Ajker Patrika

ভয়ংকর অপরাধে কিশোর গ্যাং আতঙ্কের জনপদ শ্রীপুর

  • পুলিশ তৎপর না হওয়ায় অপরাধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে: ভুক্তভোগী
  • মাদকের ভয়াবহতার কারণে অপরাধের মাত্রা বাড়ছে: সুশীল সমাজ
  • কিশোর গ্যাং নির্মূলে কাজ করছে পুলিশ: ওসি
রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে দৌরাত্ম্য বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের। গত ১৫ দিনের মধ্যে বেশ কিছু ঘটনার জন্ম দিয়েছে গ্যাংয়ের সদস্যরা। মাদক সেবন করে রাস্তায় উল্লাস, নারীদের উত্ত্যক্ত, ওষুধ ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গার্মেন্টস শ্রমিককে ডেকে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায়ের জন্য নারীকে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, চিকিৎসককে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মুক্তিপণ আদায়সহ কয়েকটি ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, মাদকের ভয়াবহতার কারণে এমন অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ তাঁদের। ভুক্তভোগীদের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় দিনের পর দিন এমন অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিশোর গ্যাং অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পৌর শহরের মসজিদ মোড়, ফখরুদ্দিন মোড়, মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে, শ্রীপুর রেঞ্জ অফিসসংলগ্ন, ওদ্দা দিঘি, তেলিহাটি ইউনিয়নের সফিক মোড়, বরমী ইউনিয়নের বরামা ব্রিজ, পাইটালবাড়ি, কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন, গলদাপাড়া গ্রামসহ উপজেলার বেশ কিছু পয়েন্টে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার মসজিদ মোড়ে মা মনি নামক একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করতেন হাসিবুল ইসলাম বাদশা। মাঝেমধ্যেই স্থানীয় কিশোর গ্যাং নেতা রুবেল তাঁর কাছে পোলাপানের খরচের কথা বলে টাকাপয়সা দাবি করত। কয়েক দফা টাকাও নিয়েছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়দের জানিয়ে প্রতিকার পাননি। সবশেষ ২ জানুয়ারি তাদের হাতেই খুন হন বাদশা। অভিযোগ রয়েছে, ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে ইট দিয়ে আঘাত করে তাঁকে হত্যা করা হয়।

কিশোর গ্যাং নেতা রুবেল ২০২২ সালের ১৮ মার্চ একই এলাকায় সিহাব নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সিহাব। এ ছাড়া প্রায় প্রতিরাতে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। ওষুধ ব্যবসায়ীকে হত্যার পরও কয়েক দফা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না।

৮ জানুয়ারি এক পোশাকশ্রমিককে মুক্তিপণের জন্য দুই দিন আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। এ সময় মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাঁর ধর্মের বোনকে (নারী পোশাকশ্রমিক) কৌশলে ডেকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী দুজনেই জানিয়েছেন, দফায় দফায় মাদক সেবন করে তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন পৌরসভার ফখরুদ্দিন মোড় এলাকার সাগর। তিনি গড়ে তুলেছেন ‘সাগর বাহিনী’। এ বাহিনীর টার্গেট পোশাকশ্রমিক। মাস শেষে শ্রমিকেরা বেতন পেলেই এ বাহিনীর সদস্যদের উৎপাত বেড়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক মামলার আসামি কিছুদিন আগে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

১১ জানুয়ারি মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার নামক একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আমিনুর রহমান। চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় ফেরার জন্য মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় তাঁকে অপহরণ করা হয়। হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে শোনানো হয় স্ত্রী-স্বজনদের। মুক্তিপণের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার পর রাজেন্দ্রপুর জঙ্গলে ফেলে যাওয়া হয় আমিনুরকে।

চিকিৎসকের চাচাতো ভাই সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন মিল্টন বলেন, ‘অপহরণের পরপরই আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়েছি। সব তথ্য আমরা পুলিশকে সরবরাহ করছি। পুলিশের এত সব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি।’

শ্রীপুর নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, মাদকে আসক্ত হয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। মাদকাসক্ত একজন কিশোর কিংবা যুবক অপরাধ করতে কোনো ধরনের দ্বিধাবোধ করছে না। অপহরণ, নারীদের উত্ত্যক্ত এমনকি খুন করতে দ্বিধাবোধ করছে না। তিনি বলেন, পুলিশ যদি তাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করে, তাহলে এ ধরনের অপরাধ নির্মূল হবে। একটি অপরাধ অপহরণ, ধর্ষণ অথবা খুন সংঘটিত হলে একজন ভুক্তভোগী প্রথমে পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই যোগাযোগ করে অপরাধীর সঙ্গে। এ জন্য পুলিশের ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ।

শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, কিশোর গ্যাং নির্মূলে কাজ করছে পুলিশ। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিনে চাঞ্চল্যকর কয়েকটি ঘটনার পরপরই বেশ কয়েকজন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের তিরে এর সঠিক তথ্য-প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে জিয়া সাইবার ফোর্সের মতবিনিময়, এনসিপি নেতা পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা দাহ

নোয়াখালী প্রতিনিধি
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের করণীয় এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) নোয়াখালী জেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করে সভায় অংশগ্রহণকারীরা।

নোয়াখালী জিয়া সাইবার ফোর্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর অর রশিদ আজাদ, নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম পলাশসহ আরও অনেকে।

এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সভায় বক্তারা বলেন, অদৃশ্য শক্তি ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। এ অপপ্রচার রুখে দিতে হলে বিএনপির জিয়া সাইবার ফোর্স ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঠিক তথ্য ছবি ও প্রমাণ দিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে এবং দল থেকে যাকে ধানের শীষ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভা শেষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে তরুণকে গুলি করে হত্যা, বিএনপির দুই গ্রুপে উত্তেজনা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের গুলিতে তুহিন দেওয়ান (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন দেওয়ান মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেহেরকান্দি এলাকার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি সেলিম দেওয়ানের ছেলে।মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি ও মুন্সিকান্দি গ্রামের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত তুহিন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও বিএনপি নেতা আতিক মল্লিকের অনুসারী।

নিহতের চাচাতো ভাই আকাশ দেওয়ান জানান, রোববার রাতে তুহিন হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এ সময় মুন্সিকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ওজির আলী ও আওলাদ গ্রুপের অনুসারী লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে পেছন থেকে তুহিনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ সময় তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রান্ত সর্দার জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে ও ঘাড়ে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা: তাপমাত্রা কমে ২০-এর নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে নেমে এসেছে এ বছরের প্রথম কুয়াশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর থেকেই রাজশাহী শহর ও আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোর চারপাশ মোড়ানো ছিল ঘন কুয়াশার চাদরে। এই কুয়াশাময় সকাল যেন জানিয়ে দিয়েছে, আসছে শীত, আসছে স্নিগ্ধতার মৌসুম।

শীতের এমন আগমনী ছোঁয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। কুয়াশাঢাকা সকাল জানিয়ে দিচ্ছে, শীত আর বেশি দূরে নয়। এদিন ভোরের আলো ফুটলেও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে চলতে দেখা যায় হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশা ভেদ করে গন্তব্যের পথে ছুটে যায় মানুষ।

এদিকে গ্রামের মাঠে শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ‘আজকের সকালেই এবার প্রথমবার শীত টের পেলাম। এখন থেকে হয়তো শীত বাড়বে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সোমবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এখন থেকে তাপমাত্রা কমবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২ বছরেই ফাটল বিদ্যালয়ের ২ কোটি টাকার ভবনে, নিম্নমানের কাজের অভিযোগ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর পার হতে না হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রায় দুই কোটি দুই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভবনের বারান্দা, সিঁড়ি, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল ধরায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরা।

চিরিরবন্দর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের বানিয়াখাড়ী সরকারি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই কোটি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

নিম্নমানের কাজের অভিযোগ এনে স্থানীয় অভিভাবক মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় দুই বছরের মধ্যেই বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজের সময় আমরা মৌখিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারকে অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘নতুন ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নিচতলার সিঁড়ির বারান্দায় বড় ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের মেঝে ও পিলারের সঙ্গে দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানোর পর তিনি এসে ছবি তুলে নিয়ে গেছেন।’

চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা খাতুন বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ের দুই বছর এখনো হয়নি, তাতেই মেঝেসহ অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তারা দ্রুত মেরামত করার জন্য আশ্বাস দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার আবেদ আলী মাস্টার বলেন, ‘বিল্ডিং হস্তান্তর করার প্রায় দুই বছর হয়েছে। মেঝেতে শুধু পলেস্তারায় “চিড়” ধরেছে, তেমন কোনো সমস্যা নেই। আমি আমার ম্যানেজারকে পাঠিয়ে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করব।’

এলজিইডির চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান একই সুরে বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের মেঝে ও সিঁড়ির কিছু অংশে কেবল পলেস্তারার ওপরে ফাটল বা চিড় ধরেছে। আমি ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত মেরামতের জন্য বলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত