Ajker Patrika

কুমারখালীতে বালুঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হামলা, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
বালুঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বালুঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বালুঘাট (বালুমহাল) নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ফরিদ হোসেন (২৮) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁটের আঘাতে আরও দুজন আহত হন। উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনী এলাকার গড়াই নদে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে আজ শনিবার সকালে সাংবাদিকেরা আহত ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মামুন ও সুজন নামের দুই ব্যক্তি তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম ফরিদ হোসেন। তিনি চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া এলাকার হুজুর আলীর ছেলে। তিনি বালুর ঘাট দেখাশোনার কাজ করতেন। আহতর অপর দুজন হলেন একই এলাকার ইদ্রিসের ছেলে সবুজ (৩৮) ও আশরাফুল ইসলামের ছেলে হাসিবুল হাসান শান্ত (২৮)।

পুলিশ আহত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে বলছে, ‘লাহিনী এলাকায় গড়াই নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছি, তাঁরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

বালুঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বালুঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে হামলায় আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আহত সবুজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতে লাহিনী এলাকার গড়াই নদ থেকে বালু তোলার কাজ চলছিল। চারজন ঘুমাচ্ছিলেন আর আমরা তিনজনসহ শ্রমিকেরা বালু তুলছিলাম। শেষ রাতের দিকে পশ্চিম পাশের বাগানের ভেতর থেকে ১০-১২ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় ফরিদ নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন।’

সবুজ আরও বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁটের আঘাতে আমি এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছি। এ ছাড়া দুর্বৃত্তরা বালু ঘাটের ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা ও কয়েকজনের মোবাইল নিয়ে গেছে।’

হামলাকারীদের চিনতে পেরেছেন কি না, জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘দুজনকে চিনতে পেরেছি। প্রশাসনের কাছে তাদের নাম জানিয়েছি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসিবুল হাসান শান্ত বলেন, ‘গুলির শব্দ শুনে আমি জান বাঁচানোর জন্য দৌড়ে পালাতে গেলে আমাকেও আঘাত করা হয়।’

দুই দিন আগে একই বালুর ঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় আহত শামীম বলেন, ‘ছেঁউড়িয়া এলাকার সাজেদুর ভাই বালুর ঘাটের ইজারা পেয়েছেন। লাহিনী এলাকার মজিদ নামের এক ব্যক্তি ওই ঘাটের শেয়ার দাবি করেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আমাকেও মারধর করা হয়।’

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভোররাতে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত। তাঁর চিকিৎসাসেবা চলছে।’

এ বিষয়ে জানতে সাজেদুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা ধরেননি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘জানতে পেরেছি, লাহিনীপাড়ার কয়েকজন বালুর ঘাটে গুলির ঘটনা ঘটিয়েছেন। বৈধ বালুঘাট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি একজন ইজারা পেয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমারখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...