Ajker Patrika

জামালপুর হাসপাতাল: পরিত্যক্ত ভবনে চিকিৎসা, এক শয্যায় তিন রোগী

  • জামালপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার রোগীরাও এখানে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে।
  • ৭৩টি পদের বিপরীতে বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক আছেন ৪৮ জন।
জামালপুর প্রতিনিধি 
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ভর্তি রোগী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ভর্তি রোগী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা, অতিরিক্ত রোগীর চাপ, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন সংকটে ভুগছে জামালপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। এ অবস্থায় নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনেরা। এদিকে পরিত্যক্ত ভবন এবং অতিরিক্ত রোগীর চাপে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে চিকিৎসক, রোগীসহ সংশ্লিষ্টদের।

স্থানীয়রা বলছেন, জামালপুরের ২৬ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল জামালপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলার রোগীরাও এখানে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে।

কিন্তু হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও জনবলসংকট দীর্ঘদিন ধরে। কোনো সমাধান না হওয়ায় দায়িত্বরত চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসকেরা পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে মোট ৭৩ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সেখানে চিকিৎসক আছেন ৪৮ জন। প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বাড়ছে। অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তির সংখ্যাও থাকে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। এদিকে হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও কর্মচারী না থাকায় সেসব কোনো কাজে আসছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বহির্বিভাগের ভবনটি ১৯৬১ সালে নির্মিত। গণপূর্ত বিভাগ ২০২১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। এরপরও সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। তবে নতুন ভবন চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান।

রোগীর স্বজন মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি এই হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট থাকায় রোগীদের সেবা নিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, রাতে কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায় না। ভর্তি রোগীদের দিনে একবার দেখা হয়।

মাদারগঞ্জের সেলিম মিয়া বলেন, ‘বহির্বিভাগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসকেরা সেবা দিচ্ছেন। এখানে চিকিৎসক এবং রোগীরা আতঙ্কে থাকে। ভবনের পলেস্তারা মাঝেমধ্যে খসে পড়ে রোগীরা আহতও হয়। চিকিৎসকেরা ভয়ের মধ্যে থাকেন। ভবনের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগে। দ্রুত বহির্বিভাগের হাসপাতাল ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক’

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবিনুর নাহার বলেন, ‘আমরা ভালো সেবা দিতে চাইলেও দিতে পারছি না। আমরা জায়গার সংকটের কারণে রোগীদের বিছানা পর্যন্ত দিতে পারছি না।’

বহির্বিভাগের চিকিৎসক শারমিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে দীর্ঘদিন সেবা দিয়ে আসছি। দুর্ঘটনার ভয় সব সময় থেকে যায়। আমাদের এবং রোগীদের কথা চিন্তা করে ভবনের মেরামত করা দরকার।’

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ২৫০টি। কিন্তু শুধু মেডিসিন ওয়ার্ডেই ভর্তি আছে ২২৪ জন। এক রোগীর বিছানায় ৩ জন করে রোগী আছে। রোগীর এত চাপ। নার্স ও চিকিৎসকের সংকটের কারণে সেবা দিতে কষ্ট হচ্ছে।’

হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রোগীদের আবাসন সংকট। হাসপাতালের বহির্বিভাগের ভবন ১৯৬১ সালে নির্মিত। গণপূর্ত বিভাগ ২০২১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে নতুন ভবন নির্মাণের কথা জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনার বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত নয়াদিল্লি: ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একাই সরকার গঠন করবে: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমান

বুলবুলই আবার বিসিবি সভাপতি, সহসভাপতি পদে চমক

এবার মাউশি মহাপরিচালক খুঁজতে বিজ্ঞপ্তি দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিরল খনিজের প্রথম চালান যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাল পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত