Ajker Patrika

জামালপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় পুলিশসহ আহত ১০ 

জামালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ১৪
জামালপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় পুলিশসহ আহত ১০ 

কেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাধ্যমে জামালপুর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ হয়েছে। উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে হলেও বাকি সব গুলোতেই নির্বাচনী পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। এ সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পুলিশসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। 
 
জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের বুখুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরুল হাসান বিদ্যুৎ ব্যালট পেপারে অবৈধ সিল দিচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হক বাবুর কর্মী সমর্থকেরা ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। এ সময় কেন্দ্রে ভাঙচুর করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সকাল ৯টায় শাহাবাজপুর ইউনিয়নের পক্ষীমারি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম কেন্দ্রে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আকন্দ বাবুর নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে আটক করে। 

সহকারী পুলিশ সুপার সুমন মিয়া সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এদিকে দুপুর ২টায় লক্ষীরচর ইউনিয়নে গজারিয়া কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শটগানের গুলি ছুড়ে। এতে ৩ পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়েছে। 

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এস এম গোলাম মোক্তাদির বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো এই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার আনা হয়েছে ভোর ৬টায়। ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। তার কেন্দ্রে ৭টি বুথে ১ হাজার ৩৫১ জন পুরুষ ভোটার এবং ১ হাজার ৫১৩ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাস উৎসবে সুন্দরবন থেকে আটক ৩২ জন কারাগারে

বাগেরহাট প্রতিনিধি
রাস উৎসবে সুন্দরবন থেকে আটক ৩২ জন কারাগারে। ছবি: সংগৃহীত
রাস উৎসবে সুন্দরবন থেকে আটক ৩২ জন কারাগারে। ছবি: সংগৃহীত

রাস উৎসবে পুণ্যার্থী সেজে সুন্দরবনে হরিণ শিকারের চেষ্টার অভিযোগে আটক ৩২ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের বাগেরহাট বন আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক বিলাশ মন্ডল আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত সোমবার দুপুর থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

বন বিভাগ জানায়, রাস পূজা চলাকালে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে ‍ওঠে। এ জন্য কয়েক বছর ধরে পুণ্যার্থী ছাড়া বাইরের লোক বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আর এবারই প্রথমবারের মতো কড়া নিরাপত্তাপ্রহরায় পুণ্যার্থীদের বনে নেওয়া হয়েছে। এরপরও অনেকে পরিচয় গোপন করে পুণ্যার্থী সেজে বনে প্রবেশ করেছেন।

পূজার প্রথম দিন (সোমবার) দুপুরে হরিণ শিকারের চেষ্টার সময় এক যুবককে আটক করে বন বিভাগ। তখন ওই চক্রের অন্য সদস্যরা সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আটক তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

পরে হরিণ শিকারের যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও ৩২ জনকে আটক করে বন বিভাগ। এ সময়ে ১২০০টি হরিণ শিকারের ফাঁদ ও দুটি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে রাস পূজা চলাকালে মোট ৩৫ হরিণশিকারিকে আটক করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের দুবলার চর-আলোরকোলের স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তানভীর হাসান বলেন, বন্য প্রাণী শিকার রোধে এবার তাঁরা খুবই তৎপর ছিলেন। তারপরও শিকারিরা নানাভাবে চেষ্টা করেছেন। বনরক্ষীরা তল্লাশি চালিয়ে ৩৫ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। দুপুরে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

বাগেরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি এস এম মাহাবুব মোর্শেদ লালন বলেন, আসামিদের আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে সুন্দরবন রক্ষা ও হরিণ শিকার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন এই রাষ্ট্রীয় আইন কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছাত্রীদের শরীরে আবারও হাত দেওয়ার অভিযোগ সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বদরগঞ্জে চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আবারও ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব ও শরীরে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিদ্যালয়টিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন অভিভাবকেরা। বিকেলে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাটি ধাপাচাপা দিতে গতকাল বুধবার রাতে দু-একজন অভিভাবককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন প্রধান শিক্ষক।

অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী বলে, ‘হেড স্যারের নজর ভালো নয়, সব সময়ে আমাদের বুকের দিকে তাকিয়ে থাকেন এবং সুযোগ পেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। এত দিন লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনি। ভেবেছিলাম, হেড স্যার ভালো হবেন, কিন্তু আজও তাঁর চরিত্র ভালো হয়নি।’

অভিভাবক আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের চরিত্র ভালো নয়। বিদ্যালয়ে মেয়েরা নিরাপদ নয়। এবার তাঁকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। তিন দিন আগে দুই ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করলে আমাদের এক সহকারী শিক্ষক তা মোবাইলে ভিডিও আকারে ধারণ করেন। এ কারণে প্রধান শিক্ষকের ভাড়া করা কয়েকজন এসে সেই শিক্ষককে হুমকি দেন।’

ওই সহকারী শিক্ষক আরও বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক বারবার ছাত্রীদের সঙ্গে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর কারণে আমাদের ও স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাঁকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা দরকার।’

আরও এক শিক্ষক বলেন, এর আগেও প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব ও শরীরে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

এর আগে ২০২৩ সালের ১১ জুন নিজ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির সনাতন ধর্মের এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক। ১৪ জুন কুপ্রস্তাব দেওয়া কলরেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পরদিন ১৫ জুন অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

পরে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশপিয়া তাসরিনের আশ্বাসে শান্ত হন অভিভাবকেরা। ওই দিন রাতে ছাত্রীর বাবা বদরগঞ্জ থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করলে পুলিশ রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ১৬ জুন বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করে।

এ নিয়ে আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার’ এবং ১৭ জুন ‘স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় গ্রেপ্তার সেই প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বিদ্যালয়ের আরও এক সহকারী শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক দিন পর আদালত থেকে জামিনে বের হন। তিনি ওই সময়কার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মমতাজ হোসেনের ভাগনি জামাই হওয়ার কারণে তাঁর বরখাস্ত আদেশ বেশি দিন থাকেনি। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে বলে ওই শিক্ষক জানান।

দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আরিফ মাহফুজ বলেন, ‘আমি আজ গঙ্গাচড়া উপজেলায় অফিস করেছি। এ কারণে সেখানকার বিষয়টি আমার জানা নেই।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, অভিভাবকেরা ওই বিদ্যালয়ে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মারামারি করতে বড় ভাইয়ের মাইকিং, স্থান পানের বরজ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ২৯
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাইকভাড়া করে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মারামারির কথা ঘোষণা করেন আব্দুল কুদ্দুস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাইকভাড়া করে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মারামারির কথা ঘোষণা করেন আব্দুল কুদ্দুস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধায় ছোট ভাইয়ের সঙ্গে আগামীকাল শুক্রবার মারামারি করবেন জানিয়ে মাইকে প্রচার করেছেন আব্দুল কুদ্দুস মিয়া নামের এক বৃদ্ধ। কখন, কোন স্থানে এ মারামারি করবেন তা-ও ঘোষণা করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলায় মাইকভাড়া করে মারামারির কথা পুরো গ্রামে প্রচার করা হয়।

জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বড় ভাইয়ের এমন কাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আব্দুল কুদ্দুস জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের বৈরীহরিণমারী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ছোট ভাইয়ের নাম হাবিজার মিয়া।

রিকশা নিয়ে গোটা গ্রামে মাইক দিয়ে আব্দুল কুদ্দুস ঘোষণা করেন, ‘আগামীকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ছোট ভাই হাবিজারের সঙ্গে নিজেদের পানের বরজ এলাকায় মারামারি করব।’

জানতে চাইলে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার ছোট ভাই হাবিজার দীর্ঘদিন থেকে আমার জমি মারে খাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিস হলেও, সে মানে না। তাই বাধ্য হয়ে আমার জমি বুঝে নেওয়ার জন্য মাইকভাড়া করে মাইকিং করছি।’

এ বিষয়ে হাবিজার মিয়ার মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টো আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে থানায় ডাকা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক পুনর্বহাল দাবি

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পুনর্বহালের দাবি জানালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে পৃথক দুটি কর্মসূচিতে এই দাবি জানান সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ শারীরিক শিক্ষা। এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উন্নত দেশগুলো—যেমন জাপান, জার্মানি, সুইডেনে শারীরিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। কারণ, তারা শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং মাঠেও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে গুরুত্ব দেয়।’

স্বপ্না আক্তার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, আমাদের দেশে এখনো শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা খুবই কম, বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ে তো এ বিষয়ে ধারণাই নেই।’

এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। পরে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবকে স্মারকলিপি দেন।

কর্মসূচিতে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিন বিশ্বাস এষা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয় পড়ানো হয়, তার বিরুদ্ধে এমন একটা প্রজ্ঞাপন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং সৃজনশীলতা-মননশীলতা বৃদ্ধি পায়। বিশ্বের অন্য দেশে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতকে বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো হয়, সেখানে বাংলাদেশে কেন এই পদটি থাকবে না?’

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশেও শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে সংগীত ও শারীরিক চর্চার বিষয়টি আছে। তাহলে আমাদের দেশের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার পদে শিক্ষকের কোনো পদ না রেখে শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশকে কেন বাধাগ্রস্ত করা হবে?’

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক হারুন আর রশিদ বলেন, সংস্কৃতির কার্যক্রম একটা দেশের পরিচয়। তাই এই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করে সংগীতের মান কীভাবে আরও উন্নয়ন করা যায়, সেই চিন্তা করার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ২ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫ সংশোধন করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদ বাতিল করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত