Ajker Patrika

পিয়ন দিয়ে চলে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর)
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫, ০০: ২৪
লোকবল না থাকায় মনিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরে চেয়ার-টেবিলগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
লোকবল না থাকায় মনিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তরে চেয়ার-টেবিলগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের মনিরামপুরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় চরম লোকবলসংকটে ভুগছে। এই দপ্তরে বর্তমানে একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন) ছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। পিয়ন এসে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দপ্তর খুলে বসে থাকেন। কোনো কর্মকর্তা না থাকায় সরকারের এ দপ্তরে কোনো সেবা পাচ্ছেন না মাছচাষিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা মৎস্য দপ্তরে জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা, ক্ষেত্র সহকারী, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কের পাঁচটি পদ রয়েছে। দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা এক মাস আগে বদলি হয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় যোগদান করেছেন। এরপর নতুন কাউকে এখানে পদায়ন করা হয়নি। পাশের অভয়নগর উপজেলার জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হককে মনিরামপুরে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ কাজ ছাড়া তিনি মনিরামপুরে আসেন না। এই দপ্তরে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্র সহকারীর পদ খালি রয়েছে প্রায় দুই বছর। আর অফিস সহকারী নেই ৮-৯ মাস।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৪৪৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বৃহত্তর এই উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় তিনটি নদ ও পাঁচটি বাঁওড় রয়েছে। ২৫টি খাল-বিলের পাশাপাশি এখানে ১১ হাজার ৬৪৩টি পুকুর ও ৪ হাজার ৮১০টি মাছের ঘের রয়েছে। যেখানে পাঙাশ, পাবদা, শিং, বিভিন্ন কার্পজাতীয় মাছের পাশাপাশি ২ হাজার ৫৮৫ ঘেরে গলদা ও ৭৫টি ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ করা হচ্ছে। উপজেলার প্রায় ২৫ হাজার মৎস্যচাষি বছরে ৪৮ হাজার ৯৩ টন মাছ উৎপাদন করেন, যা স্থানীয় চাহিদার তুলনায় ৩৬ হাজার টন বেশি।

জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা না থাকায় মাছচাষিরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাচ্ছেন না। সেবা নিতে দপ্তরে এসে তাঁদের ফিরে যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় নানা কারণে ঘেরে মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ঘের পরিদর্শন করে চাষিদের কার্যকর পরামর্শ দেন, যা ক্ষতির হাত থেকে চাষিদের রক্ষা করে।

নদী বা খালে বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রভাবশালীরা পাটা দিয়ে মাছ আটকে রেখে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করেন। বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ মাছের খাদ্য বিক্রি হয়। অনেক ব্যবসায়ী দপ্তরের নিবন্ধন না নিয়ে মাছের খাদ্য বিক্রি করেন। মাছের ঘেরে মুরগির নিষিদ্ধ বিষ্ঠা ছড়ানো হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসব বিষয় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অপরাধীদের নিবৃত্ত করে থাকেন। মনিরামপুরে মৎস্য কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় এসব কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে।

অফিস সহায়ক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছাড়া দপ্তরে রাজস্ব খাতের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানে কর্মরত নেই। একটি প্রকল্পে মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা পদে তহমিনা সিদ্দিকা ও আল-আমিন নামে তাঁর একজন সহকারী আছেন। তাঁদের প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের নভেম্বর মাসে শেষ হবে।’

নূরুল ইসলাম বলেন, ‘অভয়নগর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তাকে এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশেষ কাজ ছাড়া আসেন না। আমি সকালে এসে দপ্তর খুলে বসে থাকি। আর সময় শেষে বন্ধ করি। মাছচাষিরা সেবা নিতে এলে বলি, দপ্তরে পরামর্শ দেওয়ারও মতো কেউ নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মৎস্য কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে মাছচাষিদের যোগাযোগ করতে বলি।’

নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘রেজা স্যার যখন ছিলেন তখন আমি ছাড়া অন্য তিন পদও খালি ছিল। স্যারকে একা বাইরের কাজের পাশাপাশি অফিসের অন্য সব কাজ সামলাতে হতো।’

উপজেলার ভরতপুর গ্রামের মাছচাষি আখতারুজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা ঘেরে গলদা, পাবদা ও সাদা মাছের চাষ আছে। উপজেলা মৎস্য দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শে চাষ করছি। মনিরামপুরে বর্তমানে এই পদে কোনো কর্মকর্তার নিয়োগ নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বে যিনি আছেন, মোবাইলে তাঁর পরামর্শ নিই। কিন্তু জরুরি মুহূর্তে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা মৎস্য কর্মকর্তার অভাব বোধ করছি।’

মনিরামপুরে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, ‘আমার মূল দায়িত্ব অভয়নগরে। বিশেষ কাজ থাকলে মনিরামপুরে যাই। মাছচাষিরা মোবাইলে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেন।’

যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরকার মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মনিরামপুরে লোকবল সংকটের কথা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। দ্রুত সংকটের সমাধান হবে বলে আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মীনা বাজারে অগ্নিকাণ্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং এলাকার একটি সুপারশপে আগুন লেগেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মীনা বাজার নামের ওই সুপারশপে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। তবে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে খুব দ্রুতই তা নিভিয়ে ফেলে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, আগুনের খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১০টার আগেই আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়।

প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে সড়কে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক থেকে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। উত্তরার দক্ষিণখান, উত্তরা পূর্ব ও বিমানবন্দর থানা এলাকায় গতকাল বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলো মোহাম্মদ মিনহাজ (১১), মোহাম্মদ মোস্তফা (৩১) ও আরিফুল ইসলাম (২৫)।

এর মধ্যে ইলেকট্রিকের এক দোকানের কর্মচারী ছিল মিনহাজ। মোস্তফা জামালপুর সদর উপজেলার ছনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে বাস করতেন। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। আর আরিফুল ইসলাম ময়মনসিংহের কোতোয়ালি উপজেলার বেগুনবাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণখানের প্রেমবাগান এলাকায় গতকাল দুপুর ১২টার দিকে রাস্তা পার হয়ে দোকানে যাচ্ছিল মিনহাজ। এ সময় দুটি অটোরিকশা বেপরোয়া গতিতে আসছিল। একটি অটোরিকশা মিনহাজকে চাপা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পরপরই চালক ও অটোরিকশাটি আটক করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় একটি অটোরিকশার ধাক্কায় মিনহাজ নামের শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম নামের ওই অটোচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে সঙ্গে অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে।

শামীম আল মামুন বলেন, শিশুটি মাথায় আঘাত পেয়ে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যায়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে গাজীপুর-ঢাকা মহাসড়কের উত্তরার বিএনএন সেন্টারের সামনে গতকাল বেলা পৌনে ৩টার দিকে মোটরসাইকেল আরোহী সাদ মোহাম্মদ মোস্তফাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিএনএস সেন্টারের পাশের সড়কে একজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় জনতা। পরে তাঁকে প্রথমে উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করলে তাঁকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাজ্জাদ হোসেন আরও জানান, নিহত ব্যক্তির কপালে ও কানের পাশ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন।

দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই সাজ্জাদ বলেন, কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটা কেউ দেখেছে—এমন কাউকে পাওয়া যায়নি। আশপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তাই বলা যাচ্ছে না, কোনো গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে কি না। নাকি নিজে নিজেই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আবার মোটরসাইকেলটিও তেমন ভালো না। গাড়ির ব্রেকও ততটা ঠিক ছিল না। তাই কীভাবে মারা গেছেন, এখনই শিউর বলা যাচ্ছে না।

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এসআই।

অপর দিকে ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কের বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এলাকায় গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক আরিফুল ইসলাম (২৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে ডিএমপির বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাসলিমা আক্তার বলেন, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালসংলগ্ন মহাসড়কে একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় একজন মোটরসাইকেলচালক নিহত হয়েছেন। চালক পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি আটক করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাকরির শেষ কর্মদিবসে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
মো. ফজলুল করিম। ছবি: সংগৃহীত
মো. ফজলুল করিম। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় চাকরিজীবনের শেষ কর্মদিবসে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারা গেছেন।

নিহত শিক্ষকের নাম মো. ফজলুল করিম (৬০)। তিনি উপজেলার ব্রহ্মগাছা ক্লাস্টারের হামিন দামিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বাড়ি রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের মীরের দেউলমুরা গ্রামে। স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন তিনি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ছিল তাঁর চাকরিজীবনের শেষ কর্মদিবস। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যালয়ের ওয়াশরুমে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সহকর্মীরা দ্রুত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।

রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মো. ফজলুল করিম ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও শান্ত স্বভাবের মানুষ। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর জানাজা শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত হবে।

রায়গঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, ফজলুল করিম ছিলেন দায়িত্বশীল ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। চাকরির শেষ দিনে তাঁর মৃত্যু সত্যিই বেদনাদায়ক। শিক্ষা পরিবার একজন ভালো মানুষকে হারাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘর ভাঙলেও জমি আঁকড়ে কোল পরিবারগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক্সকাভেটরের চাপায় ঘরের টিনগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। দুমড়েমুচড়ে গেছে ঘরের স্টিলের খাট, হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্য জিনিসপত্র। বাড়ির মাটির দেয়ালগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবু ডাইংয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচজনের বাড়ি এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা ভিটা ছেড়ে যাননি। পাশেই বাঁশঝাড়ে অল্প কিছু জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই থাকতে চান তাঁরা।

গত সোমবার দুপুরে সনাতন সরেন, সুজন সরেন, ভুটু কিসকু, ভারত টুডু ও শনিলাল টুডুর বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। খাস জায়গা ভেবে এই পরিবারগুলো ১৯৯৮ সাল থেকে এখানে বাস করে আসছিলেন। পরে শোনেন যে, জমিটি তিলক মাঝি, দিনু মাঝি ও ভাদু মাঝি নামের কয়েকজনের নামে রেকর্ড আছে। তাঁরা তাঁদের জাত ভাই। এখন এখানে নেই। তাঁদের হিন্দু সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।

পরে মকবুলের ওয়ারিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের আলমগীর কবিরসহ কয়েকজন জমি পেতে আদালতে মামলা করেন। কোল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো মামলা পরিচালনা করতে পারেননি। একতরফা রায়ে এই ৭৭ শতাংশ জায়গার রায় হয়েছে আলমগীরদের পক্ষে। গত সোমবার পুলিশ ও আদালতের প্রতিনিধি গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।

গোদাগাড়ীর মোহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাবু ডাইং গ্রামটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি বাড়ি একেবারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দুটি বাড়ির আংশিক ভাঙা হয়েছে। শনিলাল টুডুর বাড়ির অর্ধেক ভেঙে আঙিনায় কয়েকটি সীমানা পিলার পুঁতে দেওয়া হয়েছে। শনিলালের স্ত্রী চম্পলি মুর্মু বলেন, ‘একদিক থেকে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙছিল, আরেক দিক দিয়ে নিজেরা নিজেরাই মাপামাপি করে বাড়ির আঙিনায় সীমানা পিলার পুঁতে দিয়েছে। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি।’

সনাতন টুডু বলেন, ‘পুলিশসহ কোর্টের লোকজন এসে বাড়ি ভাঙতে চাইলে আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যাই। তখন পুলিশ বলে যে, ‘‘আপনি আইনের কাজে বাধা দেবেন না’’। আমাকে সরিয়ে দিয়ে বুলডোজার চালিয়ে দেয়। জিনিসপত্র সরাতে আমরা ৩০ মিনিটও সময় পাইনি।’

ঘরহারা সুজন সরেন বলেন, ‘অল্প কিছু জিনিস বের করতে পেরেছি। সেগুলো এখানেই রেখেছি বাঁশতলায়। বাকিগুলো বুলডোজারের নিচে গেছে। গরু-ছাগলগুলো মানুষের বাড়িতে রেখেছি। দুই দিন আমরা বাঁশঝাড়ের মধ্যেই ছিলাম। গতকাল রাতে বৃষ্টি এলে পাশের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিই। আমরা এখানেই থাকতে চাই। আমাদের তো আর যাওয়ার কোনো জায়গা নাই।’

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ দিন পরিবারগুলোকে দেখতে যান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম, সেন্টার ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ভলান্টারি অর্গানাইজেশনের (সিসিবিভিও) সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেন, বন্ধু আমরার সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম লিটন, সিসিবিভিওর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নিরাবুল ইসলাম ও ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল আবু তালেব।

সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার বলেন, ‘আগে এ জমি কোল সম্প্রদায়েরই ছিল। তাদের হিন্দু দেখিয়ে জমির রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বাঙালিদের নামে। কারণ, আদিবাসীদের জমি নিতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাগে। হিন্দু হলে অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ভিন্নপথে জমির মালিকানা নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক কাজ হয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, যেন দ্রুতই তাদের পুনর্বাসন করা হয়।’

জানতে চাইলে কোল পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী আলমগীর কবির বলেন, ‘এই জমি কিনেছিলেন আমার দাদা মকবুল হোসেন। তিনি কীভাবে এটা কিনেছিলেন, তা তো আমরা বলতে পারব না। তবে এটা রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তারপরও আদিবাসীরা জমি ছাড়েনি। বাধ্য হয়ে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করেছি। জমি এখন আমাদের দখলে।’

ব্লাস্টের রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম জানান, এই জমির সমস্ত কাগজপত্র তাঁরা সংগ্রহ করবেন। তারপর ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তা দেবেন। গতকাল গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছিলেন, পরিবারগুলোর থাকার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনো গতি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত