Ajker Patrika

মাগুরায় সরকারি দরে মিলছে না পণ্য, ক্রেতা-বিক্রেতা হাতাহাতি

মাগুরা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪, ১৫: ৪২
মাগুরায় সরকারি দরে মিলছে না পণ্য, ক্রেতা-বিক্রেতা হাতাহাতি

মাগুরায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরকারনির্ধারিত দামে মিলছে না কোনো পণ্য। সরকারি দামে পণ্য বিক্রি করলে লোকসান হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। 

গতকাল মঙ্গলবার মাগুরা শহরের নতুন বাজারে গিয়ে জানা গেছে, মুগ ডালের দাম নিয়ে বাজারের এক মুদি দোকানি ও ক্রেতার মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। ক্রেতা সেলিম হোসেন বলেন, ‘মুগ ডাল সরকারি হিসাবে দর ১৬৫ টাকা কেজি। দোকানদার চাইছে ২১০ টাকা। এই দাম নিতে বললে ব্যবসায়ী রেগে আমাকে মারতে আসেন।’ বিক্রেতা প্রদীপ দাস মারতে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ডাল বেশি দামে কেনা। নির্ধারিত দাম দিলে আমার অনেক লোকসান হয়ে যাবে।’ 

পণ্যের দাম নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে জেলা সদরের রামনগর বাজারে। আজ বুধবার সকালে এক স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে ওই বাজারের এক দোকানির। সেখানে গিয়ে জানা গেছে, দোকানি হারুন মিয়ার খেসারি ও মুগ ডালের দর নিয়ে হাতাহাতি করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে। পরে স্থানীয়রা তা মিটিয়ে দেন। 

মাগুরা পুরোনো বাজার এলাকায় আজ বুধবার এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকায়। একই সময়ে শহরের ভায়না মোড় বাজারে ৭৮০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সরকারনির্ধারিত দাম দেওয়া আছে ৬৬৫ টাকা। এই দামে মাগুরায় গত ১০ বছর গরুর মাংস বিক্রি হয়নি বলে জানান স্থানীয় মাংস ব্যবসায়ীরা। 

ভায়না মোড়ের বাজারে মোসলেম নামের এক মাংস ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছে, সেটা আমরা জানতাম না। পাবলিক এসে মোবাইল ফোন দেখাইয়ে সেই তালিকা অনুযায়ী দাম নিতে বলতেছেন। এতে আমরা হতাশ। কারণ ওই দামে মাংস বেচলে পুঁজি সব হারায় যাবে। বেচা সম্ভব না।’ 

শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকার মুদিদোকানি তবির হোসেন বলেন, ‘দাম বসায় দিলে তো হবে না। আমাদের তো বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কোনো লাভ না থাকলে আমরা চলব কীভাবে?’ 

মাছের বাজারেও সরকারনির্ধারিত দাম বিক্রেতারা মানতে চাইছেন না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র স্থানীয় বাজারে মাছ কিনতে যান। তিনি বলেন, ‘সরকারনির্ধারিত দামে পাঙাশ মাছ বিক্রি হওয়ার কথা ১৭০ টাকা কেজি। সেখানে কিনছি ২১০ টাকার ওপরে। কে শোনে কার কথা। মাছের দাম একটু বেশি হওয়ায় কিছু বাজারে ক্রেতাসংকট দেখা গেছে।’ 

মাগুরা পুরোনো বাজার এলাকায় পাইকারি বিক্রেতা গৌরি সাহা বলেন, ‘মুগ ডাল, ছোলা, খেসারির ডাল এখন তো রমজান মাসে বেশি চলে। তাই চাহিদা বেশি থাকে। জোগান কম থাকায় অনেক সময় দাম বেশি হয়। নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির চেষ্টা করছি। তবু লোকসানের ভয়ে কিছু পণ্য ওই দামে বিক্রি করা যায় না।’ 

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা সরকার নির্ধারণ করে। কিন্তু বাজারে ব্রয়লার ২৩০ ও সোনালি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রায় সময় বাগ্‌বিতণ্ডা লেগে থাকছে ক্রেতাদের। 

এ বিষয়ে মাগুরা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাজারে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। কিছু দোকানে দাম নিয়ে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করছি। যেহেতু রমজান মাস চলছে, তাই আপাতত সতর্ক করলেও পরে নির্দেশনা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত