Ajker Patrika

পদ্মায় বিলীন বিজিবির বিওপি, নিরাপত্তাহীনতায় নদীপারের হাজারো মানুষ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এই ভাঙনে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) একটি বিওপি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে এই মাদক ও চোরাচালানপ্রবণ এলাকার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।

গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি পদ্মায় তলিয়ে যায়। একই ভাঙনে আতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এই সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানা অবস্থিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা চার দিনের ভাঙনে বিওপির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আগেই বিলীন হয়েছে, আর বাকি অংশটুকুও দ্রুত ভাঙনের কবলে পড়ছে।

এর আগেও এই এলাকার আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার বিলীন হয়েছে। ২০০৫ সালে ৮১/ ২ এস ও ৮১/ ৩ এস নম্বরের দুটি আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নদীতে ধসে যায়। সর্বশেষ, ২০২৩ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জিও ব্যাগ দিয়ে স্থাপনাটি রক্ষার চেষ্টা করেও সফল হয়নি। এবার নতুন করে ৮৪/ ৪ এস নম্বরের একটি পিলার ভেঙে গেছে এবং আরও ছয়টি পিলার হুমকির মুখে রয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিওপি। ছবি: আজকের পত্রিকা

শুক্রবার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আশঙ্কা থাকায় আগেই উদয়নগর বিওপি থেকে সদস্য ও সরঞ্জাম চর চিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে চর চিলমারী বিওপি থেকেই সীমান্তে নিয়মিত টহল চলছে। সীমান্ত রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নতুন একটি সীমানা পিলার ভাঙলেও সীমান্ত নিয়ে কোনো জটিলতা হবে না।’

তিনি আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার পোলাডাংগা বিওপি এখন পদ্মা নদীর ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র দুই মিটার দূরে এবং শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর বিওপি মাত্র ১৪ মিটার দূরে অবস্থান করছে। ঝুঁকির কারণে এসব বিওপির মালামাল, অস্ত্র-গোলাবারুদ, যানবাহন ও সিগন্যাল সরঞ্জাম ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী ডিএমসি বিওপিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিজিবি সদর দপ্তরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এসব বিওপি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রম চলছে।

অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, তিন মাস আগে করা এক পর্যবেক্ষণে পদ্মা-গড়াই নদীর অন্তত ১৭টি স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে পানি কমে যাওয়ায় ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানি কমার কারণে পদ্মায় ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। দৌলতপুর ও ভেড়ামারার আরও কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত