Ajker Patrika

হবিগঞ্জে চলছে সিলিকা বালু তোলার মচ্ছব

  • হবিগঞ্জের চার উপজেলার ছড়া ও নদী থেকে দিনদুপুরে বালু লুট।
  • প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে লুটপাট, কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
  • প্রশাসন বলছে, লোকবলের অভাব, পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ 
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ০০
ছড়া থেকে অবৈধভাবে তোলা হয়েছে বালু। পাড়ে রাখা বালু ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। সম্প্রতি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছড়া থেকে অবৈধভাবে তোলা হয়েছে বালু। পাড়ে রাখা বালু ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। সম্প্রতি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে দেদার তোলা হচ্ছে হবিগঞ্জের সিলিকা বালু। এতে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনীতিকেরা। প্রশাসনের নাকের ডগায় জেলার ৪টি উপজেলার চা-বাগানের ছড়া এবং কয়েকটি নদী থেকে অবাধে সিলিকা বালু উত্তোলন করা হলেও নেই কোনো পদক্ষেপ। উল্টো বালু উত্তোলনের কারণে ধসের ঝুঁকি থাকায় এলাকাছাড়া হচ্ছে পরিবার; নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক।

হবিগঞ্জের মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জের একটি অংশের চা-বাগানের ছড়া থেকে তোলা হচ্ছে সিলিকা বালু। এ ছাড়া মাধবপুরের সোনাই নদ, বাহুবলের করাঙ্গী নদী ও চুনারুঘাটের খোয়াই নদ থেকেও অবাধে তোলা হচ্ছে বালু। কোনো অনুমোদন না থাকলেও রাত-দিন চলছে বালু লুটপাট। এ জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে নির্বিচার সিলিকা বালু উত্তোলন করায় পাহাড়-টিলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে এবং আশপাশের রাস্তাঘাট, স্কুল, চা-শ্রমিকদের বসতঘরসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

বালু বিক্রির সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক ঘনফুট সিলিকা বালু বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। প্রতিটি ট্রাক্টরে তোলা হচ্ছে গড়ে ১২০ ঘনফুট বালু; এর বাজারমূল্য প্রায় ৫ হাজার টাকা। প্রতিরাতে ৭০ থেকে ৮০টি ট্রাক্টরে বালু পরিবহন করা হয়। গড়ে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার বালু অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে। মাসিক হিসাবে এই অঙ্ক কোটি টাকার বেশি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, সিলিকা বালুর নেশায় হবিগঞ্জ জেলার প্রকৃতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনকে বারবার বিষয়টি দেখানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সিলিকা বালু লুটপাটের সঙ্গে কারা জড়িত, এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়ে বেশ কিছু নাম জানা গেছে। মাধবপুরে বালু উত্তোলনে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শাহজাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তাঁর সহকারী হিসেবে রয়েছেন উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতা জালাল মেম্বার। এই চক্র শাহজাহানপুর ইউনিয়নের সুরমা চা-বাগান, তেলিয়াপাড়া চা-বাগান, বনগাঁও, ভাণ্ডুরা, ইটাখোলা ছড়া, চৌমুহনী ইউনিয়নের রসুলপুর এবং তুলসীপুর থেকে সিলিকা বালু উত্তোলন করা হয়।

ইউপি সদস্য জালাল মোবাইলে বলেন, তিনি ও পারভেজ চেয়ারম্যান উপজেলার মনতলা নামক স্থান থেকে বৈধভাবে বালুমহালের ইজারা নিয়েছেন। যদিও বিভিন্ন স্থান থেকে সিলিকা বালু উত্তোলনে তাঁদের নাম আসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর সদুত্তর দেননি।

তবে মাধবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুজিবুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সিলিকা বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে প্রশাসন। এরই মধ্যে এই উপজেলায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টর আটক করা হয়েছে।

সিলিকা বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যখন অভিযানে যাই, তখন তাদের পাই না। যে কারণে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন বড় বড় ট্রাকে বালু পরিবহন করা হচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনেরও সখ্য রয়েছে। যে কারণে নীরবে এসব সহ্য করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।

সাতছড়ি ত্রিপুরাপল্লির হেডম্যান চিত্ত রঞ্জন দেববর্মা বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর আগে আমাদের টিলার চারপাশ থেকে প্রচুর সিলিকা বালু উত্তোলন করা হয়েছিল; যার খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। বৃষ্টি এলেই টিলায় ধস নামছে। এখন পর্যন্ত ১০টি পরিবার ত্রিপুরাপল্লি ছেড়েছে।’

চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে দেউন্দি চা-বাগান পর্যন্ত ৬ সদস্যের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামের মাহফুজ মিয়া, রিংকু মিয়া, বাবলু মিয়া, মাসুক মিয়া, ইউপি সদস্য ফয়েজ মিয়া ও মহিমাউড়া গ্রামের কাউসার মিয়া। এ ছাড়া এই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সিলিকা বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন আবদুল্লাহপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়া, কাঠালবাড়ি গ্রামের খয়ের মিয়া তালুকদার ও মিষ্টু মিয়া, হলহলিয়া গ্রামের জসিম মিয়া, পাইকপাড়া গ্রামের মো. রমজান আলী, সাঁটিয়াজুরী ইউনিয়নের দারাগাও দেওছড়া থেকে যুবলীগ সভাপতি কাউসার মিয়া ও স্থানীয় রুস্তম আলী।

প্রশাসন কী করে

বাপা হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, হবিগঞ্জের সব কটি চা-বাগান ও রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিন-রাতে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া যায়। প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও তা বন্ধ হয় না। এখনো যদি সিলিকা বালু উত্তোলন বন্ধ না করা হয়, আর কয়েক বছর পর হবিগঞ্জের পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিপর্যয় নেমে আসবে।

এই বালু উত্তোলন নিয়ে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন চুনারুঘাটের সদ্য সাবেক ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসন থেকে সিলিকা বালুর কোনো মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তবে রাতের আঁধারে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। আমরা খবর পেলে অভিযান চালাই। বালু উত্তোলনের মেশিন ধ্বংস করার পাশাপাশি জরিমানা ও মামলা দিচ্ছি। তবে লোকবলের অভাবে পুরোপুরি উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্পকারখানায় এসব সিলিকা বালু বিক্রি হচ্ছে। যদি পুলিশ বালু পরিবহনের রাস্তাগুলোতে চেকপোস্ট বসায়, তাহলে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ের দেড় মাসের মাথায় সড়কে ঝরল প্রবাসীর প্রাণ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাজমুল হাসান (২৮) নামের এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় উপজেলার বেগমাবাদ এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাজমুল উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।

নিহত যুবকের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ বেলা সাড়ে ৩টায় কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন নাজমুল। বেগমাবাদ এলাকায় এলে একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চলন্ত একটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

নিহত যুবকের ফুফাতো ভাই ফারুক হোসেন জানান, নাজমুল হাসান কুয়েতে কাজ করেন। প্রায় তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে ফেরেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেন তিনি। ১৫ দিন পর তাঁর বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। আজ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বাজার থেকে একটি টি-শার্ট কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নাজমুল।

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বুক চাপড়ে বলেন, ‘ছেলেকে বিয়ে করিয়ে খুব আনন্দে ছিলাম। আনন্দটা বেশি দিন টিকল না।’

এ বিষয়ে মীরপুর হাইওয়ে পুলিশের এসআই আনিসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেল পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সড়কে যানজট হয়। বিকেল সোয়া ৫টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা হামলা ও গুলি, নিহত ১

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আইটি গেটসংলগ্ন বিএনপির স্থানীয় কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এমদাদুল হক (৫৫) নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫)। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসে ছিলেন।

এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ অফিসে থাকা মামুন শেখকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

প্রথম গুলি মিস হয়ে পাশে থাকা এমদাদুল হকের শরীরে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর সন্ত্রাসীরা আরও গুলি চালালে মামুন শেখ গুলিবিদ্ধ হন। তখন দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা গুরুতর আহত মামুনকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যাচ্ছি। একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়ী গেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় মুগডালে ক্ষতিকর রং, ৪ দোকানিকে লাখ টাকা জরিমানা

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুগডালে ক্ষতিকর রঙের উপস্থিতি পাওয়ায় বগুড়ায় চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রোববার শহরের ডালপট্টিতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে এই জরিমানা করা হয়।

অভিযানে শহরের ডালপট্টি এলাকার একাধিক দোকানে মুগডালে ক্ষতিকারক রং আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। অভিযানে চারটি দোকানের মুগডালে ক্ষতিকারক রঙের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

যদিও দোকানিরা বলছেন, তাঁরা প্রত্যেকে এই ডালগুলো রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে কিনেছেন। এগুলোর মধ্যে রংমিশ্রিত থাকে তা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোই ভালো বলতে পারবে। তাঁরা পাইকারি এনে সেভাবেই আবার বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজ রোববার আকস্মিক অভিযানে সব ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি দুই দোকানকে ৩০ হাজার করে এবং আরও দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পাশাপাশি আজ সন্ধ্যার মধ্যে যাঁদের কাছে রংমিশ্রিত ডাল রয়েছে, সেসব বস্তা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা ডালের বস্তাগুলো একত্র করে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, মুগডালে যে রঙের উপস্থিতি তাঁরা অভিযানে পেয়েছেন, তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেসব অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোজ্যপণ্যে ভেজাল কিংবা ক্ষতিকারক এমন রং ব্যবহারের প্রচেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অভিযানে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছাসহ জেলা পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরগঞ্জের বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন আজকের পত্রিকার সাজন আহম্মেদ পাপন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড (সংবাদপত্র) পেলেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপন। চলতি বছর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত ‘১৪ বছর ধরে অনির্বাচিত কমিটি, অচল কিশোরগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গন’ প্রতিবেদনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে শহরের রথখোলা এলাকায় এক অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে চার ক্যাটাগরিতে চারজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব।

পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন অনলাইন ক্যাটাগরিতে তাসলিমা আক্তার মিতু, মাল্টিমিডিয়ায় রাকিবুল হাসান রোকেল ও টেলিভিশনে রুমন চক্রবর্তী।

কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির রমজান আলী, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলমগীর হোসাইন তালুকদার, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. একরাম আহসান জুয়েল, হয়বতনগর আনওয়ারুল উলুম (এইউ) কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজিজুল হক, পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মুআ লতিফ, কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত