Ajker Patrika

ওবায়দুল কাদের–শেখ হেলাল পালিয়েছেন যশোর যুবদল নেতার সহযোগিতায়, দাবি সাবেক নেতার

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ২৮
যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি। ফাইল ছবি
যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি। ফাইল ছবি

যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ তাঁর পরিবারের চার সদস্যকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা।

আজ মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে এবং ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন অভিযোগ করেন এসকেন্দার আলী জনি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তদন্তের অনুরোধও জানান। তাঁর এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই পড়ে গেছে।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এসকেন্দার আলী জনিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসকেন্দার আলী জনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘১৩ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে যশোর জেলা যুবদলের সেক্রেটারি আনসারুল হক রানা মাদক সম্রাট শহীদের সহায়তায় পুটখালি ঘাট দিয়ে শেখ হেলালসহ পরিবারের ৪ সদস্যকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পার করে দিয়েছে, সেটা গোয়েন্দার কাছে তথ্য আছে।’

এর আগে দুপুরে এসকেন্দার আলী জনি ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদেরকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে যশোর জেলা যুবদলের সেক্রেটারি। সাংবাদিক সম্মেলন করা হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করুন, অরিজিনাল অপরাধীদের শান্তি দিন।’ লাইভের শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘সঠিক তদন্ত চাই, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের কাছে বরাবর।’

ফেসবুক স্ট্যাটাস
ফেসবুক স্ট্যাটাস

২৭ মিনিটের লাইভে এসকেন্দার আলী জনি বলেন, ‘যশোর ক্যান্টনমেন্টে লুকিয়ে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ৫ তারিখের পর তাঁকে ভারতে পালাতে সাহায্য করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। বেনাপোলের পুটখালির গোল্ড নাসিরের সঙ্গে (সিঙ্গাপুরে) টাকা ভাগাভাগি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঘাট শহীদকে ধরলে এ তথ্য পাওয়া যাবে। শুধু ওবায়দুল কাদের নয়; আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে ভারতে যেতে সাহায্য করেছে যশোর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। এ তথ্য সব নেতাই জানেন। এখন যশোর যুবদল দেখলে মনে হবে যুবলীগ হেঁটে যাচ্ছে। যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা দলকে যুবলীগে পরিণত করেছে।’

ফেসবুক লাইভে এসকেন্দার আলী জনি বলেন, ‘আমি রাজপথে মার খেয়েছি, আমার ভাই মার খেয়েছে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের কারণে পরিবারসহ জেল খেটেছি। আমি ১৭ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার ও ত্যাগী নেতা হয়েও আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি আন্দোলন সংগ্রাম করব; ত্যাগী নেতাদের কেন বহিষ্কার করা হচ্ছে? যুবদলের নেতা-কর্মীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিএনপির পার্টি অফিসের সামনে মিছিল করেছে। ভিডিওসহ নেতৃবৃন্দকে জানানো হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোপনে যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহমেদ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের সঙ্গে মদের ব্যবসা করে। যুবদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলে যুবলীগের সন্ত্রাসীদের দলে নিয়ে এসেছে। যারা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছে, দলের নেতাদের ছবি ভাঙচুর করেছে, তারা এখন যুবদলে। এখন যুবদলের সভাপতি-সম্পাদক বলছে ৫-৭ কোটি টাকা খরচ করে কমিটি নিয়ে আসবে।’

জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যই এসকেন্দার আলী জনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে শুধু আমাকে নয়, যুবদলের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি দুজনের নামেই দীর্ঘদিন ধরে এসব বলে আসছে। সে সুস্থ নয়। আপনারাও তদন্ত করে দেখেন, সে (ওবায়দুল কাদের) কোন দিক দিয়ে কোথায় গেছে। একজন একটা কথা বললেই তো হবে না। এতদিন ধরে রাজনীতি করলাম, খোঁজখবর নিয়ে দেখেন আমরা কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কি-না।’

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ বলেন, ‘জনি নেশাগ্রস্ত ছেলে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় জেলা বিএনপি ও জেলা যুবদলের সুপারিশে কেন্দ্রীয় যুবদল তাঁকে বহিস্কার করেছে। সে উন্মাদ হয়ে গেছে। উন্মাদ ও বহিস্কৃত লোক কি বলল, সেটি আমলে নিচ্ছি না। আমলে নেওয়ার দরকার নেই। আমরা কেমন লোক, যশোরের মানুষ জানে। ১৮ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ৩৫ থেকে ৪০ বার জেল খেটেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৩
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসায় ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট চশমা হিলে নওফেলের বাসার সামনে অবস্থান করে। একপর্যায়ে তারা বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। বাসার পার্কিংয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

একই সময়ে আরেকটি দল নগরীর খুলশী এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে টিম রয়েছে। পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত, প্রাণিচিকিৎসক আশঙ্কাজনক

খুলনা প্রতিনিধি
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন সলুয়া বাজারে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সলুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় দেবাশীষ নামের এক প্রাণিচিকিৎসক গুলিবিদ্ধ হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সলুয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় ওই দুজন চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে দুজনকে গুলি করে।

নিহত ইমদাদুল হক মিলন ওই এলাকার মো. বজলুর ছেলে। কয়েক মাস আগে তিনি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া মিলন খুলনার স্থানীয় একটি দৈনিকে আড়ংঘাটা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই ‘বর্তমান সময়’ নামের একটি অনলাইন পোর্টাল বের করেন। জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।

আহত দেবাশীষকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানতে চাইলে আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘ইমদাদুল হক মিলন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে বলে জানতে পেরেছি।’

ওসি আরও বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চরমপন্থী হুমায়ূন কবির হুমা গ্রুপ এই হামলা চালাতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি।

একটি সূত্র জানায়, প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ ওরফে দীবা বিশ্বাসের বুকে ও মাথায় আগে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরেরটা সাংবাদিক মিলনের মাথায়। সেখানে পাঁচ রাউন্ড গুলি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৫
হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মী-সমর্থকেরা। আজ বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ শুরু হয়।

আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীরা হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান ও বিক্ষোভ-মিছিল করছেন। তাঁরা ‘হাদি’ ‘হাদি’ বলে স্লোগানও দেন।

একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চলন্ত রিকশায় থাকা হাদিকে চলন্ত একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা আততায়ী গুলি করেন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

ঢাকায় হাদির অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন অধ্যাপক আবদুল আহাদ আজ রাতে এক ভিডিওবার্তায় জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদীকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপত্তিকর টিকটক ভিডিও, তিন যুবককে খুঁজছে পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

নেত্রকোনার পূর্বধলায় আপত্তিকর টিকটক ভিডিও বানিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিন যুবক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামে ধারণ করা ১২ সেকেন্ডের ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, উপজেলার নারায়ণডহর এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসার সামনে এক যুবক স্কেটিং করতে করতে ভ্যানের পেছনে বসা এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছেন। একপর্যায়ে মেয়েটির পোশাক টেনে খোলার চেষ্টা করেন ওই যুবক। আপত্তিকর ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। ১৫ ডিসেম্বর ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই এমন কাজকে সমাজের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওতে দেখানো বিষয়টি অভিনয়ের অংশ। আলোচনায় আসার জন্যই মূলত এমন আপত্তিকর ভিডিওটি করা হয়েছে। ভিডিওটি করেছেন রোমান নামের এক যুবক, স্কেটিং করেছেন রাকিব হাসান (২০) এবং মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন হানিফ (২০)। হানিফ ও রোমান সম্পর্কে আপন দুই ভাই। তাঁরা পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামের ওয়াসিম মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে পূর্বধলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল বলেন, ‘এ ধরনের ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।’

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ভিডিওটি মূলত অভিনয়। এতে মেয়ের পোশাকে ছিলেন হানিফ নামের এক যুবক। তবে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার পর থেকে ওই তিন যুবক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।

এ বিষয়ে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান খান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরপরই তাঁদের গ্রেপ্তারে জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত