Ajker Patrika

শ্বাসরোধে হত্যার পর ড্রেন থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
শ্বাসরোধে হত্যার পর ড্রেন থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার

সেচের ড্রেন থেকে উপুড় করা অবস্থায় কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া সনচিতা হোসেন সেজ্যোতি (১৩) নামের ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাতক্ষীরা কলারোয়ার জালালাবাদ ইউনিয়নের মাস্টার পাড়ার মাঠে আলাউদ্দিন সরদারের কুল বাগানের ড্রেনে তার মরদেহ পাওয়া যায়। 

নিহত স্কুলছাত্রী সানচিতা হোসেন সেজ্যোতি (১৩) জালালাবাদের মাস্টার পাড়ার কৃষক সোহরাব হোসেন পলাশের দ্বিতীয় স্ত্রী লায়লা পারভীনের মেয়ে ও কলারোয়া গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। 

মেয়ের বাবা সোহরাব হোসেন পলাশ বলেন, আফিল কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে যশোর বারান্দী পাড়ায় জন্মগ্রহণ করে সানচিতা হোসেন সেজ্যোতি। সে দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে। গত ১ বছর আগে প্রতিবেশী আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমানের সঙ্গে সক্ষতা গড়ে ওঠে সেজ্যোতির। আব্দুর রহমান কলারোয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গত ছয় মাস আগে সেজ্যোতিকে নিয়ে পালিয়ে যায় আব্দুর রহমান নামের ওই যুবক। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা-পুলিশের সহযোগিতায় মীমাংসা করা হলেও তার রেশ কাটেনি। এর জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যা হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। 

সোহরাব হোসেন পলাশ আরও বলেন, গতকাল এশার নামাজের পর থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে রাত ১.৩০ এর দিকে থানায় গিয়ে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় একটি ডায়েরি করে বাড়ি ফেরেন ৷ ভোরে খবর পান মেয়ের মরদেহ পার্শ্ববর্তী খেতের ড্রেনে পড়ে আছেন। তবে এ হত্যার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান বলেন, ‘গত ছয় মাস আগে আব্দুর রহমান নামের এক যুবকের সঙ্গে সেজ্যোতি পালিয়ে যায়। পরে থানা-পুলিশের মাধ্যমে এই বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। আজ ড্রেনে উপুড় করা অবস্থায় মেয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে এমন সংবাদ পেয়ে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে থানা-পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তদন্ত করছে।’ 

মেয়ের দাদা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার নাতনি দেখতে সুন্দরী ছিল। তাকে অনেক ছেলে যেমন পছন্দ করত তেমনি বিরক্তও করত। তবে সেজ্যোতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার বিষয়টি যাতে দিনে দিনে চোখের আড়াল হয়ে না যায় এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হয় সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাই।’ 

আব্দুর রহমানের বাবা আলতাফ হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে কখনোই হত্যা করতে পারে না। অন্য কেউ হত্যা করে দোষ আমার ছেলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন করবে এবং যেই জড়িত এ হত্যার পেছনে সে অবশ্যই শাস্তি পাবে।’ 

কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, ‘গতকাল রাত দেড়টার দিকে মেয়ের বাবা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ভোরবেলায় জালালাবাদ এলাকার স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জানায় মাঠে কৃষি খেতের ড্রেনে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম গিয়ে তদন্তে কাজ করছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে অন্য কোথাও শ্বাসরোধ করে মেয়েকে হত্যা করা হয় পরে কুল বাগানের সেচের পানি যাতায়াতের ড্রেনের মধ্যে উপুড় করে ফেলে রাখা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সাদা ও নেবিব্লু রং এর দুটি ওড়না এবং নতুন লাল রঙের জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’ 
 
প্রাথমিক তদন্ত সূত্রে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী কলেজ পড়ুয়া যুবক আব্দুর রহমানের নামের এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। চারটা থেকে পাঁচটা বিশেষ ক্লু নিয়ে তদন্তে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এই হত্যার পেছনে যে বা যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত