Ajker Patrika

মাদারীপুরের শিবচর: নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পদ্মাপাড়ে বসেছে ‘ইলিশের হাট’

  • ইলিশ বিক্রির স্থানে খাবারের দোকানের পসরাও বসিয়েছে অনেকে
  • অভিযানের আগেই চরাঞ্চলের কাশবনে লুকিয়ে পড়ে বিক্রেতারা
  • পদ্মাপাড়ের হাটগুলোতে আমরা বড় অভিযান চালাব: ইউএনও
ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর) 
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ২৯
পদ্মাপাড়ে বসা ইলিশের হাট। গত শুক্রবার শিবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
পদ্মাপাড়ে বসা ইলিশের হাট। গত শুক্রবার শিবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও থেমে নেই ইলিশ শিকার। অসাধু জেলেরা দিনরাত পদ্মায় জাল ফেলছে। নদীপাড়েই বসিয়েছে ‘হাট’। প্রকাশ্যে চলছে বিক্রি। মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মাবেষ্টিত বন্দরখোলা, মাদবরেরচর, চরজানাজাত ও কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ে বসেছে এমন অস্থায়ী হাট।

এদিকে ইলিশ শিকার বন্ধে পদ্মায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম ইবনে মিজান। তবে লোকবল কম থাকায় এবং ইলিশ শিকারিরা সংঘবদ্ধ এবং অসংখ্য লোক একত্রে থাকায় অভিযানকালে হামলারও শিকার হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

গত শুক্রবার শিবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরা পদ্মাপাড়ে একটি অস্থায়ী ইলিশের হাট ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ বিক্রিকে কেন্দ্র করে লোকজনের আনাগোনা বাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা মুখরোচক নানা খাবারের দোকানের পসরাও সাজিয়ে বসেছে।

কাজিরসূরা পদ্মাপাড় ঘুরে আরও দেখা গেছে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই একের পর এক মাছ ধরার ট্রলার এসে ভিড়ছে ঘাটে। ঝুড়ি ভরে মাছ নিয়ে পাড়ে নামছে জেলেরা। কেউ আবার ট্রলারে থাকা অবস্থায় বিক্রি করে দিচ্ছে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে। তারা আবার নদীপাড়ে ডালি সাজিয়ে বসেছে মাছ নিয়ে। সাধারণ ক্রেতারা দরদাম করে কিনছে ইলিশ। শিবচরসহ আশপাশের এলাকা থেকে আয়োজন করে পদ্মাপাড়ে আসছে ক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পদ্মাপাড়ের কাজিরসূরা, হীরাখাঁর বাজারসহ তিন-চারটি স্পটে দেদার ইলিশ বিক্রি করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, শিবচরের মূল ভূখণ্ড থেকে চরাঞ্চলে প্রশাসন বা সেনাবাহিনীর প্রবেশ দেখলেই খবর পৌঁছে যায় অস্থায়ী হাটের বিক্রেতাদের কাছে। অভিযান পরিচালনার আগেই চরাঞ্চলের কাশবনে লুকিয়ে পড়ে বিক্রেতারা। পাড়ে থাকা জেলেরাও ট্রলার নিয়ে মাঝ নদীতে সরে পড়ে।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা থেকে কেনা পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকলেও জেনে-শুনে কেন মাছ কিনতে এসেছেন—এমন প্রশ্নে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘দাম কমে পাওয়া যায়। তা ছাড়া পদ্মা থেকে ধরা একদম তাজা মাছ সবার কাছেই লোভনীয়। আমি না কিনলেও কেউ না কেউ তো কিনবেই।’

ভাঙ্গা থেকে মাছ কিনতে আসা সুজন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আসলে আমরা ঘুরতে এসেছি। দামে কম পেলে মাছও কিনব।’

স্থানীয়রা জানান, এ বছর সরাসরি জেলেরা ভোক্তাদের কাছে মাছ বিক্রি করছে না। আলাদা বিক্রেতা আছে। তারা জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে তারপর বিক্রি করছে। মাছের দাম তুলনামূলক বেশি থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসে মাছ কিনতে। এ কারণে জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ তো করেইনি, বরং নতুন জাল তৈরি করে সংঘবদ্ধ হয়ে নদীতে নামে। দাদনে (ঋণ) টাকা এনেও এবার মাছের ব্যবসায় নেমেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ইলিশ ধরায় জেলেদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে, তবু তাদের থামানো যাচ্ছে না।

ইউএনও এইচ এম ইবনে মিজান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। তবে পদ্মাপাড়ের হাটগুলোতে আমরা বড় অভিযান চালাব। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওখানে জেলে এবং স্থানীয় বিক্রেতারা সংঘবদ্ধ এবং সংখ্যায় অনেক। আমরা লোকবল কম থাকায় নদীতে জেলেদের হামলার শিকারও হতে হচ্ছে। তবে হাটগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বড় ধরনের অভিযান চালানো হবে শিগগির।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিগত সরকারের সমর্থকদের পক্ষে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রায় সব দল: ডিআইজি হাবীব

চীনের বেলুন সহ্য হয়নি, এখন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে কাতারকে বিমানঘাঁটি দিচ্ছেন ট্রাম্প

চট্টগ্রামে কনসার্টে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের জেরে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩

ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানার পর লাপাত্তা মেজর জেনারেল কবীর, সন্ধানে তৎপরতা জানাল সেনাসদর

জুলাই জাতীয় সনদ: গণভোটের সময়ে অনড় জামায়াত-এনসিপি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত