Ajker Patrika

যশোরে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভা করবে আ. লীগ: নানক

যশোর প্রতিনিধি
যশোরে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভা করবে আ. লীগ: নানক

আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল যশোর শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, বাগেরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যশোর শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসমাগম জনসমুদ্রে ঘটার মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগের স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় রূপ নিবে। এই জনসভা শুধু স্টেডিয়ামের ভেতর সীমাবদ্ধতা থাকবে না; এই জনসভাটি সমগ্র যশোর শহরেই একটি জনসভায় রূপ নিবে। এই জনসভাটি আওয়ামী লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৭ মাস পর জনগণের সঙ্গে সরাসরি কোনো জনসমুদ্রে উপস্থিত হবেন।  কাজেই এটি দেশবাসীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জনসভায় তিনি শুধু যশোরবাসীর জন্য না; তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। দেশের অর্থ সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপড়ে ভাষণ দেবেন।’

আগামী ২৪ নভেম্বর জনসভার জন্য যশোর শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে চলছে প্রস্তুতির কাজনানক আরও বলেন, ‘আমাদের সভাসমাবেশ কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর পাল্টা কোনো কর্মসূচি নয়। আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি বলেই এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আগামী বছরের ডিসেম্বর বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই নির্বাচনটি দেশবাসীর কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ; তেমনি দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তৃণমূল আওয়ামী লীগের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে দেশনেত্রী শেখ হাসিনা তাদের কথা বলবেন। একই সঙ্গে তাদের বাকি চাওয়া-পাওয়া পূরণ করবেন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী আবহাওয়া নিয়েই যশোর দিয়ে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভা শুরু হচ্ছে।’

বিভিন্ন সভাসমাবেশে বিএনপি দাবি করছে ‘জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে। এটাই যদি বিএনপির দাবি হয়ে থাকে; তাহলে বিএনপি কেন নির্বাচনে আসতে ভয় পাচ্ছে’- এমন প্রশ্ন রেখে আব্দুর রহমানের বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের প্রস্তুতি না নিয়ে তারা কেন নৈরাজ্য সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সভা সমাবেশ করে বেড়াচ্ছে। তারা সমাবেশের নামে দেশে অস্থিতিশীল সৃষ্টি করছে। এরই প্রতিবাদে সামগ্রিকভাবে দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাই বিএনপির নৈরাজ্য প্রতিরোধ গড়তে যশোরে শেখ হাসিনার জনসভায় দলে দলে যোগ দিন।’

সমাবেশস্থল পরিদর্শনকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দীন, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় ব্যানারে যশোর দিয়ে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভা শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার। যশোর শহরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এ জনসভা। সম্প্রতি সময়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির গণসমাবেশ গুলোর চেয়ে বড় জমায়েত করতে চায় দলটি। ৫ বছর পর শেখ হাসিনার যশোর আগমনে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জনসভা উপলক্ষে এরই মধ্যে পোস্টারিং, মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চলছে। সভা-সমাবেশের বাইরে সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনসভা সফল করতে প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে মূল দল ছাড়াও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জনসভা সফলের লক্ষ্যে বিশেষ প্রস্তুতি সভা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া-আসার রাস্তা বাদ রেখে শহরের অন্যান্য সড়কে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। জনসভা ঘিরে শহরজুড়ে নিজেদের প্রচারণার ব্যানার কমিটি ছাড়াও পোস্টার করেছেন স্থানীয় নেতারা। শহরের দড়াটানা মোড়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ম্যুরাল চত্বর, গরিবশাহ সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার টানিয়েছেন দলীয় নেতারা। এরই মধ্যে বিশাল গণজমায়েতের জন্য চার হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় প্রথমবারের মতো আনা হয়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী কলরেডি কোম্পানির মাইক। জনসভার ভাষণ প্রচারে শহরজুড়ে থাকবে এই কোম্পানির দুই শতাধিক মাইক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেষতক বাঁচতে না পারা ‘সন্ত্রাসী’ বাবলার উত্থান যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
স্ত্রীর সঙ্গে নিহত সরওয়ার হোসেন বাবলা। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রীর সঙ্গে নিহত সরওয়ার হোসেন বাবলা। ছবি: সংগৃহীত

সরওয়ার হোসেন বাবলা। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ বায়েজিদ বোস্তামির চালিতাতলী হাজিরপোল এলাকায় গণসংযোগের সময় পেছন থেকে গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর।

দীর্ঘকাল চট্টগ্রামের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন বাবলা। ১৫টির বেশি মামলা তাঁর নামের পাশে। অনেকবার জেলও খেটেছেন। গত বছরের ২৭ জুলাই শেষবারের মতো গ্রেপ্তার হন তিনি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জামিনে বের হয়ে নামের পাশ থেকে সন্ত্রাসী তকমা সরাতে রাজনীতিতে মনোযোগ দেন বাবলা। চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জুড়তে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হয়ে রাজনৈতিক প্রচারণা অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়োজন করতে থাকেন বাবলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত পোস্ট দিতেন নিয়মিত। এমনকি মাদকের বিরুদ্ধে তাঁর কয়েকটি পোস্ট দেখা যায়।

নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালা মুন্সির বাড়ির খোন্দকারপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে বাবলা। আর্থিক অনটনে চালিতাতলী হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া তাঁর। স্ত্রী, মা-বাবা এবং পাঁচ ভাই ও দুই বোন নিয়ে বাবলার পরিবার। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ৪৩ বছর বয়সী বাবলা।

বাবলার পিতা আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার ছেলে ঠিকভাবে বাঁচতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁকে বাঁচতে দেওয়া হলো না। আমার ছেলেকে হত্যাকারীরা কয়েকবার মারতে চেয়েছিল এর আগে।’

ভাইদের মধ্যে সবার ছোট মো. আজিজ বলেন, ‘আমার ভাইকে এলাকাতেই হত্যা করার পরিকল্পনা আগেই প্রকাশ করেছিল হত্যাকারীরা। সবার সামনে সেটা বাস্তবায়ন করেছে তারা। আমার ভাইয়ের ওপর পরপর গুলি করার পরও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়নি। তারা দাঁড়িয়েই ছিল। আমাদের করার কিছু ছিল না। আজকে ভাইকে মেরেছে, কাল আমাকে মারবে। কে থামাবে তাদের। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলতে কিছু আছে?’

আজিজ আরও দাবি করেন, তিন বছর আগে বাবলা জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এরপরও পুলিশসহ একটি চক্র তাঁকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বিভিন্নভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চালায়।

চট্টগ্রামের আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রায় দেড় দশক আগে চট্টগ্রামে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমে আলোচনায় আসে বাবলা ও তাঁর বন্ধু ম্যাক্সনের নাম। সে সময় তাঁরা পরিচিত ছিলেন শিবির ‘ক্যাডার’ সাজ্জাদ হোসেন খানের (বড় সাজ্জাদ) ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে। সাজ্জাদ চট্টগ্রামের আট খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তাঁর স্ত্রী ভারতীয় (পাঞ্জাবের) হওয়ার সুবাদে তিনি সেখানে অবস্থানের সুযোগ পান।

২০১১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর প্রবর্তক মোড়ে একটি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র থেকে ১১ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় আলোচনায় আসেন বাবলা। একই বছরের ৬ জুলাই বায়েজিদ এলাকা থেকে তাঁকে একে–৪৭ রাইফেল, পিস্তুল, এলজি ও গুলিসহ আটক করে পুলিশ। যদিও ওই অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। অনেকে দাবি করেন, পদোন্নতির জন্য পুলিশ ওই অস্ত্র উদ্ধার দেখায়।

জেলে থাকাবস্থায় বাবলার সঙ্গে সাজ্জাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। জেল থেকে বেরিয়ে সাজ্জাদের অনুপস্থিতে বায়েজিদসহ আশপাশ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে বাবলা ও ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে। অস্ত্র মামলায় জামিন পেয়ে ২০১৭ সালে ৩১ আগস্ট কাতারে চলে যান বাবলা।

২০২০ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি কাতার থেকে দেশে ফিরলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরদিন তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের বায়েজিদ খানাধীন খোন্দকারপাড়া এলাকা থেকে একে-২২, এলজি ও বিপুল পরিমাণের গুলি উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ।

বাবলার পরিবারের দেওয়া তথ্যমতে, বায়েজিদ চালিতাতলী শিবির অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় সেসময় মহিম নামে একজন বড় ভাইয়ের সঙ্গে চলাফেরা করতেন বাবলা। শিবির ক্যাডার ও আট খুনের মামলার আসামি শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের হয়ে কাজ করতেন মহিম। মহিমের সঙ্গে চলাফেরা করায় তাঁকে শিবির বলা শুরু করে। বাবলা কখনো শিবিরের কোনো পদে ছিলেন না বলে দাবি করেন তাঁর পরিবার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বিএনপি নেতার বহুতল ভবনে রাতভর অভিযান: আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৭

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার সাতজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার সাতজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে রাতভর অভিযান চালিয়ে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ওয়াকিটকি, গুলি ও বিপুল সরঞ্জামসহ বিএনপি নেতা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এনামুল হক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টায় শুরু হওয়া এই অভিযান ভোররাতে শেষ হয়।

গ্রেপ্তার মো. এনামুল হক মোল্লা (৫০) উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে। তিনি মক্কা নগরীর মেছপালা বিএনপির সভাপতি ও বরমী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন শওকত মীর (৪৫), জাহিদ মিয়া (৪০), মোস্তফা কামাল (৩২), সিদ্দিকুর রহমান (৩৪), বুলবুল মিয়া (৩৫) ও তোফাজ্জল হোসেন (৪৫)।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে গাজীপুর সেনাক্যাম্পের মেজর খন্দকার মহিউদ্দিন আলমগীরের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে এনামুল হক মোল্লাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তথ্যমতে এনামুল হক মোল্লার বহুতল ভবনের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করে দুটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, চারটি গুলি, চারটি ওয়াকিটকি, চারটি বেটন, দুই ইলেকট্রনিক শক মেশিন, একটি হ্যামার নীলগান ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ওয়াকিটকি, গুলি ও বিপুল সরঞ্জামসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ওয়াকিটকি, গুলি ও বিপুল সরঞ্জামসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানা যায়, ১৫ বছর সৌদিতে ছিলেন গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেন তিনি। এর পর থেকে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। গাজীপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে চালিয়েছেন প্রচার-প্রচারণা। ফেস্টুন ও ব্যানার টানিয়েছেন নির্বাচনী এলাকায়। গত সোমবার বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর তিনি ফেসবুক আইডিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীর চারটিতে পুরোনো প্রার্থী, দুটিতে নতুন মুখ: দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর চারটিতে পুরোনো প্রার্থী, দুটিতে নতুন মুখ: দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা

রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চারটিতে পুরোনোদের নাম এসেছে। আর দুটিতে নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার প্রাথমিকভাবে এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজশাহীতে মনোনয়ন পাওয়া নেতাদের অনুসারীরা আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ, মোটরসাইকেল শোডাউন ও রাতভর পিকনিক করেছেন।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ ছিল, মনোনয়ন ঘোষণার পর কোনো উল্লাস বা মিষ্টি বিতরণ করা যাবে না। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন এলাকায় অনুসারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কোথাও কোথাও মনোনয়ন না পাওয়া ব্যক্তিদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, এমনকি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন আসনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে মনোনীত প্রার্থীরা অনুসারীদের সংযত থাকার আহ্বান জানালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীন। তিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। প্রথমবারই পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। তাঁর ভাই প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক এই আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং দুই দফায় মন্ত্রী ছিলেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর গোদাগাড়ী ও তানোরে শরীফ উদ্দীনের সমর্থকেরা আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ও মোটরসাইকেল শোডাউন করেন। কিছু এলাকায় রাতভর পিকনিকও হয়। একপর্যায়ে মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকেরা পৌরসভা ছাত্রদল নেতা এসাহাক আলী নয়নকে লাঞ্ছিত করেন এবং অন্য প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। তবে তানোরে তুলনামূলক পরিস্থিতি শান্ত ছিল।

রাতেই শরীফ উদ্দীন ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা সবাই ধানের শীষের পক্ষে। কোনো ধরনের উল্লাস বা মিষ্টি বিতরণ করা যাবে না। কাউকে নাজেহাল করা বা অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে।’

এই আসনে আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে শিল্পপতি সুলতানুল ইসলাম তারেক ও ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন সক্রিয় ছিলেন। তারেক বলেন, ‘এটি প্রাথমিক ঘোষণা। এখনই উল্লাসের কিছু নেই; দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবার সহনশীল থাকা জরুরি।’

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের টানা ১৭ বছরের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি রেকর্ডসংখ্যক ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তার মনোনয়ন ঘোষণার পর কয়েকটি স্থানে মিষ্টি বিতরণ ও আতশবাজি হলেও বড় ধরনের উল্লাস দেখা যায়নি।

মিনু বলেন, ‘দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। অতীতের মতো এবারও সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত।’

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহসম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। এবারও মনোনয়ন ঘোষণার পর পবার বায়া ও নওহাটায় সীমিত আনন্দ মিছিল হয়। পরে মিলন ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের সংযত থাকার আহ্বান জানান।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া। এটি তাঁর প্রথমবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়া। ঘোষণার পর বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সমর্থকেরা মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ মিছিল ও রাতভর পিকনিক করেছেন।

তবে জিয়াকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, এতে জামায়াত লাভবান হবে। একজন নেতা-কর্মী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি, মিষ্টি খাচ্ছে জামায়াত।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘বাগমারায় বিএনপির প্রার্থী জিয়া, কিন্তু মিষ্টি বিতরণ করেছে অন্য দল, বিষয়টি বুঝলাম না।’ সবচেয়ে আলোচিত পোস্টটি করেছেন লন্ডনপ্রবাসী আকিফ, যিনি বাগমারা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান রঞ্জুর ছেলে। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘যে ব্যক্তি দলের নামে প্রতারণা করেছে, তার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, সে কীভাবে বিএনপির প্রার্থী হয়?’

এদিকে ডি এম জিয়ার অনুসারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ভোরে জিয়ার সমর্থকেরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুসারী চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবির মাছের দিঘিতে বিষ দিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন বলে অভিযোগ। তবে জিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোনো মাছ মরেনি। মাছ মরলে ক্ষতিপূরণ দেব।’

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল। তিনিও ২০১৮ সালের নির্বাচনে একই আসনে প্রার্থী ছিলেন। এবারও মনোনয়ন ঘোষণার পর বড় কোনো উল্লাস হয়নি, তবে তাঁর সমর্থকেরা একাধিক স্থানে আতশবাজি করেছেন।

নজরুল ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ধানের শীষের বিজয়ের জন্য সকলের সহনশীল আচরণ প্রয়োজন।’

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। ২০১৮ সালেও তিনি একই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবার তাঁর সমর্থকেরা উল্লাস প্রকাশ করেননি। চাঁদ বলেন, ‘দলের স্বার্থে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনোয়ারায় নছিমন-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি এবং নিহত চালক। ছবি: সংগৃহীত
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি এবং নিহত চালক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নছিমন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত সিএনজিচালক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন (৩২) মারা গেছেন। গতকাল বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত নেজাম উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চুল্লাজামার বাড়ির মো. আনোয়ারের ছেলে।

এর আগে বুধবার সকালে আনোয়ারা-পিএবি সড়কের শোলকাটা রাস্তার মাথা এলাকায় দ্রুতগামী একটি মাছবাহী নছিমনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং চালক নেজাম উদ্দীনসহ আরও এক যাত্রী গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদেরকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে চালক নেজাম উদ্দীন মারা যান। আহত অপর ব্যক্তির নাম ও পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত