঞ্জের গিলন্ড বন্ধু মহল নাট্যগোষ্ঠী।

গিলন্ড বন্ধু মহল নাট্যগোষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে মঞ্চস্থ হলো জীবনমুখী যাত্রাপালা ‘কলঙ্কিত সমাজ’। এতে সমাজের প্রভাবশালীদের বিভিন্ন অসংগতি-নির্যাতনের কথা উঠে এসেছে। যাত্রাপালায় উচ্চারিত হয়েছে অন্যায়ের প্রতিবাদে অবহেলিতদের উত্থানের কথা। এ ছাড়া নাচ-গানের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে রোমাঞ্চকর দৃশ্য।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড দরবার শরীফে যাত্রাপালা কলঙ্কিত সমাজ মঞ্চস্থ হয়। এটি লিখেছেন বিশিষ্ট লেখক আমজাদ হোসেন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. লাভলু মিয়ার প্রযোজনায় পালাটি পরিচালনা করেছেন অভিনেতা ও পরিচালক সেলিম খান।

প্রযোজক মো. লাভলু মিয়া বলেন, যাত্রাপালাটি একেবারেই গ্রামবাংলার একটি সহজ-সরল পরিবারের কাহিনি। সমাজের বিভিন্ন অসংগতি-নির্যাতন ও প্রতিবাদের উত্থানকাহিনী উঠে এসেছে এই পালাটিতে। আধুনিক কালে এসে যাত্রাপালার কথিত যে আধুনিক সংস্করণ বর্তমানে দেখা যায়; তাতে ভালো কোনো গল্প নেই, পালার আমেজ নেই। কিন্তু কলঙ্কিত সমাজ পালাটি দর্শক খুব ভালোভাবে নিয়েছে।

‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যাত্রাপালাটিতে অভিনয় করেছেন আবুল বাশার, কালাম, প্রিয়া, লাভলু, তমা, সাবিত্রী, সেলিম খান, এরশাদ, আকরামসহ অনেকে।

‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘কলঙ্কিত সমাজ’ যাত্রাপালার দৃশ্য উপভোগ করছেন দর্শকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী হাজারো মানুষ যাত্রাপালাটি উপভোগ করে প্রশংসা করেছেন। তাঁরা বলেন, গ্রাম বাংলায় এখন হারিয়ে যেতে বসেছে যাত্রাপালা। এখন আর আগের মতো পালা মঞ্চস্থ হয় না। কিন্তু ‘কলঙ্কিত সমাজ’ দেখে খুব ভালো লেগেছে। সমাজের প্রভাবশালীদের অন্যায়ের কথা উঠে এসেছে। আমরা চাই এমন ভালো যাত্রাপালা গ্রামে আরও মঞ্চস্থ হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগ, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
মওদুদ আহমেদ শাওন। ছবি: সংগৃহীত
মওদুদ আহমেদ শাওন। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান, মেম্বারের ভুয়া সিল-স্বাক্ষর বসিয়ে ১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগে মওদুদ আহমেদ শাওন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলহাজতে নেওয়া হয়। মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুল ইসলাম হারুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের একটি দোকান থেকে শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার শাওন মোহনগঞ্জ পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উদ্যোক্তা ঝর্ণা আক্তারের স্বামী।

জানা গেছে, চার-পাঁচ বছর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে টেকনিশিয়ান পদে আবেদন করেন শাওন। চাকরি না হলেও তখন থেকেই ওই কার্যালয়ের সব অনলাইনের কাজকর্ম শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) টিসিবি কার্ড সংযোজন ও যাচাই বাছাই-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট এবং জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ডসহ সবকিছু নিজের হাতে নিয়ে নেন শাওন। ইউএনও কার্যালয়ে কাজের প্রভাব খাটিয়ে অন্য সাত ইউনিয়নের জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধনসহ সব কাজ কবজা করেন তিনি। চেয়ারম্যান, মেম্বারদের সিল-স্বাক্ষর নকল করে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন তৈরির বাণিজ্য শুরু করেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমি আসার পরই সব পাসওয়ার্ড শাওনের থেকে নিয়ে নিয়েছি। বাইরের জেলার ১৩ জন লোককে এখানকার জন্মনিবন্ধন করে দেওয়ার বিষয়টি টের পাওয়ার পরই অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশি তদন্তে বিস্তারিত বের হয়ে আসবে।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহনগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয় পাল বলেন, সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আজ বিকেলে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালতে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. হাফিজুল ইসলাম হারুন বলেন, ‘চেয়ারম্যান-মেম্বারের ভুয়া সিল-স্বাক্ষর বসিয়ে অন্য জেলার ১৩ নাগরিককে এখানকার জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন শাওন। ওই ১৩ জন রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হচ্ছে। শাওন তাঁর ব্যবহৃত সাইটটির ইউজার পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়েছে বলে দাবি করলেও প্রাথমিক তদন্ত এটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি, তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।’ ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিব বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৫
আবাহনী মাঠ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ছবি: ডিএমপি
আবাহনী মাঠ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ছবি: ডিএমপি

রাজধানীর ধানমন্ডিতে আবাহনী মাঠ এলাকায় একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্রটি জানায়, এ ঘটনায় কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এর আগে, গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে মগবাজারের নিউ ইস্কাটন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে সিয়াম মজুমদার (২১) নামের এক তরুণ নিহত হন। ককটেলটি সিয়ামের মাথায় সরাসরি আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় সিয়ামের বাবা হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, এখনো কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুরে ভেসে উঠছে মরা মাছ, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বিবির পুকুরে ভাসছে মরা মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিবির পুকুরে ভাসছে মরা মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুরে ভেসে উঠেছে বিভিন্ন জাতের মরা মাছ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুকুরটিতে এই মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায়ই পুকুরটিতে মাছ মরে ভেসে ওঠে। এতে চারপাশে পচা-গলা মাছের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। পুকুরপাড় দিয়ে নাক চেপে চলাচল করতে হয়। পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, বাণিজ্যিকভাবে পুকুরটিতে মাছ চাষ করায় বিভিন্ন সময় মাছ মরার ঘটনা ঘটছে। এতে পুকুরের পানিতে দূষণ ঘটছে। দুর্গন্ধে চারপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

বিবির পুকুরের সঙ্গে অতীতে কীর্তনখোলা নদীর সংযোগ ছিল। বর্তমানে নদী থেকে পানিপ্রবাহ বন্ধ থাকাসহ ময়লা ফেলার কারণে পানি নষ্ট হয়ে গেছে। নীল রং ধারণ করা পানিতে একধরনের স্তর পড়ে গেছে।

জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) তত্ত্বাবধানে থাকা বিবির পুকুরটি ইজারা নিয়ে মাছচাষিরা বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করেন। বিভিন্ন সময় সেই মাছ মরে পচে ভেসে উঠে। এতে দুর্গন্ধে পুকুরপাড়ে আসা বিনোদনপ্রেমী ও পথচারীদের টেকা দায় হয়ে পড়ে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, পুকুরপাড়ে এসে মরা মাছের গন্ধে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। দ্রুত মরা মাছ অপসারণ করে পুকুরটির পানিদূষণ রোধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশালের সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্পটে বিবির পুকুরটির অবস্থান। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করায় নানা সময় মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হয়তো পুকুরের পানির মান খারাপ হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশনকে উচিত হবে, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশালের পরিদর্শক রকিব উদ্দিন বলেন, বিবির পুকুরের পানিতে অক্সিজেন কমে গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পানির মান দেখতে হবে। তিনি বলেন, তাঁরা বিভিন্ন পুকুর, জলাশয় এবং নদীর পানির মানমাত্রা পরীক্ষা করেন। বিবির পুকুরের পরিস্থিতি পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, মরা মাছ দ্রুত অপসারণের জন্য ইজারাদারকে বলা হচ্ছে। যদিও তাঁরা পুকুরের পানি দূষণ ঠেকাতে কিছু অংশ জাল দিয়ে আটকে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বিবির পুকুর বরিশাল নগরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী জলাশয়। উনিশ শতকে জনসাধারণের জলকষ্ট দূর করতে জিন্নাত বিবি নামে এক মুসলিম নারীর উদ্যোগে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই পুকুরটি সদর রোডের পূর্ব পাশে অবস্থিত এবং এটি বরিশাল নগরের সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি এখন আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঋণমুক্তির স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন সিয়াম, নিভে গেলেন হাতবোমায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মগবাজার ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদার (২১)। ছবি: সংগৃহীত
মগবাজার ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদার (২১)। ছবি: সংগৃহীত

পরিবারের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য ছোটবেলা থেকেই চেষ্টা করেছেন সিয়াম মজুমদার (২১)। তাই চার বছর আগে ঋণগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে খুলনা থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। নিউ ইস্কাটনের একটি মোটরকার ডেকোরেশন দোকানে কাজ করে পরিবারকে সহায়তাও করতেন তিনি। ঋণ পরিশোধের পর দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাঁর।

কিন্তু গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেলের বিস্ফোরণে সিয়ামের সেই স্বপ্ন থেমে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ককটেলটি ওপর থেকে এসে তাঁর মাথায় লাগে।

সিয়ামের পরিবার জানায়, ঢাকায় এসে রিকশা চালানো শুরু করেন তাঁর বাবা আলী আকবর মজুমদার। মা সিজু বেগম বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ নেন। ছোট ভাই সেজান মজুমদারও ইস্কাটন এলাকায় একটি গাড়ি ডেকোরেশনের দোকানে কাজ করেন। পরিবারের সবাই মিলে চেষ্টা করছিলেন ঋণমুক্ত হওয়ার।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউ ইস্কাটনের দুই হাজার গলির ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, শোকে ভেঙে পড়েছেন সিয়ামের মা সিজু বেগম। বিলাপ করতে করতে তিনি বলেন, ঢাকায় এসে তাঁদের সব শেষ হয়ে গেছে। ছেলের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

ছোট ভাই সেজান মজুমদার বলেন, পরিবারের আর্থিক সংকট কাটিয়ে ভাই বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ এই মৃত্যু পুরো পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছেলের মরদেহ নিতে গিয়ে বাবা আলী আকবর মজুমদার বলেন, ভাগ্য বদলাতে ঢাকায় এসে ছেলেকে হারাতে হবে—এমনটা জানলে তিনি কখনোই ঢাকায় আসতেন না।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ১০ মিনিটে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া বিস্ফোরকদ্রব্যের আঘাতে সিয়াম মজুমদার নিহত হন। ঘটনার সময় তিনি মগবাজার-নিউ ইস্কাটন সড়কে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

ঘটনাস্থলের চা-দোকানি মো. ফারুক আজ বিকেলে বলেন, চা বানানোর সময় বিকট শব্দ হয়। পরে দেখা যায়, সিয়াম মাটিতে পড়ে আছেন, মাথা থেকে রক্ত ঝরছে।

এ ঘটনায় সিয়ামের বাবা হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, এখনো কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত