Ajker Patrika

জুলাই আন্দোলনে গুম: খুলনার সাবেক মেয়র, এমপিসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ২২: ০৮
জুলাই আন্দোলনে গুম: খুলনার সাবেক মেয়র, এমপিসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সাবেক মেয়র, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক পুলিশ কমিশনারসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গুমের অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক এবং খুলনা জেলা শাখার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি এই অভিযোগ করেন। আজ মঙ্গলবার প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আজকের পত্রিকাকে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাপ্পির করা অভিযোগে খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল, এস এম কামাল হোসেন, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আব্দুস সালাম মূর্শেদী, শেখ হেলাল উদ্দিন, যুবলীগ নেতা ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেল, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আক্তারুজ্জামান বাবু, রশীদুজ্জামান মোড়ল, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল সুজনসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বাদী সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের শুরুতে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং খুলনায় আন্দোলন করেন। ৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। পরদিন তিনি মেসবাহ উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে পূর্বঘোষিত সড়ক ও রেল অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিতে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকা থেকে নতুন রাস্তার মোড়ের দিকে ইজিবাইকে যাত্রা শুরু করেন। সোনাডাঙ্গা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছানোর পর ১০-২৫ জনের একটি দল ইজিবাইক থামিয়ে তাঁকে জোরপূর্বক নামিয়ে নেয়। মুখোশধারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা দেশি অস্ত্র প্রদর্শন করে তাঁকে চোখ, মুখ, হাত ও পা বেঁধে একটি প্রাইভেট কারে তুলে অকথ্য গালি ও শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে তাঁকে অন্ধকার একটি কক্ষে আটকে রেখে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় নির্যাতন আরও বাড়ানো হয়।

সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘১২ ঘণ্টার বেশি সময় চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় আমাকে আটকে রাখা হয়। পানি চাইলে গালিগালাজ করা হয়। পরে আড়ংঘাটা বাইপাস মোড়ের সামনে একটি ফাঁকা বাগানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে।’

জানতে চাইলে অভিযোগকারী সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে জুলাই অভ্যুত্থান দমনের জন্য আমাকে গুম ও নির্যাতন করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে কেউ যাতে ন্যায্য দাবিতে রাজপথে নামলে আর গুম না হয়, তার নিশ্চয়তা চাই।’

সাজিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় অনেকেই ছিল, যাদের চেহারা মুখোশ বা মাস্কে ঢাকা ছিল। কেউ কেউ সরাসরি না থাকলেও গুমের ঘটনার পেছনে সহযোগী ভূমিকা পালন করেছে বলেও আমার ধারণা। আমি তদন্ত সংস্থার কাছে অনুরোধ করব, দোষীদের খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত