Ajker Patrika

গাইবান্ধার ফুলছড়ি

নদীতে ১ মাসে ৫০ বিঘা বিলীনের পথে রতনপুর

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরঘেঁষা রতনপুর গ্রামের নদীভাঙনের করুণ চিত্র।  সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরঘেঁষা রতনপুর গ্রামের নদীভাঙনের করুণ চিত্র। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের এক নিভৃত গ্রাম রতনপুর। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরঘেঁষা এ গ্রামের দৃশ্য এখন নদীভাঙনের করুণ চিত্র। শুকনো মৌসুমে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক মাসে গ্রামটির প্রায় ৫০ বিঘা জমি, অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক পরিবার ঠাঁই নিয়েছে অন্যের বাড়িতে। অন্তত ২০টি বাড়ি পুরোপুরি হারিয়ে গেছে, হুমকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

গত রোববার বিকেলে নদীর তীরে বসে ছিলেন ৬০ বছর বয়সী আমিরন বিবি। ছবি তুলতে গেলে তিনি মাথায় ঘোমটা টেনে নিলেন। কী করছেন নদের তীরে, জানতে চাইলে কিছুক্ষণ নীরব থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘কী আর করমো বাবা, আগে হামার অনেক ঘরবাড়ি, জমিজমা আছিল। একন সগকিচু নদীর মদ্দে গ্যাচে। নদীর পাড়ে বসি পুরানা দিনের কতা চিন্তা করি। তোমরা হামার কষ্টের কতা শুনি কী করব্যার’—বলেই চলে গেলেন। যেতে যেতে বললেন, ‘জমিজমা, ঘরবাড়ি নদীত গ্যাচে, হামরা তার ক্ষতিপূরণ চাইনে, নদীভাঙন থাকি হামার ঘরোক বাঁচাও বাবা।’ এ সময় আমিরন বিবির মতো আরও ১২ জন এমন মন্তব্য করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীভাঙনে দিশেহারা মানুষজন ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ গাছ কেটে ফেলছেন, কেউ ধানের জমি থেকে ফসল কেটে নিচ্ছেন। এ সময় কথা হয় উড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য রতনপুর গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তারের (৭০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত এক মাসে আমার আমনের ২ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়িও হুমকির মুখে। যেভাবে প্রতিদিন ভাঙছে, এভাবে চলতে থাকলে অল্প দিনেই গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে; কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেই।’

একই গ্রামের কৃষক জামাত আলী (৩৫) বলেন, ‘এক মাসের ব্যবধানে আমার ৩ বিঘা জমির আমন ধান নদীতে গ্যাচে। একদিকে প্রচণ্ড রোদ আর গরম, অন্যদিকে নদীভাঙনের ভয়। আমরা খুব বিপদে আছি। কয় বচর আগোত হামরা গেরেসতো আচিনো। হামার ঘরে জমাজমি, বাড়িভিটা সগি আচিলো। নদী ভাঙি হামরা ঘরে একন কিচুই নাই। কামলার কাম না করলে দিন যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়া-কমার সময় ভাঙন দেখা দেয়। স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি প্রকল্পের সমীক্ষা করা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ করা হবে। তবে এ মুহূর্তে রতনপুরে ভাঙনরোধে হাতে কোনো কর্মসূচি নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফ্লোটিলা থেকে আটক ২২৩ জনকে ইউরোপে পাঠাবে ইসরায়েল, জাহাজগুলোর ভাগ্য অনিশ্চিত

শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক

এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৩৯ নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল

গাজামুখী নৌবহরে ইসরায়েলের অভিযানের নিন্দা স্পেন, ব্রাজিল, তুরস্ক ও পাকিস্তানের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত