Ajker Patrika

একজন সাংবাদিককে অবশ্যই গ্র্যাজুয়েট হতে হবে: বিচারপতি নাসিম

গাজীপুর প্রতিনিধি
একজন সাংবাদিককে অবশ্যই গ্র্যাজুয়েট হতে হবে: বিচারপতি নাসিম

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, ‘একজন সাংবাদিককে অবশ্যই গ্র্যাজুয়েট হতে হবে। তারপর তিনি প্রেস কাউন্সিলে আবেদন করবেন। আমরা যাচাই-বাছাই করে তাকে সনদ দেব। তারপর তিনি সাংবাদিক হবেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে হলে প্রেস কাউন্সিলের সনদ লাগবে।’

আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট ১৯৭৪ ও প্রেস কাউন্সিল প্রণীত সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধি প্রতিপালন শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘তবে বর্তমানে যারা এ পেশায় রয়েছেন, তাদের মধ্যে যদি কারও গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি না থাকে, তাহলে তাকে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা সনদ দাখিল করতে হবে। নতুন নীতিমালায় এ রমকই বিধান রাখা হয়েছে। এটি এখন সংসদীয় কমিটিতে আছে।’

বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইন প্রণীত হলে গ্র্যাজুয়েশন ছাড়া নতুন কোনো ব্যক্তি সাংবাদিকতায় আসবে না। আর এখন যারা আছেন তাদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোন সাংবাদিক থাকবেন না। সাংবাদিক পরিচয় দিতে হলে প্রেস কাউন্সিলের সনদ লাগবে। ফলে আশা করা যায়, সাংবাদিকতা পেশাগত মান উন্নয়ন হবে।’

প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই নীতিমালা করার পর সব জেলা প্রশাসককে নিজ নিজ জেলায় পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে আমাদের কাছে পাঠানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে এক বছরে ২২টি জেলা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছি। এসব তথ্য দিয়ে আমরা ডেটাবেইস তৈরি করছি। আশা করছি, অন্য জেলাগুলো থেকেও দ্রুত তথ্য পাওয়া যাবে। ডেটাবেইস তৈরি করার পর প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য আমরা সন্নিবেশিত করব।’

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সাগর–রুনি হত্যার বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু করতে পারলে খুবই ভালো হতো। বিশেষ করে সেদিন নাদিম চলে গেল, বেশ কিছু বছর আগে সাগর–রুনি চলে গেছে। একটি কেস (মামলা) ৯৯ বার টাইম (সময়) পৌঁছানো হবে, তদন্ত শেষ হবে না-এটি দেখতেও খারাপ লাগে, শুনতেও খারাপ লাগে।’

বিচারপতি নাসিম বলেন, ‘আইনে আছে হত্যা মামলায় ১২০ দিনের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করতে হবে। ১২০ দিনে বড়জোর চার থেকে পাঁচটা তারিখ পড়তে পারে। এখানে ৯৯টি তারিখ পড়ে গেছে, এখনো তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ-তারা তদন্ত শেষ করতে পারেনি, ফলে বিচার শুরু হয়নি!’

তিনি বলেন, ‘এটাকে কি বলব, শুধু দুর্ভাগ্যই বলব এর বেশি কিছু আমার বলার নেই।’ পরে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। সাগর–রুনির মামলার মতো দ্বিতীয় আর কোনো মামলার ঘটনায় যেন এ রকমটি না ঘটে-এটি আমার প্রত্যাশা।’

তিনি বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় দেখেছি জামালপুরের নাদিম খুন হয়েছেন। বিষয়টি আমাকে ব্যথিত করেছে। আমি চাইব কে দোষী কে দোষী না, সেটি বিষয় নয়, যে দোষী তার যেন দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়, সেটি আমি চাইব।’

সাংবাদিকদের বেতন–ভাতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের বেতন–ভাতার ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া দরকার। ইলেকট্রনিক কিংবা প্রিন্ট মিডিয়ায়। মালিকদের উচিত ওয়েজ বোর্ড মেনে নিয়ে বেতন ভাতা প্রদান করা।

আমি আমার সাংবাদিকদের বেতন দেব, আমি তাদের ঠকাব কেন? তার দ্বারা কাজ আদায় করছি, তার দ্বারা সমাজের সম্মান পাচ্ছি, সেই কারণে আমার উচিত সাংবাদিকদের মূল্যায়ন করা।’

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফাহিম আশজাদ। সঞ্চালনায় করেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা ওবায়দুল কবির।

আরও বক্তব্য দেন–বাংলাদেশ বেতারের গাজীপুর প্রতিনিধি মাসুদুল হক, এটিএন বাংলার মাজহারুল হক মাসুম, আজকের পত্রিকার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ডিবিসি নিউজের মাহমুদা শিকদার, এশিয়ান টিভির আরিফ হোসেন আবির, অবজারভারের মোসাদ্দেক আলী, নিউ ন্যাশনের বাদামি বিপ্লব, দিনকালের মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীর চারটিতে পুরোনো প্রার্থী, দুটিতে নতুন মুখ: দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর চারটিতে পুরোনো প্রার্থী, দুটিতে নতুন মুখ: দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা

রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চারটিতে পুরোনোদের নাম এসেছে। আর দুটিতে নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার প্রাথমিকভাবে এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজশাহীতে মনোনয়ন পাওয়া নেতাদের অনুসারীরা আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ, মোটরসাইকেল শোডাউন ও রাতভর পিকনিক করেছেন।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ ছিল, মনোনয়ন ঘোষণার পর কোনো উল্লাস বা মিষ্টি বিতরণ করা যাবে না। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন এলাকায় অনুসারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কোথাও কোথাও মনোনয়ন না পাওয়া ব্যক্তিদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, এমনকি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন আসনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে মনোনীত প্রার্থীরা অনুসারীদের সংযত থাকার আহ্বান জানালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীন। তিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। প্রথমবারই পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। তাঁর ভাই প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক এই আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং দুই দফায় মন্ত্রী ছিলেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর গোদাগাড়ী ও তানোরে শরীফ উদ্দীনের সমর্থকেরা আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ও মোটরসাইকেল শোডাউন করেন। কিছু এলাকায় রাতভর পিকনিকও হয়। একপর্যায়ে মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকেরা পৌরসভা ছাত্রদল নেতা এসাহাক আলী নয়নকে লাঞ্ছিত করেন এবং অন্য প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। তবে তানোরে তুলনামূলক পরিস্থিতি শান্ত ছিল।

রাতেই শরীফ উদ্দীন ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা সবাই ধানের শীষের পক্ষে। কোনো ধরনের উল্লাস বা মিষ্টি বিতরণ করা যাবে না। কাউকে নাজেহাল করা বা অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে।’

এই আসনে আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে শিল্পপতি সুলতানুল ইসলাম তারেক ও ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন সক্রিয় ছিলেন। তারেক বলেন, ‘এটি প্রাথমিক ঘোষণা। এখনই উল্লাসের কিছু নেই; দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবার সহনশীল থাকা জরুরি।’

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের টানা ১৭ বছরের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি রেকর্ডসংখ্যক ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তার মনোনয়ন ঘোষণার পর কয়েকটি স্থানে মিষ্টি বিতরণ ও আতশবাজি হলেও বড় ধরনের উল্লাস দেখা যায়নি।

মিনু বলেন, ‘দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। অতীতের মতো এবারও সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত।’

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহসম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। এবারও মনোনয়ন ঘোষণার পর পবার বায়া ও নওহাটায় সীমিত আনন্দ মিছিল হয়। পরে মিলন ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের সংযত থাকার আহ্বান জানান।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া। এটি তাঁর প্রথমবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়া। ঘোষণার পর বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সমর্থকেরা মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ মিছিল ও রাতভর পিকনিক করেছেন।

তবে জিয়াকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, এতে জামায়াত লাভবান হবে। একজন নেতা-কর্মী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি, মিষ্টি খাচ্ছে জামায়াত।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘বাগমারায় বিএনপির প্রার্থী জিয়া, কিন্তু মিষ্টি বিতরণ করেছে অন্য দল, বিষয়টি বুঝলাম না।’ সবচেয়ে আলোচিত পোস্টটি করেছেন লন্ডনপ্রবাসী আকিফ, যিনি বাগমারা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান রঞ্জুর ছেলে। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘যে ব্যক্তি দলের নামে প্রতারণা করেছে, তার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, সে কীভাবে বিএনপির প্রার্থী হয়?’

এদিকে ডি এম জিয়ার অনুসারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ভোরে জিয়ার সমর্থকেরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুসারী চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবির মাছের দিঘিতে বিষ দিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন বলে অভিযোগ। তবে জিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কোনো মাছ মরেনি। মাছ মরলে ক্ষতিপূরণ দেব।’

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল। তিনিও ২০১৮ সালের নির্বাচনে একই আসনে প্রার্থী ছিলেন। এবারও মনোনয়ন ঘোষণার পর বড় কোনো উল্লাস হয়নি, তবে তাঁর সমর্থকেরা একাধিক স্থানে আতশবাজি করেছেন।

নজরুল ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ধানের শীষের বিজয়ের জন্য সকলের সহনশীল আচরণ প্রয়োজন।’

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। ২০১৮ সালেও তিনি একই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবার তাঁর সমর্থকেরা উল্লাস প্রকাশ করেননি। চাঁদ বলেন, ‘দলের স্বার্থে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনোয়ারায় নছিমন-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি এবং নিহত চালক। ছবি: সংগৃহীত
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি এবং নিহত চালক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নছিমন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত সিএনজিচালক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন (৩২) মারা গেছেন। গতকাল বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত নেজাম উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চুল্লাজামার বাড়ির মো. আনোয়ারের ছেলে।

এর আগে বুধবার সকালে আনোয়ারা-পিএবি সড়কের শোলকাটা রাস্তার মাথা এলাকায় দ্রুতগামী একটি মাছবাহী নছিমনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং চালক নেজাম উদ্দীনসহ আরও এক যাত্রী গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদেরকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে চালক নেজাম উদ্দীন মারা যান। আহত অপর ব্যক্তির নাম ও পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেরপুরে কৃষি কর্মকর্তাকে পেটালেন ছাত্রদল নেতা

শেরপুর প্রতিনিধি
ছাত্রদল নেতা নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তাঁর অফিস কক্ষে মারধর করছেন। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছাত্রদল নেতা নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তাঁর অফিস কক্ষে মারধর করছেন। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

সরকারি কৃষি প্রণোদনার ভাগ না পাওয়ায় শেরপুরের নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সরকারি অফিস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় কাইয়ুমের সঙ্গে ছাত্রদল কর্মী ফজলুও ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এই ঘটনায় কাইয়ুম ও ফজলুর বিরুদ্ধে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম (৩৫) নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া গ্রামের সুরুজ মোল্লার ছেলে এবং ফজলু (৩২) একই গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।

কৃষি অফিস ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর অফিস কক্ষে যান উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম। এ সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্রদল কর্মী ফজলু। কাইয়ুম কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর কাছে কৃষি প্রণোদনা কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে জানতে চান এবং ছাত্রদলের ভাগ তাঁকে দিতে বলেন। বিষয়টি মোবাইলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হন এবং কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে সজোরে চড় মারেন। পরে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে কক্ষের বাইরে নিয়ে ফজলু ও কাইয়ুম মারতে থাকলে আশপাশের লোকজন গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন।

কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলু আমার সরকারি অফিসে এসে আমি এখনো কেন বদলি হচ্ছি না জিজ্ঞাসা করে এবং প্রণোদনার ভাগ চায়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।’

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক খোরশেদুর রহমান বলেন, ‘ওই কৃষি কর্মকর্তা প্রণোদনা নিয়ে তাঁকে চাপ দেওয়ার বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে আমি ছাত্রদল নেতার জেঠাতো ভাই যুবদল নেতা লোটাসকে জানালে লোটাস রাহাতকে মোবাইলে শাসায়। রাহাত এর জেরে এই ঘটনা ঘটায়।’

জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বাবু বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছি। কর্মরত সরকারি অফিসারের গায়ে হাত তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় আমরা দলীয়ভাবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী তারা নিজেদের ব্যবস্থা নেবে। তবে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমের মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি মোবাইল বন্ধ করে পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা।

এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, এই ঘটনায় দুজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাউজানে দুষ্কৃতকারীর গুলিতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা-কর্মী আহত

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের রাউজানে ফের রক্তারক্তির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলার ১৪ নম্বর বাগোয়ান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোয়েপাড়া গ্রামের চৌধুরী পাড়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমন, বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহসভাপতি মো. ইসমাইল, বাগোয়ান ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও বিএনপি কর্মী মোহাম্মদ সোহেল। আহত সবাই বাগোয়ান ইউনিয়নের বাসিন্দা।

আহত পাঁচজনের মধ্যে আব্দুল্লাহ সুমনের বুকে গুলি লাগায় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বর্তমানে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহত পাঁচজনই বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কিছু দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িতে করে এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানা যায়নি। রাতের এই গুলির ঘটনায় পুরো কোয়েপাড়া এলাকা এখন আতঙ্কে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পুলিশ আসার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তখন কাউকে পাইনি। বর্তমানে অভিযানে আছি। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, জানার চেষ্টা করছি। ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের ৭৫ লাখ গ্রাহকের আমানত কী নিরাপদ, যা জানালেন গভর্নর

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাই বিপ্লবওয়ালারা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংবিধান চাইলে, সেটাই হতো: অ্যাটর্নি জেনারেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত