যশোর প্রতিনিধি

যশোর শহরের চিত্রা মোড়ে পুড়ে অঙ্গার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ১৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। পাঁচ তারকা হোটেল এটি। একদিন আগেও ভবনটির গ্লাস আর অ্যালুমিনিয়ামের পাতের বাইরের আবরণ চকচক করছিল। অথচ আজ সেই ভবনটির অবকাঠামো ছাড়া আর কিছু নেই। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পর লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হোটেলের ভেতরে পুড়ে যাওয়া বালিশ, কাঁথা, বিছানা চাদর থেকে শুরু করে বিলাসবহুল সব জিনিসপত্র। এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
এমনকি আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটা পর্যন্তও লুটপাট করতে দেখা গেছে। যে যেভাবে পারছেন জিনিসপত্র ভেঙে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালের মালিক যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্যও ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পাওয়ার পর গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরে মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় বিকেল ৪টার দিকে লোকজন সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার এক নাগরিকও আছেন। আহত হয়েছেন ২৩ জন। হোটেলে তৃতীয় তলার মদের বার থেকে কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লুটপাটের সময় সেখানে আটকা পড়ে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
যশোর জেনারেল হাসপাতাল ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহতের বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা। ভাঙচুর আর অগ্নিসংযোগের সময় অনেকেই কৌতূহলবশত হয়ে অগ্নিসংযোগকারীদের সঙ্গে হোটেলে প্রবেশ করেন। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেসমেন্ট ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে।
পর্যায়ক্রমে তাঁরা কয়েকটি তলাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউ দাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে থাকে। এতে ওপরে থাকা বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা বের হতে পারেনি। ফলে আগুনের ধোয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছে। তবে কতজন আন্দোলনকারী বা হোটেলটির অতিথি, কর্মকর্তা, কর্মচারী মারা গেছে সেটা কেউ নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালে মরদেহ আসলেই স্বজনেরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে গেছে। পুলিশ প্রশাসন মাঠে না থাকাতে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে নিহতের নাম-ঠিকানা তালিকা করেই মরদেহ হস্তান্তর করেছেন। আর আহতদের খুলনা ও ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়েছে।
যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, ‘জাবির হোটেলে আগুন লাগার খবর পায় ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে। এরপর গাড়ি নিয়ে বের হতে গেলে দেখি আমাদের গেটের সামনে আন্দোলনকারীরা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা আমাদের বের হতে দেবে না। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার তারাই আমাদের বলে দ্রুত চলেন হোটেলের ভেতরে আমাদের লোকজন আটকে গেছে। তাদের বাঁচাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হোটেলের কাছে গিয়ে দেখি পুরো হোটেলটি জ্বলছে। পরে জেলার আরওও পাঁচটি স্টেশন ও খুলনার একটি স্টেশন দিয়ে ৭ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনি। এই ঘটনায় হোটেল থেকে আমরা ২৪টা মরদেহ উদ্ধার করেছি। দুজনকে হেলিকপ্টার দিয়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি।’
তিনি বলেন, ‘কি কারণে আগুন জ্বালানো হয়েছে, সেটা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। হোটেলে নিজস্ব অটোমেটিক অগ্নিনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থাকলেও আগুন লেগে অকেজো হওয়াতে সেগুলো কাজ করেনি। এ ছাড়া হোটেলে বেশি ডেকোরেশন করাতে আগুন বেশি ছড়িয়েছে। ফলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশির ভাগ মানুষদের মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৩ জন। তাদের বেশির ভাগের শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে যাওয়াতে খুলনা ও ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়েছে। নিহত বিদেশি নাগরিকের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার অ্যাম্বাসি থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর থেকে হোটেলকে ঘিরে ছিল সাধারণ মানুষের কৌতূহল। বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মানুষ হোটেলটি দেখতে আসছিলেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে গিয়েও দেখা গেছে সেই চিত্র।
কেউ আগুনে পোড়া ধ্বংস হওয়া বাড়ির ছবি তুলছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন। মোবাইলে ভিডিও করে রাখছেন অনেকেই। শহরের বিভিন্ন বস্তি ও রিকশা ইজিবাইক চালকেরা ও তাদের পরিবারের স্বজনেরা দল বেঁধে এসেছে। তারা হোটেলের ভেতরে থাকা পোড়া অর্ধপোড়া আসবাবপত্র থেকে শুরু করে টেলিভিশন, কম্পিউটার, ফ্রিজ এসি থেকে শুরু করে বিশালবহুল জিনিসপত্র খুলে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। ভ্যান রিকশা ইজিবাইক করে যে যা পারছেন তাই নিয়ে যাচ্ছেন।
তালতলা বস্তি থেকে আসা নুর নাহার বলেন, ‘জনগণের টাকা মেরে চাকলাদার এই হোটেল বানিয়েছে। এখন এই জিনিস আমাগের। যে যা, যেভাবে পারছেন সেভাবে লোকজন নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু রাখছে না ভেতরে।’
ছবিরন নামে এক নারী বলেন, ‘ভোরে শুনি চাকলাদারের হোটেলে মানুষ যা পারছে, তাই নিচ্ছে। তাই আমিও এসেছি। গরিবের টাকা হক মেরে বড় লোক হয়েছে। তাই এগুলো আমাদের হক।’
শহরবাসী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য মতে, পাঁচ তারকা জাবের হোটেল কেন্দ্রস্থলের এই জায়গায় এক সময় ছিল চিত্রা সিনেমা হল। ক্ষমতার জোরে তিনি এক স্কুলশিক্ষিকার এই জমি কবজা করেন। ২০১৩ সালের দিকে সিনেমা হল ভেঙে জায়গা দখলের ক্রীড়নকের ভূমিকায় ছিলেন শাহীনের অনুসারী ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ ওরফে বুনো আসাদ। বছর খানিক আগে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
নিহতের মধ্যে আন্দোলনকারীরাই বেশি
যশোর সিটি কলেজ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মারুফ হোসেন নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে কিছু উগ্র ছেলে ছিল। বিজয় মিছিলে সাধারণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তারাও জাবির হোটেলে ঢুকে পড়ে। আমরা মূলত হোটেলটি দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম। তবে ওই ছেলেরা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বিভিন্ন তলায় চলে যায়। কেউ কেউ আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আমার কয়েকজন বন্ধু আটকা পড়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে।’
নাম না প্রকাশে এক আন্দোলনকারী বলেন, বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেসমেন্ট ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তারা কয়েকটি তলাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউ দাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে থাকে। এতে ওপরে থাকা বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা বের হতে পারেনি। ফলে আগুনের ধোয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছে।
শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও শহরের কাজীপাড়া কাঠালতলার তাঁর বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তার চাচাতো ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর বাসভবন, সদরের মালঞ্চিতে চাঁদ ফুড ও ডিমের কারখানাতে লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।
শহরের চার খাম্বা মোড়ে অবস্থিত শেখ রাসেলের ভাস্কর্যও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া চাঁচড়া মোড়ে যশোর-১ আসনের সংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। জেলার আট উপজেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় গতকাল সোমবার বিকেল থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা পর্যন্ত যশোর জেনারেল হাসপাতালে ৪৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেউ কল ধরেননি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির আদেশে কারফিউ উঠিয়ে নেওয়া হলে শহরের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খোলেনি। আতঙ্কে দোকানের সামনে দোকান বসে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

যশোর শহরের চিত্রা মোড়ে পুড়ে অঙ্গার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ১৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। পাঁচ তারকা হোটেল এটি। একদিন আগেও ভবনটির গ্লাস আর অ্যালুমিনিয়ামের পাতের বাইরের আবরণ চকচক করছিল। অথচ আজ সেই ভবনটির অবকাঠামো ছাড়া আর কিছু নেই। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পর লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হোটেলের ভেতরে পুড়ে যাওয়া বালিশ, কাঁথা, বিছানা চাদর থেকে শুরু করে বিলাসবহুল সব জিনিসপত্র। এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
এমনকি আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটা পর্যন্তও লুটপাট করতে দেখা গেছে। যে যেভাবে পারছেন জিনিসপত্র ভেঙে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালের মালিক যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্যও ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পাওয়ার পর গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরে মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় বিকেল ৪টার দিকে লোকজন সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার এক নাগরিকও আছেন। আহত হয়েছেন ২৩ জন। হোটেলে তৃতীয় তলার মদের বার থেকে কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লুটপাটের সময় সেখানে আটকা পড়ে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
যশোর জেনারেল হাসপাতাল ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহতের বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা। ভাঙচুর আর অগ্নিসংযোগের সময় অনেকেই কৌতূহলবশত হয়ে অগ্নিসংযোগকারীদের সঙ্গে হোটেলে প্রবেশ করেন। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেসমেন্ট ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে।
পর্যায়ক্রমে তাঁরা কয়েকটি তলাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউ দাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে থাকে। এতে ওপরে থাকা বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা বের হতে পারেনি। ফলে আগুনের ধোয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছে। তবে কতজন আন্দোলনকারী বা হোটেলটির অতিথি, কর্মকর্তা, কর্মচারী মারা গেছে সেটা কেউ নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালে মরদেহ আসলেই স্বজনেরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে গেছে। পুলিশ প্রশাসন মাঠে না থাকাতে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে নিহতের নাম-ঠিকানা তালিকা করেই মরদেহ হস্তান্তর করেছেন। আর আহতদের খুলনা ও ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়েছে।
যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, ‘জাবির হোটেলে আগুন লাগার খবর পায় ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে। এরপর গাড়ি নিয়ে বের হতে গেলে দেখি আমাদের গেটের সামনে আন্দোলনকারীরা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা আমাদের বের হতে দেবে না। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার তারাই আমাদের বলে দ্রুত চলেন হোটেলের ভেতরে আমাদের লোকজন আটকে গেছে। তাদের বাঁচাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হোটেলের কাছে গিয়ে দেখি পুরো হোটেলটি জ্বলছে। পরে জেলার আরওও পাঁচটি স্টেশন ও খুলনার একটি স্টেশন দিয়ে ৭ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনি। এই ঘটনায় হোটেল থেকে আমরা ২৪টা মরদেহ উদ্ধার করেছি। দুজনকে হেলিকপ্টার দিয়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি।’
তিনি বলেন, ‘কি কারণে আগুন জ্বালানো হয়েছে, সেটা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। হোটেলে নিজস্ব অটোমেটিক অগ্নিনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থাকলেও আগুন লেগে অকেজো হওয়াতে সেগুলো কাজ করেনি। এ ছাড়া হোটেলে বেশি ডেকোরেশন করাতে আগুন বেশি ছড়িয়েছে। ফলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশির ভাগ মানুষদের মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৩ জন। তাদের বেশির ভাগের শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে যাওয়াতে খুলনা ও ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়েছে। নিহত বিদেশি নাগরিকের বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার অ্যাম্বাসি থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর থেকে হোটেলকে ঘিরে ছিল সাধারণ মানুষের কৌতূহল। বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মানুষ হোটেলটি দেখতে আসছিলেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে গিয়েও দেখা গেছে সেই চিত্র।
কেউ আগুনে পোড়া ধ্বংস হওয়া বাড়ির ছবি তুলছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন। মোবাইলে ভিডিও করে রাখছেন অনেকেই। শহরের বিভিন্ন বস্তি ও রিকশা ইজিবাইক চালকেরা ও তাদের পরিবারের স্বজনেরা দল বেঁধে এসেছে। তারা হোটেলের ভেতরে থাকা পোড়া অর্ধপোড়া আসবাবপত্র থেকে শুরু করে টেলিভিশন, কম্পিউটার, ফ্রিজ এসি থেকে শুরু করে বিশালবহুল জিনিসপত্র খুলে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। ভ্যান রিকশা ইজিবাইক করে যে যা পারছেন তাই নিয়ে যাচ্ছেন।
তালতলা বস্তি থেকে আসা নুর নাহার বলেন, ‘জনগণের টাকা মেরে চাকলাদার এই হোটেল বানিয়েছে। এখন এই জিনিস আমাগের। যে যা, যেভাবে পারছেন সেভাবে লোকজন নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু রাখছে না ভেতরে।’
ছবিরন নামে এক নারী বলেন, ‘ভোরে শুনি চাকলাদারের হোটেলে মানুষ যা পারছে, তাই নিচ্ছে। তাই আমিও এসেছি। গরিবের টাকা হক মেরে বড় লোক হয়েছে। তাই এগুলো আমাদের হক।’
শহরবাসী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য মতে, পাঁচ তারকা জাবের হোটেল কেন্দ্রস্থলের এই জায়গায় এক সময় ছিল চিত্রা সিনেমা হল। ক্ষমতার জোরে তিনি এক স্কুলশিক্ষিকার এই জমি কবজা করেন। ২০১৩ সালের দিকে সিনেমা হল ভেঙে জায়গা দখলের ক্রীড়নকের ভূমিকায় ছিলেন শাহীনের অনুসারী ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ ওরফে বুনো আসাদ। বছর খানিক আগে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
নিহতের মধ্যে আন্দোলনকারীরাই বেশি
যশোর সিটি কলেজ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মারুফ হোসেন নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে কিছু উগ্র ছেলে ছিল। বিজয় মিছিলে সাধারণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তারাও জাবির হোটেলে ঢুকে পড়ে। আমরা মূলত হোটেলটি দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম। তবে ওই ছেলেরা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বিভিন্ন তলায় চলে যায়। কেউ কেউ আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আমার কয়েকজন বন্ধু আটকা পড়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে।’
নাম না প্রকাশে এক আন্দোলনকারী বলেন, বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেসমেন্ট ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তারা কয়েকটি তলাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউ দাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে থাকে। এতে ওপরে থাকা বেশির ভাগ আন্দোলনকারীরা বের হতে পারেনি। ফলে আগুনের ধোয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছে।
শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও শহরের কাজীপাড়া কাঠালতলার তাঁর বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তার চাচাতো ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর বাসভবন, সদরের মালঞ্চিতে চাঁদ ফুড ও ডিমের কারখানাতে লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।
শহরের চার খাম্বা মোড়ে অবস্থিত শেখ রাসেলের ভাস্কর্যও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া চাঁচড়া মোড়ে যশোর-১ আসনের সংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। জেলার আট উপজেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় গতকাল সোমবার বিকেল থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা পর্যন্ত যশোর জেনারেল হাসপাতালে ৪৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেউ কল ধরেননি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির আদেশে কারফিউ উঠিয়ে নেওয়া হলে শহরের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খোলেনি। আতঙ্কে দোকানের সামনে দোকান বসে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
১ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
১ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
২ ঘণ্টা আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।
এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত
এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।
তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’
এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।
এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত
এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।
তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’
এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তার
০৬ আগস্ট ২০২৪
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
১ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
২ ঘণ্টা আগেমেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।
জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’
শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।
জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’
শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তার
০৬ আগস্ট ২০২৪
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
১ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
২ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তার
০৬ আগস্ট ২০২৪
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
১ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
১ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
২ ঘণ্টা আগেঅনলাইন ট্রেডিং সাইট
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা

ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লিনো ইমেক্সে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রতারণার শুরু সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আশিক (২২) নামের এক যুবক গ্রামের দুই তরুণ—নিরব হোসেন ও আকাশ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশিক তাঁদের জানান, ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে টাকা রাখলে প্রতিদিন শতকরার ভিত্তিতে লাভ পাওয়া যায়। ১০০ টাকায় দৈনিক ৪ টাকা লাভ। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে নিরব ও আকাশ কাজ শুরু করেন এবং কিছু টাকা লাভও তোলেন। এরপর তাঁরা গ্রামের আরও পাঁচজনকে নিয়ে মোট সাতটি দল তৈরি করে এই ‘লাভজনক’ স্কিম দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
এই চক্রের প্রলোভনে পড়ে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া, শ্রীকোল, নেহালপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া বড়শলুয়াসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ নিরব ও আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা জমা দিতে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এই দুই হোতা বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।
জানা যায়, শুধু নিরবের গ্রুপেই সদস্যসংখ্যা ছিল ২১৮ জন। নিজেদের বিনিয়োগ এবং অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া কমিশন মিলিয়ে নিরব ও আকাশ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, যা দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের এক কৃষক জানান, প্রথমে বিশ্বাস না হলেও গ্রামের অনেকের লাভ দেখে তিনি হালের গরু বিক্রি করে এবং নিজের জমানো টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ওই সাইটে দিয়েছিলেন। এখন সাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব হারিয়েছেন।
একই গ্রামের কালাম নামের একজন বলেন, ‘টাকা দ্বিগুণ হওয়ার আশায় উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পাখি ভ্যানটি বিক্রি করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমি পথের ফকির।’ ইজিবাইক চালক মিজানুর ছোট ভাইয়ের কথায় ১৮ হাজার টাকা জমা করে এখন বাকরুদ্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নেহালপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামেরই দুই শতাধিক ব্যক্তি ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে ৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন। এ ছাড়া শ্রীকোল, নেহালপুর, কুন্দিপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও বড়শলুয়ার অন্তত দুই শ পরিবার বিভিন্ন পরিমাণে বিনিয়োগ করেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন—কেউ হালের গরু, গাভি, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে, কেউ এনজিও বা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ-বা জমি বন্ধক রেখে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।
গত সোমবার সকালে যখন সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গ্রামজুড়ে নেমে আসে হাহাকার। মান-সম্মানের ভয় এবং পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বলেন, ‘নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অসচেতনভাবে এই অনলাইন সাইটে টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। নেহালপুর ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লিনো ইমেক্সে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রতারণার শুরু সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আশিক (২২) নামের এক যুবক গ্রামের দুই তরুণ—নিরব হোসেন ও আকাশ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশিক তাঁদের জানান, ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে টাকা রাখলে প্রতিদিন শতকরার ভিত্তিতে লাভ পাওয়া যায়। ১০০ টাকায় দৈনিক ৪ টাকা লাভ। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে নিরব ও আকাশ কাজ শুরু করেন এবং কিছু টাকা লাভও তোলেন। এরপর তাঁরা গ্রামের আরও পাঁচজনকে নিয়ে মোট সাতটি দল তৈরি করে এই ‘লাভজনক’ স্কিম দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
এই চক্রের প্রলোভনে পড়ে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া, শ্রীকোল, নেহালপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া বড়শলুয়াসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ নিরব ও আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা জমা দিতে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এই দুই হোতা বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।
জানা যায়, শুধু নিরবের গ্রুপেই সদস্যসংখ্যা ছিল ২১৮ জন। নিজেদের বিনিয়োগ এবং অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া কমিশন মিলিয়ে নিরব ও আকাশ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, যা দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের এক কৃষক জানান, প্রথমে বিশ্বাস না হলেও গ্রামের অনেকের লাভ দেখে তিনি হালের গরু বিক্রি করে এবং নিজের জমানো টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ওই সাইটে দিয়েছিলেন। এখন সাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব হারিয়েছেন।
একই গ্রামের কালাম নামের একজন বলেন, ‘টাকা দ্বিগুণ হওয়ার আশায় উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পাখি ভ্যানটি বিক্রি করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমি পথের ফকির।’ ইজিবাইক চালক মিজানুর ছোট ভাইয়ের কথায় ১৮ হাজার টাকা জমা করে এখন বাকরুদ্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নেহালপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামেরই দুই শতাধিক ব্যক্তি ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে ৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন। এ ছাড়া শ্রীকোল, নেহালপুর, কুন্দিপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও বড়শলুয়ার অন্তত দুই শ পরিবার বিভিন্ন পরিমাণে বিনিয়োগ করেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন—কেউ হালের গরু, গাভি, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে, কেউ এনজিও বা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ-বা জমি বন্ধক রেখে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।
গত সোমবার সকালে যখন সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গ্রামজুড়ে নেমে আসে হাহাকার। মান-সম্মানের ভয় এবং পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বলেন, ‘নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অসচেতনভাবে এই অনলাইন সাইটে টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। নেহালপুর ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

বিজয় মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ যশোরে পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর করতে যায়। প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারীরা হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। একপর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তার
০৬ আগস্ট ২০২৪
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
১ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
১ ঘণ্টা আগে